লাইফস্টাইল ডেস্ক : সচেতনভাবেই হোক অথবা নিজের অজান্তে—সবারই দিন শুরু করার কিছু নিজস্ব কায়দা বা অভ্যাস থাকে। সেটা হতে পারে ফোন স্ক্রল করার মতো অস্বাস্থ্যকর কোনো কিছু। আবার ব্যায়াম, যোগব্যায়াম, হাঁটার মতো ভালো কোনো অভ্যাস। ডায়েটেশিয়ানদের মতে, সকালের শুরুটা অবশ্যই কোনো ভালো অভ্যাস দিয়ে হওয়া উচিত। কারণ, পুরোনো প্রবাদেও আছে, ‘মর্নিং শোজ দ্য ডে’। অর্থাৎ, সকালই বলে দেয় পুরো দিনটা কেমন যাবে। শুরুটা সুন্দর মানেই হলো সুস্থ থাকার পথে এক ধাপ এগিয়ে যাওয়া, যা আমাদের রাখবে তারুণ্যে ভরপুর। এবার এমন কিছু ভালো অভ্যাসের ব্যাপারে জেনে নেওয়া যাক।
নির্দিষ্ট সময় ঘুম থেকে ওঠা
অনেকেরই খারাপ অভ্যাস হচ্ছে, দেরিতে ঘুম থেকে ওঠা। সকালে ঘুম থেকে ওঠা কঠিন হয় না, যদি রাতে সময়মতো ঘুমানো যায়। ত্বককে বয়সের ছাপ থেকে বাঁচাতে ও মস্তিষ্ককে সচল রাখতে ছয় থেকে আট ঘণ্টার নিয়মিত ও নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমের অভ্যাস খুবই জরুরি। তা ছাড়া ভোরের নির্মল বাতাস ফুসফুসের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের মনকেও তৃপ্ত করে। বেলা করে ঘুম থেকে উঠলে কম সময় পাওয়া যায় কাজ করার। তাই সময়ের যথোপযুক্ত ব্যবহার করতে আর নিজেকে সতেজ রাখতে সকালে ওঠার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
পানি পান করা
আমাদের শরীরের ৬০ শতাংশই জলীয় অংশ। তাই কোষগুলোকে সতেজ রাখতেও প্রয়োজন পর্যাপ্ত পানি। রাতে যখন আমরা ঘুমিয়ে থাকি, আমাদের শরীর ছয় থেকে আট ঘণ্টা ধরে দীর্ঘ সময় পানি পায় না। তাই ঘুম ভাঙার পরপরই শরীরের রিহাইড্রেশনের জন্য উচিত এক গ্লাস পানি পান করা। কারণ, শরীর পানিশূন্য থাকলে ক্লান্ত লাগে সারা দিন। ডায়েটেশিয়ানরাও ব্যাপারটিতে জোর দিতে বলেন। চা, কফি বা অন্যান্য নাশতা খাওয়ার আগে এক গ্লাস পানি নিয়মিত পান করে হজমের সমস্যা থেকেও মুক্তি পাওয়া সম্ভব। তা ছাড়া পানি ত্বকের শুষ্ক ভাব দূর করে আর্দ্রতা ধরে রেখে ত্বকের খেয়াল রাখবে।
গরম চা
চিনি ও দুধ ছাড়া গ্রিন টি, ব্ল্যাক টিসহ বিভিন্ন হারবাল টি শরীরে মেটাবলিজম বাড়িয়ে দিনের দারুণ শুরুতে সাহায্য করে। নেদারল্যান্ডসে করা এক গবেষণায় দেখা গেছে, যাঁরা নিয়মিত চা পান করেন, তাঁদের ধমনি, যাঁরা পান করেন না তাঁদের তুলনায় কোলেস্টেরলমুক্ত থাকে। চায়ে বিদ্যমান অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়। চায়ে থাকা পনিফেনল নামের উপাদান ক্যানসারের ঝুঁকিও কমায়। তা ছাড়া এক কাপ গরম চা সকালবেলা মনকে ফুরফুরে করে তোলে। তবে খালি পেটে চা পান করলে হিতে বিপরীত হতে পারে। অবশ্যই সকালের নাশতা শেষে আধা ঘণ্টা পর চা খাওয়া উচিত।
সকালে হাঁটা
হাঁটার ব্যাপারে বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন, ‘বাঁচতে হলে হাঁটতে হবে।’ প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে খোলা বাতাসে হাঁটলে শরীর ও মন দুটিই ভালো থাকে। হাঁটার অভ্যাস শরীরের কোষগুলোকে সচল রাখে, সজীব করে। কারণ, তখন প্রতিটি কোষে বিশুদ্ধ রক্ত ও অক্সিজেন পৌঁছায়। উপকারী কোলেস্টেরল বাড়িয়ে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমায় হাঁটা। সপ্তাহে প্রতিদিন আলো-বাতাসযুক্ত জায়গায় ২০ থেকে ৩০ মিনিট হাঁটলে শরীরের বাড়তি মেদ কমে। গবেষণায় দেখা গেছে, খালি পায়ে সবুজ ঘাসে হাঁটলে দৃষ্টিশক্তি ভালো থাকে।
সঠিকভাবে নাশতা করা
যাঁরা ওজন কমাতে চান, তাঁরা না জেনেই যে ভুলটি করেন তা হলো, সকালে না খেয়ে থাকা। এতে লাভের বদল ক্ষতিই বেশি হয়। ডায়েটেশিয়ানরা বলে থাকেন, সকালেই খেতে হবে স্বাস্থ্যকর খাবার, যা থেকে সারা দিন কাজ করার শক্তি পাওয়া যাবে। তাই সকালের নাশতায় মনোযোগী হওয়া উচিত।
কার্যতালিকা তৈরি
‘সকালে উঠিয়া আমি মনে মনে বলি, সারা দিন আমি যেন ভালো হয়ে চলি’—মদনমোহন তর্কালঙ্কারের এই লাইনগুলোর মতো সকালে উঠেই ঠিক করে ফেলতে হবে সারা দিনের কাজগুলো। সামনে কাজের তালিকা থাকলে কাজ করার তাগিদ বেড়ে যায় বহুগুণ। এ সবকিছুকে ধীরে ধীরে রপ্ত করে ফেললেই কিছুদিন পর আর তাগিদ দিয়ে কিছু করতে হবে না, সবই পরিণত হবে অভ্যাসে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।