একুশে পদকপ্রাপ্ত বরেণ্য লালন সংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীনের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় নায়ক শাকিব খান। শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সামাজিকমাধ্যমে এক পোস্টে তিনি লেখেন, লোকসংগীতের দেশবরেণ্য শিল্পী ফরিদা পারভীনের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করছি। তিনি ছিলেন লালনগীতি, নজরুলসংগীত ও দেশাত্মবোধক গানের এক উজ্জ্বল দীপ্তি।
মৃত্যুর সময় ও চিকিৎসার ইতিহাস
১৩ সেপ্টেম্বর রাতে ১০টা ১৫ মিনিটে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ফরিদা পারভীন। এর আগে গত ৫ জুলাই গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসা শেষে ২১ জুলাই তিনি বাড়ি ফেরেন। পরে ২ সেপ্টেম্বর ফের অসুস্থ হয়ে আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ১০ সেপ্টেম্বর থেকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল।
সংগীতজীবনের শুরু
১৯৫৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর নাটোর জেলার সিংড়া থানার শাঔঁল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন ফরিদা পারভীন। সংগীতের হাতেখড়ি নেন ওস্তাদ কমল চক্রবর্তীর কাছে। পরে ওস্তাদ রবীন্দ্রনাথ রায়, মোতালেব বিশ্বাস ও ওসমান গণির কাছে ক্ল্যাসিক্যাল শিখেন। নজরুল সংগীতে তিনি ওস্তাদ আবদুল কাদের এবং মীর মোজাফফর আলীর কাছ থেকে তালিম নেন। ১৯৬৮ সালে রাজশাহী বেতারে নজরুল সংগীত শিল্পী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন তিনি।
লালনগীতির সঙ্গে পথচলা
১৯৭৩ সালে দেশাত্মবোধক গান গেয়ে জনপ্রিয়তা পান ফরিদা পারভীন। পরে সাধক মোকসেদ আলী শাহের কাছে লালনগীতির তালিম নেন। ধীরে ধীরে তিনি লালনগীতির এক অনন্য সাধক হিসেবে পরিচিত হন।
সম্মাননা ও অবদান
সংগীতে বিশেষ অবদানের জন্য ১৯৮৭ সালে একুশে পদক পান ফরিদা পারভীন। ২০০৮ সালে তিনি জাপান সরকারের পক্ষ থেকে ‘ফুকুওয়াকা এশিয়ান কালচার’ পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়া ১৯৯৩ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে সেরা প্লে-ব্যাক গায়িকা হিসেবে সম্মানিত হন। শিশুদের লালন সংগীত শিক্ষার জন্য তিনি ‘অচিন পাখি স্কুল’ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
ফরিদা পারভীনের মৃত্যুতে সংগীতাঙ্গনে গভীর শোক নেমে এসেছে। তাঁর অনন্য সাধনা, লালনগীতি ও দেশাত্মবোধক গানের অবদান চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবে। ফরিদা পারভীন ছিলেন বাংলার মাটি ও সংস্কৃতির এক উজ্জ্বল প্রতীক।
জেনে রাখুন-
প্রশ্ন: ফরিদা পারভীন কে ছিলেন?
ফরিদা পারভীন ছিলেন একুশে পদকপ্রাপ্ত লালন সংগীতশিল্পী। তিনি নজরুল সংগীত ও দেশাত্মবোধক গানেও বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেছিলেন।
প্রশ্ন: ফরিদা পারভীন কবে মারা যান?
ফরিদা পারভীন ১৩ সেপ্টেম্বর রাত ১০টা ১৫ মিনিটে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। দীর্ঘ অসুস্থতার পর তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
প্রশ্ন: ফরিদা পারভীনের জন্ম কোথায়?
তিনি ১৯৫৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর নাটোর জেলার সিংড়া থানার শাঔঁল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
প্রশ্ন: ফরিদা পারভীন কোন কোন পুরস্কার পেয়েছেন?
তিনি ১৯৮৭ সালে একুশে পদক, ২০০৮ সালে ‘ফুকুওয়াকা এশিয়ান কালচার’ পুরস্কার এবং ১৯৯৩ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন।
প্রশ্ন: ফরিদা পারভীনের অবদান কী ছিল?
ফরিদা পারভীন লালনগীতিকে বিশ্বমঞ্চে তুলে ধরেছেন। এছাড়া শিশুদের লালন শিক্ষা দিতে তিনি ‘অচিন পাখি স্কুল’ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।