স্পোর্টস ডেস্ক: স্নাইপারের গুলির সমতুল্য হয়ে উঠতে পারে বেশ জোরের ওপর করা ডেলিভারিও। বিশ্বাস না হলে শোয়েব আখতারের ইউটিউব চ্যানেলে গিয়ে তাঁকে দেওয়া ব্রেট লির সাক্ষাৎকারটি দেখে নিতে পারেন। যার শিরোনাম, ‘রাইভালস ইউনাইটেড’। পুরনো লড়াইয়ের উত্তাপ ভুলে স্মৃতিমগ্ন দুজনের কথোপকথন একে অন্যের মহিমাই তুলে ধরেছে বেশি।
অস্ট্রেলিয়ার সাবেক ফাস্ট বোলার যেমন ফিরে গেছেন ২০০২ সালের কলম্বো টেস্টে। যে ম্যাচে ‘রাওয়ালপিণ্ডি এক্সপ্রেস’-এর বল গায়ে লাগার পর স্নাইপারের গুলিতে লুটিয়ে পড়ার মতো অনুভূতি প্রকাশেও দুই দশক পর অকপট তিনি। অথচ একসময় গতিতে একে অন্যকে ছাড়িয়ে যাওয়ার জন্য কী লড়াইটাই না ছিল তাঁদের মধ্যে। তাতে শেষ পর্যন্ত বিজয়ী হিসেবে শোয়েবের নামই লেখা আছে ইতিহাসে। ২০০৩ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে কেপটাউনের নিউল্যান্ডসে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ঘণ্টায় ১৬১.৩ কিলোমিটার (১০০.২ মাইল) গতির ডেলিভারি এখনো শ্রেষ্ঠত্বের আসনে বসিয়ে রেখেছে তাঁকেই।
তবে গতিতে শোয়েবের সবচেয়ে কাছাকাছি যাওয়া বোলার কিন্তু ব্রেট লি নন। গতির লড়াইয়ে নিজের পূর্বসূরিকে (১৬০.৮ কিলোমিটার/ঘণ্টা) ছাড়িয়ে গিয়েও তাঁর মতো আলোচিত ছিলেন না আরেক অস্ট্রেলিয়ান শন টেইট (১৬১.১ কিলোমিটার/ঘণ্টা)। অন্যতম কারণ অবশ্যই চোট-আঘাতে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার সংক্ষিপ্ত হয়ে যাওয়া। ২০০৮ সালে তো ক্রিকেট থেকে স্বেচ্ছাবিরতিতেও চলে গিয়েছিলেন। নিজের ওপর চাপ কমাতে এক পর্যায়ে টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়ে শুধুই সাদা বলের ক্রিকেট খেলার সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্কিতও হয়েছিলেন খুব। তবে এরপর তাঁর পথ ধরেছেন আরো অনেকেই।
এখনো ধরছেন। অনেকেই টেস্ট খেলা ছেড়ে দিচ্ছেন তো সাকিব আল হাসানের মতো কেউ কেউ খেলছেন বেছে বেছে। একসময় খেলোয়াড় হিসেবে খেলে যাওয়া শন টেইট এবার বিপিএলে কোচের ভূমিকায় এসে পেছনে ফিরে তাকিয়ে নিজের সিদ্ধান্তের যৌক্তিকতাই শুধু খুঁজে পাচ্ছেন, ‘ওই সময় আমার সিদ্ধান্তটি (টেস্ট ছেড়ে দেওয়া) বেশ বিতর্কের জন্মই দিয়েছিল। তবে নিজের ব্যাপারে সাহসী আমাকে হতেই হতো। ভুল হোক কিংবা সঠিক, ওটা ছিল আমার সিদ্ধান্ত। আমি ৩৩-৩৪ বছর বয়স পর্যন্ত খেলেছি। সব সংস্করণে খেলা চালিয়ে গেলে আমার ক্যারিয়ার ২৯ বছর বয়সেই শেষ হয়ে যেতে পারত। টেস্ট ছেড়ে দিয়েছিলাম বলেই আমি একটু বেশি সময় খেলতে পেরেছিলাম। ’
তাই বলে এমন নয় যে নিজের ওপর চাপ কমাতে অন্যদেরও টেস্ট ছেড়ে দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের ফাস্ট বোলিং কোচ হিসেবে কাজ শুরু করা টেইট। পল নিক্সন চলে যাওয়ার পর অবশ্য তাঁর ভূমিকা বদলে গেছে। এখন হেড কোচের দায়িত্বই পালন করছেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক এই ফাস্ট বোলার। নিজের অভিজ্ঞতা থেকে তরুণ ফাস্ট বোলারদের দিচ্ছেন অনুশীলন কমিয়ে বেশি ম্যাচ খেলার পরামর্শই, ‘আমার কাছে ব্যাপারটি খুব সাধারণ। এক নম্বর অগ্রাধিকার হওয়া উচিত ম্যাচ খেলা। কেউ যদি টানা ম্যাচ খেলে যেতে থাকে, তাহলে অনুশীলনের খুব বেশি দরকার নেই। বেশির ভাগ লোক অনুশীলনেই বাড়তি মনোযোগ দেয়। কাজের ভার কমাতে চাইলে আমার পরামর্শ হলো—ম্যাচ খেলো বেশি, অনুশীলন করো কম। ’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।