‘শ্রেণিভিত্তিক পানির দাম নির্ধারণের জন্য কেবল সমীক্ষা হয়েছে’

জুমবাংলা ডেস্ক : ঢাকা ওয়াসার উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (বাণিজ্য) উত্তম কুমার রায় বলেছেন, ‘পানির দাম নির্ধারণের জন্য শ্রেণিভিত্তিক যে পরিকল্পনা তার জন্য একটি বিদেশি প্রতিষ্ঠান কেবল সমীক্ষা করেছে। এ বিষয়ে আমরা নাগরিক সমাজ, গণমাধ্যম এবং সরকারের বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে আলোচনা করব। সেই সঙ্গে সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেব। গণমাধ্যমে জুন মাসে পানির দাম বাড়ানো নিয়ে যে খবর আসছে, তা সঠিক নয়।

এ বিষয়ে শুধু আমাদের একার নয়, সবার আগে সরকার সিদ্ধান্ত নেবে। তাই এ বিষয়ে এখনও আলোচনা হয়নি।’

বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে বাংলাদেশ সাধারণ নাগরিক সমাজের উদ্যোগে ‘শ্রেণিভিত্তিক পানির মূল্য ও সুপেয় পানির অঙ্গীকারের বাস্তবতা-আমাদের মতামত’ শীর্ষক নাগরিক মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন ঢাকা ওয়াসার উপব্যবস্থাপনা পরিচালক।

তিনি বলেন, ‘পানির দাম নিয়ে যেভাবে গণমাধ্যমে আসছে যে জুন মাস থেকে দাম বৃদ্ধি হচ্ছে, তা সঠিক নয়।

কারণ, এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত শুধু আমাদের একার নয়, সবার আগে সরকার সিদ্ধান্ত নেবে। তাই এ বিষয়ে এখনও আলোচনা হয়নি। আমাদের পানির উৎপাদন খরচ বেশি বলে যে সমালোচনা করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে যে কয়েক বছর ধরে বিদ্যুতের দাম বাড়লেও আমরা কিন্তু সেভাবে পানির দাম বাড়াইনি।’

ঢাকা ওয়াসা সবার জন্য সহনীয় এবং সাধারণ ও নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য পানির দাম আরও কমিয়ে আনতে কাজ করে যাচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র সচিব (অব.) মো. মফিজুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার এখন পর্যন্ত নিরাপদ এবং আগামী প্রজন্মের জন্য পানির নিরাপত্তা ও নিশ্চয়তার মহাপরিকল্পনা নিতে পারেনি। ঢাকা ওয়াসা প্রথমে শীতলক্ষ্যা ও পরে মেঘনা নদী থেকে পানি সরবরাহের প্রকল্প নেয়। অথচ ঢাকার মধ্যে থাকা বুড়িগঙ্গা ও তুরাগ নদের পানি কীভাবে ব্যবহার করা যায়, তার পরিকল্পনা করেনি।
তাদেরকে বললে তারা জানায় যে এই দুই নদীর পানি এরই মধ্যে দূষিত হয়ে গেছে। তাহলে প্রশ্ন হলো: আগামী দিনে পদ্মা, শীতলক্ষ্যা এবং মেঘনা নদীর পানি যে দূষিত হবে না তার নিশ্চয়তা কী?’

পানির মূল্য বৃদ্ধি প্রসঙ্গে মোঃ মফিজুল ইসলাম বলেন, ‘শ্রেণিভিত্তিক না করে উচ্চ শ্রেণির জন্য করের হার বৃদ্ধি করা যায় কি না, তা খতিয়ে দেখতে হবে।’

প্রশ্নের জবাবে ঢাকা ওয়াসার নির্বাহী প্রকৌশলী বদরুল আলম বলেন, ‘যেসব প্রকল্প নেওয়া হয়েছে তা আগামী দিনের কথা চিন্তা করেই নেয়া হয়েছে। আমাদের সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য বা অভিযোগ থাকলে আমাদের জানান, আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব। তবে কিছু কিছু জায়গায় এখনও দুর্বলতা রয়েছে। আমরা দ্রুত সব সমস্যার সমাধান করব।’

এ ছাড়া সভাপতির বক্তব্যে সংগঠনের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বিদ্যুতের ন্যায় ব্যবহারের ওপর পানির মূল্য নির্ধারণ করা যেতে পারে। এলাকাভিত্তিক পানির মূল্য নির্ধারণ করলে অনেক নিম্ন আয়ের সাধারণ মানুষও উচ্চমূল্যের পানির আওতায় পড়ে যেতে পারে। এতে সুবিধার বদলে অসুবিধাই বেশি হতে পারে। তাই শ্রেণিভিত্তিক নয়, ব্যবহারভিত্তিক পানির মূল্য নির্ধারণ করা হোক।’

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সাবেক চেয়ারম্যান মুশতাক হাসান মুহা. ইফতেখার, ইউটিলিটি রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ডুরা) সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান মোল্লা, বাপার জয়েন্ট সেক্রেটারি আমিনুল রসুল, ক্যাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক প্রকৌশলী মোঃ বেলায়েত হোসেন, মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাহী সদস্য অ্যাডভোকেট সাহেদা বেগম, অ্যাডভোকেট বিল্লাল হোসেন প্রমুখ।

শিক্ষাঙ্গনে নৈতিক স্খলনের ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক: কামাল উদ্দিন আহমেদ