আন্তর্জাতিক ডেস্ক : স্পেসএক্স, টেসলা ও এক্সের (সাবেক টুইটার) সিইও ইলন মাস্ক, ফোর্বসের তথ্যমতে পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি। তাঁর বাসভবন নিশ্চয়ই হবে সবচেয়ে ব্যয়বহুল বাড়িগুলোর একটি, এটাই তো স্বাভাবিক বলে ধরে নেওয়া যায়, নাকি? অথচ গত আগস্ট মাসে জানা গেছে, মাত্র দুই বেডরুমের একটা বাড়িতে থাকছেন ইলন মাস্ক! জেনে নেওয়া যাক, তাঁর দুই বেডরুমের বাড়িসহ আগের সব বাড়ির খোঁজখবর…
দুই বেডরুমের বাড়ি
ইলন মাস্ক দুই বেডরুমের বাড়িটি কিনেছেন যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের বোকা চিকা শহরে। গত ৬ আগস্ট টুইটারে (বর্তমানে এক্স) ছবিসহ এক পোস্টে বাড়িটির খোঁজ দিয়েছেন ইলন মাস্কের জীবনীলেখক ওয়াল্টার আইজ্যাকসন। বিখ্যাত ব্যক্তিদের জীবনীকার হিসেবে আইজ্যাকসন সুপরিচিত। এ ছাড়া তিনি ছিলেন সিএনএনের সিইও। ফলে এ তথ্য বিশ্বাসযোগ্য। আইজ্যাকসনের তথ্য অনুযায়ী, ৩৭৫ বর্গফুটের বাড়িটি মূলত প্রিফেব্রিকেটেড হাউস। বাড়িটি বানিয়েছে লাস ভেগাসের ‘বক্স্যাবল’ নামের এক কোম্পানি। এর পেছনে ইলন মাস্ক খরচ করেছেন ৫০ হাজার মার্কিন ডলার।
কী আছে বাড়িটিতে
দুই বেডরুম বাড়ির ভেতরেএক্স
বক্স্যাবল কোম্পানির ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, বাড়িটিতে আছে সহজে সরানো যায় এমন একটি আলমারি, বাথরুম, পাউডার রুম (শাওয়ার ও বাথটাববিহীন বাথরুম), ফায়ারপ্লেস, আধুনিক যন্ত্রপাতিসহ রান্নাঘর, একটি বেডরুম ও একটি লিভিংরুম।
প্রিফেব্রিকেটেড হাউস কী
এসব বাড়ি মূলত তৈরি হয় কারখানায়। তারপর ক্রেতা যেখানে চান, সেখানে স্থাপন করে দেওয়া হয়। প্রিফেব্রিকেটেড হাউস নির্ধারিত স্থানে বসানোর আগে আরও কিছু নির্মাণপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হয়, যেন বাড়িটি মাটি ও স্থানীয় পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারে। বক্স্যাবল তাদের ওয়েবসাইটে নিশ্চিত করেছে যে প্রিফেব্রিকেটেড হাউস আগুন, বাতাস, পানিরোধী; তাপমাত্রাও রাখা যায় নিয়ন্ত্রণে।
মাস্কের অন্য সব বাড়ির খোঁজখবর
২০২০ সালের মে মাসে ইলন মাস্ক এক টুইট বার্তায় নিজের স্থাবর সম্পত্তি বিক্রি করে দেওয়ার ঘোষণা দেন। বর্তমান বাড়িটির তুলনায় তাঁর আগের বাড়িগুলো ছিল বিলাসবহুল।
দ্য গ্র্যান্ড হিস্টোরিক হিলসবরো এস্টেট: ২০১৭ সালে ২৩ মিলিয়ন ডলার দিয়ে হিলসবরো এস্টেট কিনেছিলেন ইলন মাস্ক। বাড়িটিতে ছিল দর্শনীয় ৯টি বেডরুম ও ৯টি বাথরুম। ইলন মাস্কের মতে, বাড়িটি একটি বড় পরিবারের জন্য উপযুক্ত। সান ফ্রান্সিসকো ও সিলিকন ভ্যালি থেকে উত্তর দিকে, ২০ মিনিটের দূরত্বে সবুজ পাহাড়ের ওপর এর অবস্থান। ১৯ হেক্টর জমির ওপর তৈরি এই বাড়ি সাজানো ছিল ভূমধ্যসাগরীয় শৈলীতে। বাড়িটি বিক্রি হয়েছে ৩০ মিলিয়ন ডলারে।
বেল এয়ারের প্রথম বাড়ি: লস অ্যাঞ্জেলেসের বেল এয়ারে প্রথম যে বাড়ি ইলন মাস্ক কিনেছিলেন, সেটি ছিল ঔপনিবেশিক আদলে তৈরি। তিনি এটি ১৭ মিলিয়ন ডলারে কিনেছিলেন এবং ২০২০ সালের জুনে ২৯ দশমিক ৭২ মিলিয়ন ডলারে বিক্রি করে দেন। ২০ হাজার ২৪৮ বর্গফুটের এই বাড়িতে ৭টি বেডরুমের পাশাপাশি ১৩টি বাথরুম এবং একটি প্রশস্ত টেনিস কোর্ট ছিল। এ ছাড়া ছিল পাঁচটি গ্যারেজ। পেছনের দিকে ছিল ছোট ও বড়দের জন্য সুইমিংপুল। একটি ফলের বাগানও ছিল এখানে।
বেল এয়ারের দ্বিতীয় বাড়ি: বেল এয়ারে দ্বিতীয় যে বাড়ি কিনেছিলেন ইলন মাস্ক, সেটি ছিল মার্কিন অভিনেতা, কমেডিয়ান, লেখক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা জিন ওয়াইল্ডারের বাড়ি। খামারের আদলে তৈরি এই বাড়ির আয়তন ২ হাজার ৭৫৬ বর্গফুট। ২০২০ সালের অক্টোবরে ৭ মিলিয়ন ডলারে এটি বিক্রি করে দেন মাস্ক।
ক্যালিফোর্নিয়ার ব্রেন্টউডের বাড়ি: ২০১৪ সালে বুমেরাং আকৃতির এই বাড়ি মাস্ক কিনেছিলেন ৩ দশমিক ৭ মিলিয়ন ডলারে। পুরো বাড়ি ছিল নিরাপত্তাবেষ্টনীতে ঘেরা। ছাদ থেকে মেঝে পর্যন্ত বিশাল সব জানালা গলে প্রাকৃতিক আলো খেলে যেত ঘরে।
সান জোসের বাড়ি: দ্য হিলসবরো ম্যানশন নামের বাড়িটি ৪৭ একর জায়গাজুড়ে অবস্থিত। ৯টি বেডরুম, ৯টি বাথরুম, হাইকিং ট্রেল, ক্যানিয়ন, বিশালাকৃতির বলরুম, জলাধারসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধাও ছিল এখানে।
এসব বাদে বেল এয়ারে আরও দুটি বাড়ি ছিল ইলন মাস্কের। বিক্রি করে দিয়েছেন ওই দুটিও। এখন ওই ৩৭৫ বর্গফুটের ২ বেডরুমের বাড়িতেই তাঁর বাস।
সূত্র: আরকুট ডটকম ও টাইমস অব ইন্ডিয়া
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।