স্পোর্টস ডেস্ক: আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে হুট করেই বিদায়ের ঘোষণা দিয়েছিলেন তামিম ইকবাল। তবে ক্রীড়ামোদি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতের পরই জাতীয় দলে ফিরে আসার বার্তা দিয়েছেন দেশসেরা এই ওপেনার। টাইগার শিবিরে ওয়ানডে দলের অধিনায়ক তামিমকে ফেরানো এতটা সহজ ছিল না।
তামিমের অশ্রুসিক্ত বিদায়ের পর থেকে তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। এমন সময়েই দৃশ্যপটে হাজির হন বাংলাদেশ ক্রিকেটের সফলতম অধিনায়ক ও নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা।
মাশরাফীর মাধ্যমেই তামিমকে ডেকে পাঠান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করেন তিনি। সেখানে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে অভিমান ভেঙে নিজের অবসরের সিদ্ধান্ত তুলে নেন ৩৪ বছর বয়সী বাঁহাতি এই ব্যাটার।
টাইগার ড্যাশিং ওপেনারের অবসর ভেঙে ফিরে আসার খবর গণমাধ্যমে প্রকাশের পর পরই খুশির জোয়ার বয়ে যায় তার জন্মভূমি চট্টগ্রামে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে চলমান সিরিজে না খেললেও দেড়মাস বিরতি দিয়ে আবার মাঠে ফেরার কথা জানিয়েছেন লাল-সবুজ জার্সিতে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক এই ব্যাটার।
তামিমকে প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত পৌঁছাতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা ছিল মাশরাফীর। তার অবসরের সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর আবেগাপ্লুত হয়ে ফেসবুকে একটি পোষ্ট করেছিলেন নড়াইল এক্সপ্রেস। সেখানে তিনি তামিমের কাছে জানতে চেয়েছিলেন, কোনো চাপের কারণে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কিনা। এসব প্রেক্ষাপট নিয়ে দেশের এক সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন মাশরাফী।
তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ওর সঙ্গে যোগাযোগ করতে চাইছিলেন। তামিম তো সবকিছু থেকে দূরে ছিল। প্রধানমন্ত্রী তাই আমাকে বলেছেন ওর সঙ্গে যোগাযোগ করতে। আমি তাকে বলেছি যে, তামিমকে আমি নিয়ে আসছি আপনার কাছে। এরপর তামিমকে আমি বলেছি যে, তুই গিয়ে মনের কথা বল। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর যে কথা আছে, সেটা তিনি বলবেন। তারপর যে সিদ্ধান্ত হওয়ার, হবে। আমার দায়িত্ব ছিল ওকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে নিয়ে যাওয়া।’
শুক্রবার (৭ জুলাই) বিকেল ৩টার দিকে স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকাকে নিয়ে তামিম গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেন। এসময় তার সাথে ছিলেন মাশরাফী। এর কিছুক্ষণ পরেই গণভবনে যান বিসিবি সভাপতি নাজমুল হোসেন পাপন। এরপর আলোচনার পর প্রধানমন্ত্রীর আহবানে জাতীয় দলে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন তামিম।
তামিমের সিদ্ধান্ত বদলের প্রসঙ্গে ম্যাশ বলেন, ‘এর চেয়ে ভালো সমাধান আমি আশা করিনি। তামিম বিরতি চেয়েছে, সেটা নিক। পুরো ফিট হয়ে, মানসিকভাবে তরতাজা হয়ে ফিরুক। কিন্তু এভাবে অবসরের মানে নেই। বাংলাদেশের ক্রিকেটে অনেক কিছুই হয়। কোচের সঙ্গে ঝামেলা হতে পারে, বোর্ডের সঙ্গে হতে পারে। আমার ২০ বছরের ক্যারিয়ার আর অধিনায়কত্বের ৫-৬ বছরে তো কম হয়নি এসব। সব দলেই কম-বেশি এসব হয়। এসব সামলেই চলতে হয়।’
তামিমের জাতীয় দলে ফেরা তো হলো। এখন পরের কাজটা তামিমকেই করতে হবে বলে মনে করেন বাংলাদেশকে ৫০টি ওয়ানডে জয়ে নেতৃত্ব দেওয়া মাশরাফী। তার ভাষায়, ‘আমার কথা হলো, সে যেন ট্রেনিং করে পুরো ফিট হয়ে আসে। দায়িত্ব এখন পুরোপুরি ওর।’
‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সামনেই ওকে বলেছি, ‘‘আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৫ হাজার রান করছিস, তোর ক্যারেক্টারে সেই দাপট থাকা উচিত। এত আমতা আমতা করে, এত সংশয় নিয়ে ক্রিকেট খেলা যাবে না। ক্রিকেটে অভিমানের কোনো মূল্য নেই। এভাবে অবসর নিলে তিন মাস পর তোকে কেউ মনে রাখবে না। মনে রাখার মতো কিছু করতে হবে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।