জুমবাংলা ডেস্ক : মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে সম্পত্তির লোভে সৎ মাকে লোহার রড দিয়ে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে এক আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে। এতে গুরুতর আহত মায়া বেগম (৫৫) এক মাস ১৮ দিন ধরে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালের বেডে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন।
তার স্বামী উপজেলার সিন্দুরখান ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামের আকবর আলী। তিনি গত ১৪ সেপ্টেম্বর দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর নিজ বাড়িতে মারা যান।
অভিযোগ আছে, স্বামী মারা যাওয়ার পর দিন থেকে সম্পত্তির লোভে সৎ ছেলে-মেয়ে ও তাদের স্ত্রী-সন্তানরা বসত ঘর জোরপূর্বক দখলে নিয়ে অবস্থান করতে থাকে। এ নিয়ে ঝগড়া বিবাদ শুরু হয়। একপর্যায়ে গত ১৫ নভেম্বর বিকেলে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে সৎ ছেলেমেয়েরা মায়া বেগমকে গুরুতর আহত করে।
স্থানীয়রা তাকে দ্রুত উদ্ধার করে শ্রীমঙ্গল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। চিকিৎসকরা তাকে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে রেফার্ড করলে সেখান থেকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালে পাঠান হয়।
এ ঘটনায় মায়া বেগমের ছেলে জাফর আলী (২৭) তার সৎ ভাই আছিদ আলীসহ (৫০) আরো নয়জনকে আসামি করে শ্রীমঙ্গল থানায় ১ ডিসেম্বর মামলা করেন। আছিদ আলী সিন্দুরখান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
জাফর আলী অভিযোগ করেন, তার বাবা আকবর আলীর দুই সংসার ছিল। প্রথম সংসারের স্ত্রী তার বড় মা খোদেজা বেগম। তিনি চার/পাঁচ বছর আগে মারা যান। ওই সংসারে তার দুই ভাই ও চার বোন রয়েছে। তারা সবাই বিবাহিত। দ্বিতীয় স্ত্রী তার মা মায়া বেগমের সংসারে তারা দুই ভাই ও দুই বোন ছিলেন। এর মধ্যে তার ছোট ভাই হাসানকে চলতি বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি সম্পত্তির লোভে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়। অন্য সবাই বিবাহিত।
তিনি জানান, তার ভাইকে বিষ খাইয়ে হত্যার মামলা বর্তমানে ঢাকা সিআইডিতে তদন্তাধীন। তিনি এ মামলার বাদী। তার বাবা আকবর আলী সাড়ে তিন মাস আগে মারা যাওয়ার পর আছিদ আলী আমাদের বসতঘর দখলে নিয়ে গেছেন।
তার অভিযোগ, আছিদ আলীর দাবি মতো তার বাবা আকবর আলী জীবিত অবস্থায় শুধু তার (জাফর আলী) স্ত্রীর নামে ৬ কেয়ার (১৮০ শতক) জমি লিখে দেন। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। বর্তমানে ৫ কেয়ার (১৫০ শতক) পরিমাণ জমিতে আছিদ আলীসহ তার সৎ ভাইরা বসবাস করে আসলেও পরে তাদের উচ্ছেদ করা হয়।
এ ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে কান্না করতে করতে জাফর আলী বলেন, ‘আমার সৎ ভাই আছিদ আলী ও তার ভাইবোনেরা মিলে সম্পদের জন্য আমার মাকে লোহার রড দিয়ে মারধর করেছে। তার মাথায় ও ডান হাতে ১২টি সেলাই দেওয়া হয়েছে। তিনি এখন মৃত্যুশয্যায়।
সম্পত্তির লোভে তারা আমাকেও মেরে ফেলতে চেয়েছিল। আমার ছোট ভাই হাসানকেও পরিকল্পিতভাবে মেরে ফেলা হয়। এ ছাড়া ইউনিয়ন পরিষদের উত্তরাধিকারী সনদে আমাদের ভাইবোনের নাম রেখে মায়ের নাম বাদ দিয়ে সার্টিফিকেট তুলে আছিদ আলী। বিষয়টি জেনে চেয়ারম্যান বরাবর পুনরায় আবেদন করি’।
জাফর আলীর অভিযোগ, ‘মামলার আসামিরা প্রকাশ্যে ঘোরাঘুরি করছে। থানায় মামলা রেকর্ড করা হলেও তাদের পুলিশ ধরছে না। আমরা বিচার চাইব কার কাছে’।
এ ঘটনায় আছিদ আলী ও তার ভাইকে বারবার ফোন করা হলেও তারা ধরেননি।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শ্রীমঙ্গল থানার উপ-পরিদর্শক আলমগীর হোসেন বলেন, ‘এই মামলার আসামিদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।