জুমবাংলা ডেস্ক : সিলেটের বিশ্বনাথে দাফনের ২৮দিন পর কবর থেকে আয়ফুল বেগম নামের এক নারীর ম’রদেহ উত্তোলন করা হয়েছে। সোমবার দুপুরে আদালতের নির্দেশে ময়নাতদন্তের জন্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফাতেমা তুজ জোহরার উপস্থিতিতে গলিত অবস্থায় লা’শটি উত্তোলন করা হয়।
চার সন্তানের জননী আয়ফুল বেগম উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের দোহাল গ্রামের মৃ’ত ফজর আলীর স্ত্রী।
জানা গেছে, গত ৩ আগস্ট দিবাগত রাতে বসতঘরে তার রহস্যজনক মৃ’ত্যু হয়। পরদিন ৪ আগস্ট তাকে দাফন করা হয়। দাফনের চারদিন পর ৭ আগস্ট হ’ত্যার অভিযোগ এনে তার বড় মেয়ে নাসিমা বেগম থানা পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে একই গ্রামের মনু মিয়ার ছেলে (আয়ফুলের ভাইয়ের মেয়ের জামাই) নুর উদ্দিনকে (৩৫) আটক করে বিশ্বনাথ থানা পুলিশ। এ সময় নূর উদ্দিনের বড় ভাই মখলিছ আলী (৬৫) ও ইলিয়াস আলীকেও (৫৮) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আ’টক করা হয়।
এ ঘটনায় গত ৮ আগস্ট আয়ফুল বেগমকে হত্যার অভিযোগে নুর উদ্দিনকে একমাত্র আসামি করে বিশ্বনাথ থানায় হ’ত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের মেয়ে নাসিমা বেগম। তবে এ মামলায় মখলিছ আলী ও ইলিয়াস আলীকে গ্রেফতার দেখায় পুলিশ।
মামলার বাদী নাসিমা বেগম বলেন, ‘আমার মা আয়ফুল বেগম গত ২৮ জুলাই দুলাভাই নুর উদ্দিনকে সঙ্গে নিয়ে ঘর নির্মাণের জন্যে একটি এনজিও থেকে এক লাখ টাকা ঋণ উত্তোলন করে। এরপর থেকে ওই টাকা আত্মসাত করতে তিনি আমার মাকে কৌশলে ঘুমের ট্যাবলেট খাইয়ে আসছিল। একইভাবে গত ৩ আগস্ট রাতেও মাকে ঘুমের ট্যাবলেট খাইয়ে দেয় নুর উদ্দিন। ওই রাতেই কোনো এক সময়ে নিজের শয়নকক্ষে তিনি মা’রা যান। পরদিন সকালে সবার আগে রহস্যজনকভাবে চা নিয়ে এসে আমার মাকে নুর উদ্দিন ডাকাডাকি করে। পরে লোকজন দরজা খুলে আম্মাকে মৃ’ত অবস্থায় উদ্ধার করে। এ সময় তার মুখ দিয়ে র’ক্ত ঝরছিল এবং বুক ফোলা ছিল। এছাড়া ঘরের কার্পেটের নিচে ঘুমের ট্যাবলেটের খোসা পাওয়া যায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘মাকে মৃ’ত অবস্থায় উদ্ধার করা হলেও তার ঘরে থাকা এক লাখ টাকার কোনো হদিস মেলেনি। টাকার বিষয়ে কিছু জানো কি-না? এমন প্রশ্ন করলে নুর উদ্দিন সন্দেহজনক কথাবার্তা বলে। পরে সে মাকে দাফন করে।’
মামলার তদন্তাকারী কর্মকর্তা বিশ্বনাথ থানার এসআই দেবাশীষ শর্ম্মা বলেন, গত ৩ আগস্ট দিবাগত রাতে আয়ফুল বেগম তার বসতঘরে মা’রা যান। পরদিন তাকে দাফন করা হয়। আয়ফুলকে হ’ত্যার অভিযোগে একই গ্রামের নুর উদ্দিন, মখলিছ আলী ও ইলিয়াস আলীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আ’টক করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। আয়ফুল বেগমকে ঘুমের ট্যাবলেট খাইয়ে গ’লা টি’পে হ’ত্যা করা হয়েছে বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে আ’টক নূর উদ্দিন।
তিনি বলেন, মামলার তদন্তের স্বার্থে আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী সোমবার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে থানা পুলিশের সহায়তায় কবর থেকে লা’শ উত্তোলন করা হয়। লা’শ উত্তোলনের পর ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল হাসপাতাল পাঠানো হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।