জুমবাংলা ডেস্ক: গ্রীষ্মকালে আমরা ঘন ঘন ও দীর্ঘ সময় ধরে এয়ার কন্ডিশনার ব্যবহার করি। সঠিক ব্যবহারবিধি না জানার কারণে ও কিছু ভুল ব্যবহারে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ খরচসহ অবাঞ্ছিত সার্ভিসিং ঝামেলা এবং গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ নষ্ট হওয়ার প্রবণতা অনেক বেশি হয়ে থাকে।
এয়ার কন্ডিশনার সঠিকভাবে কীভাবে ব্যবহার করবেন আসুন জেনে নিই একনজরে-
সর্বপ্রথম এয়ার কন্ডিশনারটি কম তাপমাত্রায় সেট করার বদ অভ্যাস থেকে বিরত থাকুন, বরং পর্যাপ্ত মাত্রায় টেম্পারেচার সেট করুন, কারণ এতে আপনার সুস্বাস্থ্য ও সুষ্ঠু ব্যবহারবিধি উভয় নিশ্চিত করবে। এমনকি আমরা যারা এক স্থানে স্থির হয়ে বসে অথবা শুয়ে থাকি অথবা হালকা পরিশ্রম করি, তাদের জন্য শ্রহণযোগ্য ঘরের তাপমাত্রা সাধারণত ২৭ সে. থেকে ২৮ সে. এর মধ্যে থাকে।
লক্ষণীয় বিষয় হলো, যখন এয়ার কন্ডিশনার চলমান থাকে তখন সেট তাপমাত্রা থেকে অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা ২ সে. বেশি হয়ে থাকে। শুধু এই একটি মাত্র অভ্যাস যা ২০% পর্যন্ত অতিরিক্ত বিদ্যুৎ সাশ্রয় করতে পারে। যমুনা ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড অটোমোবাইলস এর সুদক্ষ এয়ার কন্ডিশনার এক্সপার্ট এবং আরএনডি টিম এটি দীর্ঘদিন পর্যবেক্ষণ করে এই তথ্য প্রকাশ করেছে।
দ্বিতীয়ত, ফিল্টারটি ঘন ঘন পরিষ্কার করা উচিত। অত্যধিক ধুলো-বালি এয়ার কন্ডিশনারের ফিল্টারের নেট বা জাল ব্লক করে দেয় এবং এয়ার ফ্লো কম ও বন্ধ করে দেয়, যা রীতিমতো অস্বস্তিকর। ভালোভাবে ঠান্ডা বাতাস তো পৌঁছাবেই না, পাশাপাশি বিদ্যুৎ বিলও বাড়াবে।
তৃতীয়ত, ব্যবহৃত রুমের মেইনটেন্যান্স স্ট্রাকচার ও কাঠামো উন্নত করুন। দুর্বল ও লিকযুক্ত দরজা এবং জানালার কাঠামো এবং বড় ফাঁক প্রতিরোধের জন্য জরুরি ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। যেমন আঠালো টেপ দিয়ে জানালার ফাঁক সিল করা, এবং কাচের জানালার বাইরে স্বচ্ছ প্লাস্টিকের ফিল্মের একটি স্তর পেস্ট করা, সানশেড পর্দা ব্যবহার করা এবং ইনডোর ওয়াল স্টিকার লাগানো যেতে পারে। কাঠের বোর্ড বা প্লাস্টিকের বোর্ড, দেয়ালের বাইরের অংশে সাদা রং করা ইত্যাদি বাইরের দেয়াল দিয়ে ঠান্ডা বাতাস হ্রাসের প্রবণতা এবং নিয়মিত বিদ্যুৎ খরচ কমাবে ২০ শতাংশের অধিক।
চতুর্থত, একটি ভালো কুলিং ক্যাপাসিটির (সঠিক বি.টি.উ) এয়ার কন্ডিশনার বাছাই করুন। অপর্যাপ্ত কুলিং ক্যাপাসিটিসহ (ভুল/মিথ্যা বি.টি.উ) বেনামি ও সস্তা ইলেকট্রিক যন্ত্রাংশ ব্যবহার করে তৈরিকৃত এসি কেনা যাবে স্বল্পমূল্যে, যেগুলো শুধুমাত্র যে পর্যাপ্ত তাপমাত্রা সরবরাহে ব্যর্থ হবে তাই নয় বরং নিরবচ্ছিন্নভাবে দীর্ঘ সময় চালাতে গিয়ে পড়তে হবে দারুণ বিপাকে, যা এসির সার্ভিস লাইফ কমিয়ে দেবে ৪০ শতাংশের অধিক।
এ পর্যায়ে আমরা যমুনা জেইডিসি সিরিজের এয়ার কন্ডিশনারগুলোর কথা বিবেচনা করতে পারি যা আপনাকে মনে করিয়ে দেবে যদি এসির তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা খুব বেশি হয়, তাহলে কমপ্রেসরে অতিরিক্ত চাপ কমে যাবে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত। ফলে কম্প্রেসর লাইফটাইম বৃদ্ধি পাবে, সঙ্গে বিদ্যুৎ খরচ হ্রাস করবে, এমনকি বাতাসের আয়তন (এয়ার ভলিউম) বৃদ্ধি করবে দ্বিগুণ।
আপনার ঘরে এসিটি এমনভাবে স্থাপন করুন যা সরাসরি সূর্যালোকের মুখোমুখি না থাকে। এটি গ্রীষ্মে আপনাকে আরও অতিরিক্ত ৫% বিদ্যুৎ সাশ্রয় করতে সাহায্য করবে।
ইনডোর ইউনিট এবং আউটডোর ইউনিট সংযোগকারী পাইপ যতটা সম্ভব ছোট এবং ভাঁজবিহীন হয় সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে যার ফলে রেফ্রিজারেন্ট গ্যাস সরবরাহ সুষ্ঠু হবে, যা ঘরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ সহজসাধ্য করবে এবং বিদ্যুৎ খরচ হ্রাস পাবে।
এয়ার আউটলেট পরিষ্কার ও মসৃণ রাখুন। শীত-তাপ অপচয় রোধ করতে এবং অপ্রয়োজনীয় বিদ্যুতের খরচ কমাতে অতিরিক্ত ও অপ্রয়োজনীয় আসবাবপত্র স্ট্যাক করবেন না। উল্লেখ্য, এয়ার কন্ডিশনার বিদ্যুৎ সাশ্রয় করে কি না তা নির্ভর করে প্রতিটি এয়ার কন্ডিশনারের শক্তি দক্ষতা অনুপাতের ওপর। শক্তির দক্ষতার অনুপাত যত বেশি হবে, তত বেশি শক্তি সাশ্রয় হবে।
এসি কেনার পূর্বে কি কি বিষয় লক্ষ্য রাখবেন?
জানেন কি? একটি এসিকে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী হতে হলে কোন কোন উপকরণ থাকা জরুরি? ইনভার্টার প্রযুক্তির সঙ্গে ডিসি (DC) এবং স্ট্যান্ডবাই ফাংশন আছে তো?
প্রচলিত অন/অফ সিস্টেমের এসিতে বিদ্যুৎ বিল হয়ে থাকে অনিয়ন্ত্রিত ও অস্বাভাবিক। বাজারে স্বল্পমূল্যে সাধারণ মানের ইনভার্টার এসি পাবেন অনেক, যেগুলোর বেশির ভাগই ডিসি ইনভার্টার ও স্ট্যান্ডবাই সিস্টেমের বহির্ভূত।
ইকো মোড কি টেকনোলজি?
এই অত্যাধুনিক টেকনোলজি এসির কম্প্রেসারকে খুবই ধীর গতিতে পরিচালন করবে এবং এটি কনডেন্সারে চাপ কমাবে। যার মানে হলো ফুল সিস্টেমকে চালানোর জন্য কম্প্রেসরের মোটর কম শক্তি ব্যবহার করে বিদ্যুৎ বিলকে করবে আরও সাশ্রয়ী।
স্লিপ মোড ফাংশন কি এবং কেন গুরুত্বপূর্ণ
এ পর্যায়ে যমুনা ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড অটোমোবাইলস এর সুদক্ষ এয়ার কন্ডিশনার এক্সপার্টদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা অনুসারে, সাধারণ মানের এসি ব্যবহারে ঘুমের সময় মানুষের শরীর সাদা বা ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। শুধু তাই নয়, বিদ্যুৎ বিলও অধিক। এ ক্ষেত্রে যমুনা এসিতে স্লিপ মোড টেকনোলজি এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যেটি তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং স্বল্প-শীতল ও আদ্রতামুক্ত বাতাস সরবরাহ করে আপনার শান্তিপূর্ণ ও স্বাস্থ্যসম্মত ঘুমে সাহায্য করবে, পাশাপাশি বিদ্যুৎ খরচটাও কমাবে।
এসিতে ব্যবহৃত টিউব কেন ইনার গ্রোভ হতে হবে?
ইনার গ্রোভ কপার টিউব হওয়াতে রেফ্রিজারেন্ট গ্যাসের ফ্লোকে রাখে স্মুথ ও নিরবচ্ছিন্ন, যা এসিকে করে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী এবং সুনিশ্চিত করে পারফেক্ট কুলিং পারফরমেন্স।
এসিতে তাপমাত্রা সেন্স করার ক্ষমতা কতটা গুরুত্বপূর্ণ?
খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাপমাত্রা সূক্ষ্মভাবে পরিমাপ করার ক্ষমতার ওপরে নির্ভর করে আপনার এসিটি কতটা বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ও দীর্ঘায়ু। বাজারে প্রচলিত সাধারণ মানের এসিতে তাপমাত্রা সেন্স করার ক্ষমতা (২-৫ সে.) যা ভারসাম্যহীন। এ পর্যায়ে জেনে রাখা ভালো যে, এসিতে তাপমাত্রা সেন্স করার সুক্ষ্মতা ০.১ সে. থাকা উচিত যা খুব স্বাভাবিক একটি বিষয়। এটি বিদ্যুৎ খরচ কমায়, এসির স্থায়ীত্ব বৃদ্ধি করে ও রুমের তাপমাত্রা সঠিকভাবে বজায় রাখে। যমুনার জেইডিসি সিরিজের মডেলগুলো শুরু থেকেই ০.১ সে. তাপমাত্রা সেন্স করার ক্ষমতা নিয়েই বাজারে এসেছে।
এসিতে ব্যবহৃত মোটরের গুণগত মান কীভাবে নিশ্চিত করবেন?
বাজারমূল্য কমানোর উদ্দেশ্যে বাজারের অনেক এসিতেই সাধারণ মানের এসি ভোল্টেজ (AC Voltage) মোটর ব্যবহার করা হয় যা দ্রুত নষ্ট হয়ে থাকে। তাই এসি কেনার সময় নিশ্চিত করতে হবে যে ব্রাশলেস ডিসি ভোল্টেজ মোটর ব্যবহৃত হয়েছে যা সাধারণ এসি ভোল্টেজ মোটর থেকে ৫০% বেশি দীর্ঘায়ু ও বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী।
স্বাস্থ্য এবং সুরক্ষা সম্পর্কিত প্রযুক্তি
আপনার এসি কি সত্যি স্বাস্থ্যসম্মত? এসি কেনার সময় স্বাস্থ্য এবং সুরক্ষা সম্পর্কিত কোন কোন বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে তা জানেন কি?
অটোমেটিক সেল্ফ ক্লিনিং প্রযুক্তি
এটি কাজ করে ৪টি ধাপে। ১. ডিফ্রস্টিং ২. হিটিং ৩. মেল্টিং ৪. ড্রায়িং স্বয়ংক্রিয়ভাবে ধুলাবালি থেকে কয়েলকে রাখে পরিষ্কার ও নিরাপদ। দু দিন পর-পর সার্ভিসিং এবং ক্লিনিং করতে হবে না এবং ফ্রেশ এয়ার নিশ্চিত করবে।
৩ ইন ১ ফিল্টার
যা সুনিশ্চিত করে স্বাস্থ্যকর এবং প্রাকৃতিক বায়ু।
পি এম ২.৫ ফিল্টার
হাই প্রেসার আইওনাইজেশন টেকনোলজি এবং ন্যানো কোল্ড ক্যাটালিস্ট ইলেকট্রনিক ডাস্ট কালেক্টিং প্রযুক্তি যা বাতাসে মিশে থাকা অতি সূক্ষ্ম ক্ষতিকর কণা দূর করে।
কোল্ড ক্যাটালিস্ট ফিল্টার
সুরক্ষিত রাখে ক্ষতিকারক গ্যাস যেমন বেনজিন, ফরমালডিহাইড, জাইলিন, টলুইন, টি ভি ও ভি ইত্যাদি থেকে।
সিলভার আয়ন ফিল্টার
ব্যাকটেরিয়ার প্রোটিন ধ্বংস করে এবং ব্যাকটেরিয়ার ডিএনএ গঠনে ব্যাঘাত ঘটায়, যা নিশ্চিত করে প্রকৃতির মতো নির্মল বাতাস।
অ্যান্টি ভাইরাস ফিল্টার
ন্যানোমিটার লেভেলের মতো শক্তিশালী ভাইরাসকে প্রতিহত করে ও এতে থাকা প্রোটিন ধ্বংস করে এবং ডিএনএ গঠনে ব্যাঘাত ঘটায়।
বিল্ট ইন র্থাড ইউভিসি স্টেরিলাইজার
ভাইরাসে থাকা প্রোটিন ড্যামেজ করে এবং ডিএনএ গঠনে ব্যাঘাত ঘটায় যার ফলে ৯৯.২% পর্যন্ত ভাইরাস ধ্বংস করে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।