কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে যুগান্তকারী গবেষণার পুরস্কার পেয়েছেন দুই বিজ্ঞানী। ২০২৪-এ পদার্থবিদ্যায় নোবেল পেয়েছেন জন হোপফিল্ড ও জিওফ্রে হিন্টন। অথচ সেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়েই সকলকে সতর্ক করছেন খোদ হোপফিল্ড! তাঁর দাবি, এআই সংক্রান্ত সাম্প্রতিক পদক্ষেপ অত্যন্ত ‘আপত্তিকর’। যদি এখনই নিয়ন্ত্রণ না করা হয় তাহলে ‘সম্ভাব্য বিপর্যয়ে’র জন্য প্রস্তুত হতে হবে মানব সভ্যতাকে।
প্রসঙ্গত, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের কারণেই নাকি বিলুপ্তি ঘটতে পারে মানব সভ্যতার! এমন আশঙ্কা ক্রমশ জোরদার হচ্ছে। বিশেষ করে চ্যাটজিপিটির মতো বটের আবির্ভাবের পর থেকে সে সম্ভাবনা আরও জোরাল হয়েছে। এর আগে এমন আশঙ্কার কথা শুনিয়ে গিয়েছেন স্টিফেন হকিংয়ের মতো বিজ্ঞানী। এবার একই সুর শোনা গেল সদ্য নোবেলজয়ী বিজ্ঞানীর মুখেও। নিউ জার্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে এক জমায়েতে বক্তব্য রাখার সময়ই এই আশঙ্কার কথা শোনালেন তিনি।
হোপফিল্ডকে বলতে শোনা গিয়েছে, ”বুঝতে হবে প্রযুক্তি কেবলই ভালো বা খারাপ এই ধরনের অভিমুখের দিকে এগিয়ে যায় না। আমি একজন পদার্থবিদ। যা নিয়ন্ত্রণে নেই, তার নিয়ে আমি অত্যন্ত বিরক্ত হই। যেটা আমি ভালো করে বুঝতে পারছি না সেই প্রযুক্তির ক্ষেত্রে সীমাগুলো কী কী। এআই ঠিক এই প্রশ্নগুলোই তুলে ধরছে।”
উদাহরণস্বরূপ তিনি তুলে ধরলেন ‘আইস নাইন’-এর কথা। ১৯৬৩ সালে লেখা কার্ট ভনেগাটের ‘ক্যাটস ক্রেডল’ উপন্যাসটির বিষয়বস্তু ছিল এমন এক পদার্থ, যা কাদা থকথকে পরিস্থিতিতে সৈন্যদের সাহায্য করবে। কিন্তু শেষপর্যন্ত সেটার প্রভাবেই গোটা পৃথিবীর সব সমুদ্র জমে কঠিন পদার্থ হয়ে গেল। যার জেরে ধ্বংস হয়ে যায় সভ্যতা। আর এই উদাহরণ দিয়ে হোপফিল্ড বলেন, ”আমি শ্রেষ্ঠ তরুণ গবেষক ও আরও অনেককে বলতে চাই তাঁরা যেন এআইয়ের নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করেন। সরকারেরও উচিত বড় সংস্থাগুলিকে এই ধরনের গবেষণার বন্দোবস্ত করার জন্য তাগাদা দেওয়ার।”
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার রয়েল সুইডিশ অ্যাকাডেমি অব সায়েন্স জানিয়ে দেয়, কৃত্রিম নিউরাল নেটওয়ার্কসহ মেশিন লার্নিংয়ের মৌলিক আবিষ্কারের জন্য চলতি বছরে পদার্থবিদ্যায় নোবেল দেওয়া হচ্ছে হোপফিল্ড ও হিন্টনকে। এবার তাঁদেরই একজন মনে করিয়ে দিলেন এআইকে ঠিকমতো ব্যবহার করা দরকার। না হলে বিজ্ঞান আশীর্বাদ নয়, অভিশাপ হয়ে ধ্বংস করে দেবে সভ্যতাই।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।