জুমবাংলা ডেস্ক : বাড়ির সামনে সারি করে রাখা চারটি লাশ। গ্রামের মানুষের স্রোত বাড়িটির দিকে। গ্রামের মানুষগুলো হেঁটে ছুটছেন সেদিকে। রিকশা–ভ্যানে আসছেন আত্মীয়–স্বজন আর আশপাশের গ্রামের মানুষ। শোকে স্তব্ধ প্রতিবেশীরা কেউ কথা বলছেন না। বাড়ির ভেতর থেকে আসছে আত্মীয়–স্বজনদের বুকফাটা আর্তনাদ। সেই আর্তনাদে চোখের পানি ফেলছেন গ্রামের মানুষেরাও।
সিরাজগঞ্জে ট্রাক–মাইক্রোবাসের সংঘর্ষে একই পরিবারের নিহত চারজনের বাড়ি গিয়ে আজ সোমবার দুপুরে এমন দৃশ্য দেখা গেছে। তাঁদের বাড়ি রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার নরসিংহপুর ডাঙ্গাপাড়া গ্রামে।
গতকাল রোববার দিবাগত রাত ৩টার দিকে সলঙ্গা থানার হাটিকুমরুল গোলচত্বর এলাকায় ট্রাকের সঙ্গে সংঘর্ষে মাইক্রোবাস আরোহী চারজন নিহত হন। আহত হন মাইক্রোবাসের চালক।
নিহতরা হলেন—জসিম উদ্দিন প্রামাণিক (৬৪), তাঁর স্ত্রী নার্গিস খাতুন ময়না (৪১) এবং দুই ছেলে জামাল উদ্দিন (৪৫) ও কামাল হোসেন (৩২)। দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত মাইক্রোবাসের চালক আশিক হোসেনকে (২৮) সিরাজগঞ্জের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আজ দুপুরে নিহত চারজনের মরদেহ বাগমারার গ্রামের বাড়িতে আনা হয়।
এর আগেই চারটি খাটিয়া এনে রাখা হয় বাড়িতে। মরদেহ এনে বাড়ির সামনে রাখা হয়। এ সময় নরসিংহপুরসহ আশপাশের শত শত মানুষ ভিড় জমান। বিকেলে জানাজাসহ গ্রামের কবরস্থানে মরদেহগুলো দাফন করা হয়। চারজনের কবর হয় পাশাপাশি। একই পরিবারের চারজনের এমন মৃত্যুতে নরসিংহপুর গ্রামের মানুষ শোকস্তব্ধ।
দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, জসিম উদ্দিন প্যারালাইজড ছিলেন। ঢাকায় চিকিৎসা চলছিল। ফলোআপের জন্য গত শনিবার মাইক্রোবাস ভাড়া করে জসিমকে ঢাকায় নেওয়া হয়। সঙ্গে যান দুই ছেলে এবং জসিমের দ্বিতীয় স্ত্রী নার্গিস খাতুন ময়না। চিকিৎসা শেষে ফেরার পথে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান তাঁরা। পরিবারের সবাইকে হারিয়ে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন জামাল ও কামালের স্ত্রী।
প্রতিবেশীরা জানান, জসিম পেশায় কৃষক। বড় ছেলে জামালও কৃষিকাজ করতেন। আর চাকরি করতেন ছোট ছেলে কামাল। বিয়ের পর জামাল ও কামাল পাশেই আলাদা বাড়ি করেন। এখন শুধু জামালের তিন মেয়ে ও স্ত্রী এবং কামালের এক মেয়ে ও স্ত্রী থাকলেন। পরিবারটিতে আর কোনো পুরুষ নেই। জসিমের বাড়িতেও থাকার কেউ নেই। প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পর নার্গিস খাতুন ময়নাকে বিয়ে করেছিলেন জসিম উদ্দিন।
সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনামুল হক বলেন, রাত ৩টার দিকে ঢাকা থেকে মাইক্রোবাসটি রাজশাহী যাচ্ছিল। হাটিকুমরুল–বনপাড়া মহাসড়কের হাটিকুমরুল মৎস্য আড়তের সামনে একটি ট্রাকের সঙ্গে মাইক্রোবাসের সংঘর্ষ হয়। এতে চারজনের মৃত্যু হয়। দুর্ঘটনার পর চালক ট্রাক নিয়ে পালিয়ে গেছেন। নিহতদের মরদেহ উদ্ধারের পর থানায় নেওয়া হয়। পরে খবর দেওয়া হলে স্বজনেরা মরদেহ বাড়ি নিয়ে যান।
‘গুলি করলে মরে একটা, বাকিডি যায় না’ বলা সেই ইকবাল ডিবি হেফাজতে
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।