জুমবাংলা ডেস্ক : সপ্তাহের ব্যবধানে আবারও বেড়েছে মুরগির দাম। এতে কিছুটা অস্থির হয়ে উঠেছে এ পোল্ট্রি পণ্যটির বাজার।
মুরগির দাম বাড়ার কারণ হিসেবে বৃষ্টি ও সরবরাহের ঘাটতিকে দায়ী করছেন বিক্রেতারা। তবে ক্রেতাদের দাবি, এগুলো ব্যবসায়ীদের অজুহাত। এর জন্য দায়ী সিন্ডিকেট।
সোমবার (১২ জুন) রাজধানীর কারওয়ান বাজারের হাঁস-মুরগির বাজারে গিয়ে দেখা যায়, আকারভেদে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ২০০ থেকে ২১০ টাকা বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। এছাড়া গত সপ্তাহে ৩০০ টাকায় বিক্রি হওয়া সোনালি মুরগি, বর্তমানে ৩২০ টাকা। ২৫০ টাকায় বিক্রি হওয়া সাদা সোনালি ২৮০ টাকা। ২৮০ টাকায় বিক্রি হওয়া লাল লেয়ার ৩৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে প্রকারভেদে মুরগির দাম কেজিতে ২০ থেকে ৬০ টাকা বেড়েছে। এর কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, বৃষ্টির কারণে খামার থেকে মুরগি ছাড়ছে না। যার কারণে চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ কম, দামও বাড়তির দিকে।
হেলাল নামে এক মুরগি বিক্রেতা বলেন, মাঝে কিছুদিন তীব্র গরম ও লোডশেডিংয়ের কারণে মুরগি মারা যাচ্ছিল দেখে খামারিরা কম দামে মুরগি ছেড়ে দিয়েছিল। তাই মুরগির দাম নেমে গিয়েছিল। এখন বৃষ্টিতে ঠাণ্ডা পড়েছে, তাই খামারিরা মুরগি ছাড়ছে না। এতে বাজারে পর্যাপ্ত সরবরাহ নেই। তাই দাম বেশি।
একই কথা বলেছেন আনোয়ার হোসেন নামে আরেক বিক্রেতা। তিনি বলেন, তীব্র গরমে যখন মুরগি মারা যাচ্ছিল তখন খামারিরা যে যেভাবে পেরেছে মুরগি ছেড়ে দিয়েছে। এখন ঠাণ্ডা পড়ায় মুরগি কম ছাড়ছে। এতে যে বাজারে ১০ গাড়ি মুরগি দরকার ছিল, সেখানে আসছে ৫ গাড়ি। তাই দাম বেশি।
মুরগির দাম খামারি ও বড় বড় করপোরেট ব্যবসায়ীরা নিয়ন্ত্রণ করে উল্লেখ করে আনোয়ার হোসেন বলেন, আমরা রাতে মুরগি কিনে পরদিন বিক্রি করি। আমরা মুরগি উৎপাদনও করি না, মজুদও করি না। যে দামে কিনি তার থেকে ১০ টাকা লাভে বিক্রি করি। এখন খামারি ও ব্যবসায়ীরা যদি দাম বাড়ায়, আমাদেরও বাধ্য হয়ে দাম বাড়াতে হয়।
এদিকে ক্রেতারা বলছেন, বড় বড় ব্যবসায়ী ও খামারিরা সিন্ডিকেট করে মুরগির দাম বাড়ায়। তারা মুরগির খাবার ও উৎপাদন খরচকে দাম বাড়ার কারণ হিসেবে দেখালেও এগুলো তাদের অজুহাত। কারণ মুরগির খাবারের দাম প্রতিদিন বাড়ে না, কিন্তু বাজারে মুরগির দাম প্রতিদিন বাড়ে। আবার সরকার চাপ দিলে কমে। যদি মুরগির উৎপাদন খরচ বেশির কারণে দাম বাড়তো, তাহলে সরকারের চাপে কমতো না বা প্রতিদিন দাম ওঠা-নামা করতো না।
এছাড়া খুচরা ব্যবসায়ীরাও প্রতি কেজি মুরগিতে ৫ টাকার জায়গায় ২০-২৫ টাকা লাভ করে বলে অভিযোগ ক্রেতাদের।
লতিফ মিয়া নামে এক ক্রেতা বলেন, গত রমজানের সময় ব্রয়লার মুরগির দাম ৩০০ টাকার বেশি হয়েছিল। তখন উৎপাদনকারীরা অজুহাত দেখিয়েছে মুরগির খারাবের দাম বেশি, ওষুধের দাম বেশি, উৎপাদন খরচ বেশি। কিন্তু আমরা কী দেখলাম ভোক্তা অধিদপ্তর যখন মুরগির দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে, তখন ঠিকই ১৯০ টাকায় মুরগি বিক্রি হয়েছে। এমনকি কোথাও কোথাও ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা করে মুরগি বিক্রি হয়েছে। তার মানে কী ব্যবসায়ীরা লোকসানে মুরগি বিক্রি করেছে? না কি এদিনের মধ্যে উৎপাদন খরচ কমে গেছে? দুটির একটিও হয়নি। আসলে আমাদের দেশে বাজারে সরকারের যথাযথ তদারকি না থাকায় ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে দাম বাড়ায়। যার ভুক্তভোগী শুধু সাধারণ মানুষ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।