সমাবর্তন থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে, স্বর্ণপদক প্রত্যাখ্যান শিক্ষার্থীর

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে যদি কিছু বলে ফেলেন, এমন আশঙ্কায় স্বর্ণপদক পাওয়া এক শিক্ষার্থীকে সমাবর্তন অনুষ্ঠান থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। এর প্রতিবাদে নাগরিকত্ব আইন বাতিলের দাবিতে আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে স্নাতকোত্তরে প্রথম স্থান অর্জনের জন্য প্রাপ্ত স্বর্ণপদক প্রত্যাখ্যান করেন পদুচেরি ইউনিভার্সিটির ওই শিক্ষার্থী। তার নাম রাবিহা আবদুরেহিম।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম জানিয়েছে, গতকাল সোমবার ভারতের পদুচেরি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের ২৭তম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ শিক্ষার্থীদের সনদ ও স্বর্ণপদক তুলে দেন। এদিন রাবিহাকে সমাবর্তনের অডিটরিয়াম থেকে বের করে দেওয়া হয়। ওই শিক্ষার্থীকে বলা হয়, রাষ্ট্রপতি অনুষ্ঠান থেকে যাওয়ার পরই তিনি সমাবর্তন অডিটরিয়ামে আসবেন।

কেরালার রাবিহা আবদুরেহিম বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন। প্রথম স্থান অর্জন করায় তার স্বর্ণপদক পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সমাবর্তনের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের জহরলাল নেহরু অডিটরিয়ামে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি তাকে। কারণ, রাহিবাকে সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ঢুকতে না দেওয়ার কারণ আসলে ওই নাগরিকত্ব আইন।

কর্মকর্তাদের ধারণা, নাগরিকত্ব আইন নিয়ে সমাবর্তনে যদি কিছু তিনি বলে ফেলেন। তাই রাহিবা আবদুরেহিমকে সমাবর্তনে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।

এ ব্যাপারে ওই শিক্ষার্থী জানান, সমাবর্তন শুরুর আগে তাকে অডিটরিয়াম থেকে চলে যেতে বলেন একজন ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা। সমাবর্তনে শিক্ষার্থীদের সনদ ও স্বর্ণপদক দেওয়ার সময় রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্রপতি চলে যাওয়ার পর রাহিবাকে অডিটরিয়ামে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়। তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মকর্তা তার হাতে সনদ ও স্বর্ণপদক তুলে দিতে এলে তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন।

রাবিহা আবদুরেহিম বলেন, ‘সমাবর্তনে রাষ্ট্রপতি উপস্থিত ছিলেন। তারা হয়তো সন্দেহ করেছিল, আমি কিছু একটা করতে পারি। তাই আমাকে আমারই সমাবর্তনে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এর প্রতিবাদ জানাতে পদক নিতে অস্বীকৃতি জানাই আমি। এ ছাড়া আন্দোলনরত সব ভারতীয় ও শিক্ষার্থীর প্রতি সংহতি জানিয়ে তাদের সমর্থনে আমি এটা করেছি।’

স্বর্ণপদক পাওয়া ওই শিক্ষার্থী আরও বলেন, তাকে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে শেষে চলে যাওয়ার পরই তিনি ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারবেন। এর প্রতিবাদে ও ভারতের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন প্রত্যাহারের দাবিতে আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে স্বর্ণপদক প্রত্যাখ্যান করেন তিনি।