জুমবাংলা ডেস্ক : দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক আগেরদিন এক পর্যায়ে ৪০ পয়েন্ট উঠেছিল। কিন্তু শেষ বেলায় বিক্রির চাপে সূচকের উত্থান স্থির ৯ পয়েন্টে। আগের দিনের শেষ বেলায় বিক্রির চাপের সূচক পিছুটান আভাস দিয়েছিলো আজ সূচকের পতন হতে পারে। সে আভাস সত্যিও হল। আজ ডিএসইর প্রধান সূচক কমেছে ৫০ পয়েন্টের বেশি।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সূচকের এমন বড় পতনের পেছনে তিন কারণ রয়েছে। কারণগুলোর মধ্যে প্রথমত, ডলারের বিপরীতে টাকার বিনিময়হার এক দিনে ১০ টাকা বড় হওয়ার প্রভাব। বিনিয়োগকারীরা মনে করছেন, টাকার বড় দরপতনে ক্ষতিগ্রস্ত হবে উৎপাদন খাত। আমদানি করা কাঁচামালের দাম বেড়ে যাবে ১০ শতাংশ। মূল্যস্ফীতির চাপে থাকা দেশে পণ্যের মূল্য আরও বাড়লে চাহিদা কমে গিয়ে বিক্রিতে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। এতে কোম্পানির মুনাফা কমে যেতে পারে। টাকার মান কমার ফলে, এই আশঙ্কায় বিনিয়োগকারীরা শেয়ার ছেড়ে দিতে চাইছেন।
দ্বিতীয়ত, শেয়ারবাজারের মৌল ভিত্তির কোম্পানিগুলোর শেয়ার দরে পতন হয়েছে। যার কারণে সূচকের এমন বড় পতন হয়েছে। মৌল ভিত্তির কোম্পানিগুলোর মধ্যে আজ সবচেয়ে বেশি শেয়ারদর কমতে দেখা গেছে বেক্সিমকো লিমিটেড, লাফার্জহোলসিম, বেক্সিমকো ফার্মা এবং ইউনাইটেড পাওয়ার, আইসিবি, ইসলামী ব্যাংক ও ওরিয়ন ফার্মা।
তৃতীয়ত, আজ দেশের গণমাধ্যমে শেয়ার কারসাজির সাথে সাকিবের জড়িত থাকার খবর নেতিবাচক ধারায় ফলাও করে প্রচার হয়েছে। এতে বিনিয়োগকারীরা কিছুটা হলেও আতঙ্কিত হয়েছেন। সাকিব-হিরোর বিরুদ্ধে বিএসইসির একের পর এক সিদ্ধান্তের কারণে বিনিয়োগকারীরা কিছুটা বিভ্রান্ত অবস্থানে রয়েছেন। তারা মনে করছেন, বিএসইসির এমন পদক্ষেপে সাকিব হিরোর সহযোগিরা বাজার থেকে ছিটকে যাবে। এতে করে তাদের এন্ট্রি নেওয়া শেয়ারগুলোর পতন হতে পারে। সেই আতঙ্কে বাজারে সেল প্রেসার বেড়েছে।
এছাড়াও, আজ বড় বিনিয়োগকারীদের সেল প্রেসার ছিল বেশি। সেল প্রেসারের চাপে কেনাবেচা কম হয়েছে। এতে বাজারে লেনদেনও কমেছে। আজ ডিএসইর লেনদেনও কমেছে আগের দিনের তুলনায় ১৭২ কোটি টাকার বেশি। শুধু বড় বিনিয়োগকারীরা সেল প্রেসার দিয়েছে তা নয়, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরাও আজ তেমন একটা সক্রিয় ছিল না।
বুধবারের বাজার পরিস্থিতি:
ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আজ ৫০.৪১ পয়েন্ট বা ০.৭৭ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৪৮৭.১৭ পয়েন্টে। ডিএসইর অপর সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসই-৩০ সূচক ৯.৪২ পয়েন্ট বা ০.৬৬ শতাংশ এবং ডিএসই-৩০ সূচক ২০.২৭ পয়েন্ট বা ০.৮৬ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে এক হাজার ৪১৭.৫২ পয়েন্টে এবং দুই হাজার ৩৩৩.২৩ পয়েন্টে।
টাকার পরিমাণে ডিএসইতে আজ লেনদেন এক হাজার ৩০৭ কোটি ৭৮ লাখ টাকার। যা আগের দিন থেকে ১৭২ কোটি ২৯ লাখ টাকা কম। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল এক হাজার ৪৮০ কোটি ৭ লাখ টাকার।
ডিএসইতে আজ ৩৭১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার দর বেড়েছে ৭২টির বা ১৯.৪১ শতাংশের, শেয়ার দর কমেছে ১৭৫টির বা ৪৭.১৭ শতাংশের এবং ১২৪টির বা ৩৩.৪২ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
দেশের দ্বিতীয় শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১৬৪.৬৫ পয়েন্ট বা ০.৮৫ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১৯ হাজার ০৬৮.২১ পয়েন্টে।
এদিন সিএসইতে ২৬২টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৫০টির দর বেড়েছে, কমেছে ১৪৩টির আর ৬৯টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। আজ সিএসইতে ২১ কোটি ৪৯ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।