নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর: শিল্পাঞ্চল গাজীপুরের কোনাবাড়ী ও কাশিমপুরে শ্রমিক অসন্তোষের কারণে সোমবার (৪ নভেম্বর) ৯টি কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। একইসঙ্গে আন্দোলনের প্রভাবের কারণে ১৩টি কারখানায় একদিনের ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
সোমবার সকালে কোনাবাড়ীর এম এম নীটওয়্যার লিমিটেড, মামুন নীটওয়ার লিমিটেড ও মকুল নীটওয়ার লিমিটেড কারখানার সামনে বন্ধের নোটিশ সাঁটানো হয়। এর আগে, তুসুকা গ্রুপের ৬টি কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছিল। কোনো কোনো কারখানার শ্রমিকরা তাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে আন্দোলন করতে থাকায়, কারখানাগুলোতে অস্থিরতা তৈরি হয়।
ছুটি ঘোষণা করা কারখানাগুলোর মধ্যে রয়েছে, ফ্যাশন সমিট লিমিটেড, রেজাউল অ্যাপারেলস, লাইফ টেক্সটাইল লিমিটেড, কানিজ ফ্যাশন, কে এম নুবেলী, রিপন নীটওয়্যার লিমিটেড, ইসলাম গ্রুপ, ডং আও লিমিটেড, অ্যাস্ট্রো নীটওয়্যার লিমিটেড, হরণবিল অ্যাপারেলস লিমিটেড, এবিএম ফ্যাশন লিমিটেড (অনন্ত গার্মেন্টস লিমিটেড) এবং কাশিমপুরের ডোরিন গার্মেন্টস লিমিটেড ও কটন ক্লাব বিডি লিমিটেড।
এম এম নীটওয়্যার লিমিটেডের নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে যে, রোববার দুপুর আড়াইটার সময় কারখানার শ্রমিকরা ‘অযৌক্তিক দাবিতে’ কাজ বন্ধ রাখে এবং পরবর্তীতে মেইন গেটে এসে উত্তেজনা সৃষ্টি করে। কর্তৃপক্ষের মতে, শ্রমিকদের এসব দাবির মধ্যে কিছু কিছু দাবি মেনে নেয়া হলেও তারা আরও দাবি উত্থাপন করে এবং কাজে যোগদান করতে অস্বীকৃতি জানায়। মালিকপক্ষ জানায়, শ্রমিকরা কারখানার অভ্যন্তরে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে, যা শ্রম আইন অনুযায়ী বেআইনি ধর্মঘটের শামিল।
একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তা জানান, শ্রমিকরা তাদের অযৌক্তিক দাবি প্রত্যাহার করলে এবং কারখানা খোলার অনুকূল পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে পুনরায় কারখানা চালু করার সিদ্ধান্ত জানানো হবে। তবে কারখানার নিরাপত্তা ও ফায়ার সেইফটি বিভাগ এই নোটিশের আওতামুক্ত থাকবে।
এম এম নীটওয়্যার লিমিটেডের সুয়িং অপারেটর মো. সাদ্দাম বলেন, আমরা স্বাভাবিকভাবে কাজ করছিলাম। হঠাৎ কিছু বহিরাগত এসে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করে এবং পরবর্তীতে ছুটি ঘোষণা করে আমাদের বাড়ি পাঠানো হয়। আজ সকালে এসে দেখি, কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে।
ইসলাম গ্রুপের ওভেন সেকশনের পিএম মো. মামুন সরকার বলেন, শ্রমিকরা কাজ না করে বিক্ষোভ করতে শুরু করে, ফলে কর্তৃপক্ষ কারখানা ছুটি ঘোষণা করে। মিটিংয়ে স্টাফদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের প্রমাণ চাওয়া হয়েছে, কিন্তু শ্রমিকরা কোনো প্রমাণ দিতে রাজি নয় এবং দাবি করছে, অভিযুক্তদের বরখাস্ত করতে হবে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন কোনাবাড়ী থানার ওসি মো. নজরুল ইসলাম বলেন, তুসুকা গ্রুপ এবং এম এম নীটওয়্যার লিমিটেডসহ বেশ কিছু কারখানায় শ্রমিকদের দাবির মুখে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়াও ৮টির বেশি কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। শ্রমিকদের কিছু দাবি মালিক পক্ষ মেনে নিয়েছে, তবে কিছু দাবিতে শ্রমিকরা একমত না হওয়ায় পরিস্থিতি অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে।
কারখানা বন্ধের এই সিদ্ধান্তের ফলে শ্রমিকদের মধ্যে উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে। তবে কর্তৃপক্ষ আশা প্রকাশ করেছে, পরিস্থিতি স্থিতিশীল হলে তারা শিগগিরই কাজ শুরু করতে পারবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।