ঝিনাইদহ জেলা সংবাদদাতা : এলাকায় মা জননীদের আদর্শের প্রতীক হয়ে উঠেছিলেন সখিরণ নেছা ওরফে ভেজিরণ বুড়ি। যিনি নিজের সন্তানের মঙ্গলের জন্য প্রায় ৪৪ বছর ধরে রোজা রেখেছেন। সবার প্রিয় সেই সখিরণ নেছা আর নেই।
সোমবার বিকাল সন্ধ্যার দিকে আনুমানিক ৭৫ বছর বয়সে তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্না—-রাজিউন)। সখিরণ নেছা ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বাজারগোপালপুর গ্রামের মৃত আবুল খায়েরের স্ত্রী। প্রতিবেশী মনজুর আহম্মেদ জানান, ১৫ দিন ধরে তিনি অসুস্থ হয়ে বিছানায় ছিলেন। রক্ত তৈরী করা কোষগুলো তার অকেজো হয়ে পড়েছিল। সোমবার রাত ১২টার দিকে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বাজারগোপালপুর গ্রামে আদর্শ মা সখিরণ নেছাকে দাফন করা হয়।
এলাকাবাসী জানায়, তিনি কাজ করতেন মানুষের বাড়ি ও ভাজা ফ্যাক্টরিতে। কখনো ঝাল আর কলাই তুলে জীবিকা নির্বাহ করতেন। ৪৪ বছর রোজা পালন করলেও খাওয়ার ব্যাপারে তিনি ছিলেন একেবারেই সাদামাটা। কোন সময় শুধু পানি মুখে দিয়েই রোজা ভাংতেন। দুনিয়া জোড়া মায়েদের জন্য রোলমডেল সেই মা সখিরণ পাড়ি জমিয়েছেন না ফেরার দেশে। স্থানীয় মধুহাটী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফারুক আহম্মেদ জুয়েল বলেন, সন্তানের জন্য রোজা পালন করা মা পৃথিবীতে আছে কিনা অন্তত আমার জানা নেই। সন্তানের জন্য তিনি ১৯৭৫ সাল থেকে এক নাগাড়ে রোজা পালন করেছেন। ফেসবুকের কল্যাণে বাংলাদেশের গন্ডি পেরিয়ে সারা বিশ্বে তিনি ব্যতিক্রম একজন মমতামীয় মা হিসেবে পরিচিত লাভ করেছিলেন।
জানা গেছে, সখিরণ নেছা ওরফে ভেজিরণ বুড়ির স্বামী আবুল খায়ের ছিলেন একজন বিত্তশালী মানুষ। ৩ ছেলে ও ৩ মেয়ের জননী ছিলেন সখিরণ। স্বামীর মৃত্যুর পর অভাবী পরিবারে পরিণত হন সখিরণ। ১১ বছর বয়সী বড় সন্তান শহিদুল হারিয়ে গেলে তার জন্য রোজা পালন শুরু করেন তিনি। শহিদুল বাড়ি ফিরে এলেও রোজা ভাঙ্গেন নি সখিরণ। ছেলে শহিদুলের বয়স এখন ৫৫।
বড় ছেলে শহিদুল জানান, “এমন মা পাওয়া বর্তমান জামানায় সত্যিই গর্বের বিষয়। আমার মা ছিলেন অনুকরণীয় ও অবিশ্বরণী একজন নারী”।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।