জুমবাংলা ডেস্ক : শ্রেষ্ঠ উপজেলা শিক্ষা অফিসার হওয়ার পর সংবর্ধনা নিয়ে রমিতা ইসলাম পড়েছেন বিপাকে। একই সঙ্গে আরও পাঁচ সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারও রয়েছেন অভিযোগের তালিকায়। একটি গণমাধ্যমের নেতিবাচক খবরে বিভাগীয় উপপরিচালক অফিস থেকে কৈফিয়ত চাওয়া হয়েছে তাদের কাছে। উপপরিচালকের গত ১৪ ডিসেম্বরের চিঠিতে বলা হয়েছে– বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে কেন ঊর্ধ্বতন পর্যায়ে সুপারিশ করা হবে না, তা সাত কর্মদিবসের মধ্যে জানাতে হবে।
তবে অভিযুক্ত গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলা শিক্ষা অফিসার এবং উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসাররা তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সত্য নয় বলে জানিয়েছেন। নেতিবাচক একটি খবরের কারণে তারা কোনও অভিযোগ না থাকলেও বিপাকে পড়েছেন বলে জানান।
গণমাধ্যমের খবরের অভিযোগ তুলে ধরে উপপরিচালকের চিঠিতে বলা হয়, সৈয়দপুর ক্লাস্টারের শ্রীফলতলি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে সংবর্ধনা নিয়েছেন। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ১৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১৫৩ জন শিক্ষকের কাছ থেকে মাথাপিছু এক হাজার করে মোট এক লাখ ৫৩ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করে দামি শাড়ি, গহনা, স্বামীর জন্য স্যুট-প্যান্ট ও ছেলের জন্য শার্ট-প্যান্ট এবং ক্রেস্ট দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আরও চারটি ক্লাস্টারের মাধ্যমে শিক্ষা অফিসার অনুরূপ কাজ করেছেন।
প্রকাশিত খবরের পরিপ্রেক্ষিতে বিভাগীয় উপপরিচালের চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘কোভিডকালীন এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আপনার (শিক্ষা অফিসার) পাশাপাশি সব সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার অনুষ্ঠানে আসন গ্রহণ করেন। আপনার পাশাপাশি সব সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আসন গ্রহণ করেন এবং শিক্ষকরা উপস্থিত হয়ে গণজমায়েত আয়োজন করেছেন, যা অনভিপ্রেত। আপনার এ ধরনের কাজে প্রাথমিক শিক্ষার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে।’
চাঁদা আদায় করে শাড়ি-গহনা কেনার অভিযোগের বিষয়ে বিভাগীয় উপপরিচালক মো. ইফতেখার হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ‘উপজেলা শিক্ষা অফিসারসহ আরও পাঁচ সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে যে শোকজ করা হয়েছে তারা এর ব্যাখ্যা দিক। সত্য না মিথ্যা, তারা জবাব দিক। ’
করোনাকালে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান আয়োজন সম্পর্কে উপপরিচালক বলেন, ‘প্রকাশিত খবরে দেখেছি– সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসাররাও ছিলেন। তাদেরও শোকজ করে জবাব চেয়েছি। ’
জানতে চাইলে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ মোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘অভিযোগ সম্পর্কে যতটুকু খবর পেয়েছি তাতে চাঁদা তুলে শাড়ি-গহনা নেওয়ার বিষয়ে কোনও সত্যতা পাওয়া যায়নি। তবে স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে সবার আরও সচেতন হওয়ার প্রয়োজন ছিল।’
অভিযোগের বিষয়ে শিক্ষা অফিসার রমিতা ইসলাম বলেন, ‘একটি ক্লাস্টারে আমাকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে অনুষ্ঠানটি হয়েছে। কিন্তু খবরে লেখা হয়েছে মিথ্যা তথ্য। এই সংবর্ধনা ছাড়াও চারটি সংবর্ধনা নিয়েছি বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এ ধরনের মিথ্য তথ্য দিয়ে একটি অনলাইনে খবর প্রকাশ করা হয়েছে। যার কোনও ভিত্তি নেই। আমাকে শোকজ করা হয়েছে আমি শিগগিরই জবাব দেবো।’
কালিয়াকৈরের সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘উপজেলার সব সহকারী কর্মকর্তা ও উপজেলার সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও শিক্ষা অফিসারের পরিশ্রম ও নেতৃত্বে শ্রেষ্ঠ উপজেলা শিক্ষা অফিসার হয়েছেন তিনি। মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করে উপজেলার শিক্ষাসংশ্লিষ্ট সবার প্রতি অবিচার করা হয়েছে।’
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসাররা আরও বলেন, ‘শ্রেষ্ঠ শিক্ষা অফিসার হওয়ার পর দেশের অনেক গণমাধ্যমে তা সুন্দর করে তুলে ধরা হয়েছে। কিন্তু কী কারণে একটি গণমাধ্যমে এমন খবর প্রকাশিত হলো তা বোধগম্য নয়।’
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ উপজেলা শিক্ষা অফিসার নির্বাচিত হওয়ার পর সম্প্রতি কালিয়াকৈর উপজেলার সৈয়দপুর ক্লাস্টারের শ্রীফলতলি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে সংবর্ধনা দেওয়া হয় রমিতা ইসলামকে। সেখানে সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসাররাও উপস্থিত ছিলেন। সূত্র : বাংলা ট্রিবিউন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।