স্পোর্টস ডেস্ক : ম্যাচ জিততে শেষ ওভারে প্রয়োজন ১৮ রান। প্রথম চার বলে আসে মাত্র ৬ রান, শেষ দুই বলে প্রয়োজন ১২ রান। বল হাতে ওডিন স্মিথ হয়তো ভাবেননি শেষ দুই বলে ব্যাটার তেওয়াতিয়া তার কী হাল করতে চলেছে। অবিশ্বাস্য হলেও, তেওয়াতিয়া দুই বলে দুটি ওভার বাউন্ডারি হাঁকিয়ে দলের জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন। ৪ রানের জন্য সেঞ্চুরির আক্ষেপ নিয়ে মাঠ ছাড়েন ওপেনার শুভমান গিল। পাঞ্জাব কিংসের দেওয়া ১৯০ রানের লক্ষ্যে নির্ধারিত ওভারের শেষ বলে রাহুল তেওয়াতিয়ার ব্যাটে পৌঁছায় গুজরাট টাইটানস।
ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) শুক্রবার (৮ এপ্রিল) রাতের ম্যাচে ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলেন শুভমান গিল। ৫৯ বলে করেন ৯৬ রান। তার আগের আইপিএলের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস ছিল অপরাজিত ৮৪ রানের। তবে গিলের অনবদ্য ইনিংসটি বৃথায় যেত, যদি না শেষ ওভারে ৩ বলে ১৩ রানের অবিশ্বাস্য ইনিংস খেলতেন রাহুল তেওয়াতিয়া।
এর আগে ১৯০ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ম্যাথু ওয়েডের উইকেট হারায় গুজরাট টাইটানস। ৭ বলে ৬ রান করে কাগিসো রাবাদার শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। এরপর বাকি সময়ে পাঞ্জাবের বোলারদের হতাশায় ডুবিয়েছে শুভমান গিল ও সাই সুদর্শন। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে দু’জনের ব্যাট থেকে আসে রেকর্ড ১০১ রানের পার্টনারশিপ।
৩০ বলে ৩৫ রানের ইনিংস খেলে সুদর্শন রাহুল চাহারের শিকার হলেও একপ্রান্ত আগলে ধরে ঝড়ো ব্যাটিং চালিয়ে যান গিল। ফিফটি তুলে হাটতে থাকেন সেঞ্চুরির পথে। ধীরে ধীরে গুজরাটও এগোতে থাকে জয়ের পথে। তবে শেষ দিকে হার্দিক পান্ডিয়ার সঙ্গে তার মন্থর ব্যাটিংয়ে বলের সঙ্গে রানের ব্যবধানটা বেড়ে যেতে থাকে।
এর মধ্যে ১৯তম ওভারের পঞ্চম বলে রাবাদাকে বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে ৪ রানের আক্ষেপ নিয়ে মাঠ ছাড়েন গিল। ১১ চার ও ১ ছক্কার মারে ৫৯ বলে তার ব্যাট থেকে আসে ৯৬ রান। দুই বল পরে রান আউটের শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরেন পান্ডিয়া। তার ব্যাট থেকে ১৮ বলে ২৭ রান। ততক্ষণে ম্যাচ পাঞ্জাবের পক্ষেই চলে যায়। তবে শেষ দিকে রাহুল তেওয়াতিয়া চমক দেখিয়ে নিশ্চিত হারা ম্যাচে জয় এনে দেন।
পাঞ্জাবের হয়ে রাবাদা ৩৫ রান খরচায় ২ উইকেট শিকার করেন। একটি উইকেট শিকার করেন রাহুল চাহার।
এর আগে লিয়াম লিভিংস্টোনের ঝড়ের গুজরাট টাইটান্সের বিপক্ষে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে বড় সংগ্রহ পেয়েছে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব। নির্ধারিত ওভার শেষে ৯ উইকেট হারিয়ে তাদের সংগ্রহ ১৮৯ রান।
টসে হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শুরুতে মায়াঙ্ক আগারওয়াল ও জনি বেয়ারস্টোর উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব। দুই টপ অর্ডারকে সাজঘরে ফেরান হার্দিক পান্ডিয়া ও গতি দানব লুকি ফার্গুসন। ক্রিজে দাঁড়িয়ে থেকে অবশ্য দলের হাল ধরেন ওপেনার শিখর ধাওয়ান।
তাকে সঙ্গ দিতে নেমে ব্যাট হাতে ঝড় তোলেন ইংলিশ ব্যাটার লিয়াম লিভিংস্টোন। ইনিংসের ১১তম ওভারে বল করতে এসে আফগান স্পিনার রশিদ খান ধাওয়ানকে ফেরালে ভাঙে দুজনের ৫২ রানের জুটি। ভারতীয় ওপেনার ফিরে যান ৩০ বলে ৩৫ রানের ইনিংস খেলে।
অন্যদিকে জিতেশ শর্মাকে সঙ্গে নিয়ে নিজের কাজ চালিয়ে যান লিভিংস্টোন। জিতেশও ক্রিজে নেমে বিধ্বংসী ব্যাট চালাতে থাকেন। ১১ বলে ২৩ রান করা জিতেশকে সাজঘরে ফিরিয়ে গুজরাটকে ম্যাচে ফেরান নালকান্দে। এরপর অবশ্য লিভিংস্টোনও ক্রিজে স্থায়ী হতে পারেননি। তাকে ক্যাচের শিকার বানিয়ে সাজঘরে ফেরান রশিদ খান।
মাঠ ছাড়ার আগে ইংলিশ এই ব্যাটার খেলেন ২৭ বলে ৬৪ রানের বিধ্বংসী ইনিংস। তার ব্যাট থেকে ৭ বাউন্ডারির সঙ্গে আসে ৪টি ছক্কার মার। শেষদিকে শাহরুখ খান, রাহুল চাহার ও আর্শদ্বীপ সিংয়ের ব্যাটে ভর করে বড় সংগ্রহ পায় পাঞ্জাব। শাহরুখ ১৫, চাহার ২২ ও আর্শদ্বীপ ১০ রান করেন।
গুজরাট টাইটানসের হয়ে ২২ রান খরচায় সর্বোচ্চ ৩ উইকেট শিকার করেন রশিদ খান। নালকান্দে ২টি উইকেট শিকার করলেও ৩ ওভার বল করে খরচ করেন ৩৭ রান। অন্যদিকে বল হাতে এদিন ১টি করে উইকেট শিকার করেন মোহাম্মদ শামি, ফার্গুসন ও অধিনায়ক পান্ডিয়া।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।