কোরবানি ঈদ সামনে রেখে অনেকেই ইলেকট্রনিক্স পণ্য কিনে থাকেন। বিশেষ করে রেফ্রিজারেটরের চাহিদা এ সময় বেড়ে যায়। তাই এই প্রয়োজনীয় ইলেকট্রনিক্স পণ্যটির বিক্রিও বেড়ে যায় এ সময়। কম দামে ভালো মানের ফ্রিজ কিনতে চান সবাই।
তাই সাধ্যের মধ্যেই বাজেট রেখে যাতে ভালো ফ্রিজটি কেনার জন্য কিছু বিষয় জানা জরুরি। ফ্রিজের গুণগত মান এর বিভিন্ন প্রযুক্তির উপর নির্ভর করে। এসব বিষয়ে সামান্য জ্ঞান না থাকলে আপনি কখনও ভালো মানের ফ্রিজ কিনতে পারবেন না! হয়তো দাম দিয়েও ঠকতে পারেন!
বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী কি-না?
প্রথমেই জানতে হবে, আপনি যে ফ্রিজটি কিনতে যাচ্ছেন, সেটি বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী কি-না। বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ফ্রিজগুলো যেমন পরিবেশবান্ধব; তেমনিই আপনার মাসিক বিদ্যুৎ বিলের পরিমাণও কমিয়ে আনবে।
ফ্রিজ বিদ্যুৎ সাশ্রয় কি-না তা নির্ভর করে ফ্রিজে মানের ওপর। তবে কীভাবে বুঝবেন ফ্রিজ বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী কি-না? যদি ফ্রিজের গায়ে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় স্টার মার্ক দেওয়া থাকে; তাহলে বুঝে নিন ফ্রিজটি বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী৷
কপার কনডেন্সারযুক্ত ফ্রিজ
ফ্রিজ কেনার আগে জেনে নিতে হবে, এর কনডেন্সার কিসের তৈরি? যদি কপার কনডেন্সার দিয়ে তৈরি না হয়ে থাকে তাহলে কিনবেন না। কপার কনডেন্সরযুক্ত ফ্রিজের কম্প্রেসারের সঙ্গে তামার তৈরি কুলিং সিস্টেম পাইপ থাকে।
যেগুলো ফ্রিজের পেছনে ও বডির ভিতরে থাকে। কপার কনডেন্সর যুক্ত ফ্রিজ অনেক টেকশই, বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী। এর ফলে ফ্রিজের গ্যাস লিকেজ হয় না, মরিচা পড়ে না, ক্যাপেলরি জ্যাম হয় না আর তাড়াতাড়ি ঠান্ডাও হয়।
উন্নত মানের কম্প্রোসার ফ্রিজ
ফ্রিজের কম্প্রোসার হলো ফ্রিজের মেইন ইঞ্জিন। যার উপর নির্ভর করে ফ্রিজটি কতদিন টিকবে ও কেমন সার্ভিস দিবে তা নির্ভারিত হয়। আপনার ফ্রিজের কম্প্রোসার যদি খারাপ মানের হয়ে থাকে; তাহলে বিদ্যুৎ খরচ বাড়বে। ফ্রিজের কমপ্রেসার যত উন্নত হবে, সেটি ভালো হবে।
ফ্রিজের আকার
ফ্রিজের দাম যতই কম হোক না কেন, বেশি বড় আকারের ফ্রিজ নেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ নয়। এটি নির্ভর করে আপনার পরিবারের চাহিদার ওপর৷ বড় আকারের ফ্রিজ কিনলে তা মোটেও বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী হয় না। তাই যতটুকু দরকার সেই আকারের ফ্রিজ কিনুন।
স্মার্ট ফ্রিজ
বর্তমানে বাজারে বিভিন্ন কোম্পানির স্মার্ট ফ্রিজ পাওয়া যায়। স্মার্ট ফ্রিজে অনেক ইনভার্টার প্রযুক্তি থাকে। এতে পাঁচটি মোড কাজ করে। একটিতে ওপরে ডিপ আর নিচে সাধারণ ফ্রিজ থাকে। নতুন এই প্রযুক্তির যন্ত্রে ডিপ ফ্রিজকে রূপান্তর করে পুরোটাই সাধারণ ফ্রিজ করে ফেলা যায়।
কেউ বাসার বাইরে গেলে দীর্ঘ সময়ের জন্য এনার্জি সেভিং মোড চালু করে রাখতে পারেন। ফ্রিজে এখন থাকে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়া প্রযুক্তি। দেশের বাজারে দেশি-বিদেশি নানা ব্র্যান্ডের ফ্রিজ রয়েছে।
ফ্রিজটি ফ্রস্ট না-কি নন ফ্রস্ট?
ফ্রিজ কেনার আগে জেনে নিন, সেটি ফ্রস্ট না-কি নন ফ্রস্ট। ফ্রিজের ভিতরে ও সংরক্ষিত খাবারে বরফ জমে যায় তাকে ফ্রস্ট ফ্রিজ বলে। অন্যদিকে যে ফ্রিজের ভিতরে ও সংরক্ষিত খাবারে বরফ জমে না তাকে নন ফ্রস্ট ফ্রিজ বলে।
নন ফ্রস্ট ফ্রিজে অনেক বিদ্যুৎ খরচ হয় এবং কারেন্ট চলে গেলে খাবার ২-৩ ঘন্টার বেশি থাকে না। অন্যদিকে বিদ্যুৎ না থাকলেও আবার কয়েক ঘণ্টা ভালো রাখে ফ্রস্ট ফ্রিজ। আবার ফ্রস্ট ফ্রিজ অনেক বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী।
ন্যানা হেলথক্যোর টেকনোলজির ফ্রিজ
ফ্রিজ খাবার সংরক্ষণের জন্য কেনা হয়ে থাকে। আর যেখানে আপনি খাবার সংরক্ষন করবেন, সেটি যদি স্বাস্থ্যসম্মত না হয়; তাহলে ফ্রিজ কিনে লাভ নেই। তাই আপনাকে R134a গ্যাসসমৃদ্ধ ন্যানো হেলথ কেয়ার টেকলোজির স্বাস্থ্যসম্মত ফ্রোস্ট ফ্রিজ কিনতে হবে।
ন্যানো হেলথ কেয়ার টেকনোজির কাজ হলো খাবার সংরক্ষণের সব স্বাস্থ্যসম্মত উপায় যুক্ত থাকা। এই তথ্য ফ্রিজের গায়ে যুক্ত স্টিকার লেখা দেখে কিনতে পারবেন। আপনি ফ্রিজ কেনার সময় এর বডিতে লাগানো স্টিকারগুলো ভালোভাবে পড়ে দেখতে পারেন।
ওয়ারেন্টি, গ্যারান্টি ও কিস্তির তথ্য
রেফ্রিজারেটর কেনার আগে বিক্রয়োত্তর সেবা সম্পর্কে জেনে নেওয়া উচিত। ওয়ারেন্টি ও গ্যারান্টির বিষয়টাও বুঝে নিতে হবে। বর্তমানে বেশি ভাগ কোম্পানির রেফ্রিজারেটর কিস্তিতে কেনা যায়।
কয় মাসের কিস্তি বা প্রতি মাসে কী পরিমাণ টাকা পরিশোধ করতে হবে, সেটা কেনার আগে ভালোভাবে জেনে নেওয়া উচিত। ‘ফ্রি ডেলিভারি’ ও ‘ইন্সটলেশন’ সম্পর্কেও জানা উচিত।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।