সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য মে মাসটা যেন এক অনন্য আনন্দের মাস হয়ে দাঁড়িয়েছে। একদিকে পবিত্র ঈদের টানা ৯ দিনের ছুটির রেশ কাটতে না কাটতেই মে মাসে আরও দুবার টানা তিন দিনের ছুটি অপেক্ষা করছে। এমন ছুটির খবর শুনেই প্রাণ জুড়িয়ে যাচ্ছে লাখ লাখ কর্মকর্তা-কর্মচারীর। সরকারি ছুটি নিয়ে দেশের মানুষের আগ্রহের শেষ নেই। এই ছুটি শুধু বিশ্রাম নয়, পরিবার ও আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে সময় কাটানোর এক দুর্লভ সুযোগ এনে দেয়।
সরকারি ছুটি: মে মাসের লম্বা ছুটির সূচি
মে মাসের শুরুতেই সরকারি চাকরিজীবীরা পাচ্ছেন প্রথম টানা ছুটি। ১ মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসের ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। যেহেতু এরপর শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি, তাই একসাথে তিন দিনের বিশ্রাম মিলছে। এই সরকারি ছুটি সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য বিশেষ এক স্বস্তির সময় এনে দিয়েছে।
Table of Contents
শুধু ১ মে-ই নয়, মে মাসে আরও একবার টানা তিন দিনের ছুটি পাচ্ছেন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। ১১ মে বুদ্ধ পূর্ণিমার সরকারি ছুটির দিন। তার আগে শুক্র ও শনিবার নিয়মিত সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় ফের তিন দিনের ছুটি নিশ্চিত হয়েছে।
এছাড়া, এর আগে ২৮ মার্চ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত ঈদুল ফিতরের কারণে ৯ দিনের টানা ছুটি উপভোগ করেছেন সরকারি চাকরিজীবীরা। প্রথমে পাঁচ দিনের ঈদের ছুটি নির্ধারণ করা হলেও, নির্বাহী আদেশে অতিরিক্ত একদিন ৩ এপ্রিল ছুটি বাড়ানো হয়। এর ফলে ৯ দিনের বিরাম নিশ্চিত হয়।
সরকারি ছুটির বিধিমালা ও অতিরিক্ত ছুটির সুযোগ
বর্তমানে দেশে প্রায় ১৫ লাখ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্মরত। ছুটির বিধিমালা অনুযায়ী, দুই সরকারি ছুটির মাঝে নৈমিত্তিক ছুটি নেওয়া নিয়মবহির্ভূত। তবে অর্জিত ছুটি এবং ঐচ্ছিক ছুটি গ্রহণের সুযোগ রয়েছে।
প্রত্যেক কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বছরের শুরুতেই নিজ ধর্ম অনুযায়ী তিন দিনের ঐচ্ছিক ছুটি নির্ধারণ করতে হয় এবং কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমোদন নিয়ে তা গ্রহণ করতে হয়। সাধারণ ছুটি, নির্বাহী আদেশের ছুটি ও সাপ্তাহিক ছুটির সাথে ঐচ্ছিক ছুটি যুক্ত করে টানা ছুটি নেওয়ারও সুযোগ রয়েছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যেসব প্রতিষ্ঠান নিজেদের আইন অনুযায়ী পরিচালিত হয়, যেমন বাংলাদেশ ব্যাংক, অথবা যেসব প্রতিষ্ঠানকে সরকার জরুরি সেবাসংক্রান্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে ঘোষণা করেছে, তাদের ক্ষেত্রে ছুটি জনস্বার্থ বিবেচনায় নিজস্ব বিধিমালায় নির্ধারিত হবে।
মে মাসের ছুটির পরিকল্পনায় যেসব বিষয় মাথায় রাখা জরুরি
১. ছুটি পরিকল্পনা করে কাজে ফেরা
লম্বা ছুটির পর কাজে ফিরে দক্ষতার সাথে কর্মসম্পাদন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই ছুটি উপভোগের পাশাপাশি মানসিকভাবে কর্মস্থলে ফেরার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
২. অতিরিক্ত ছুটির আবেদনের পূর্বপ্রস্তুতি
যদি কেউ ছুটির সাথে নিজের অর্জিত বা ঐচ্ছিক ছুটি যুক্ত করতে চান, তাহলে অবশ্যই আগেভাগে কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে।
৩. জরুরি সেবা প্রতিষ্ঠানে কর্মরতদের জন্য সতর্কতা
যারা জরুরি সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন, তাদের জন্য আলাদা ছুটির নিয়ম আছে। তাই নির্ধারিত অফিস নির্দেশিকা মেনে ছুটি গ্রহণ করতে হবে।
সরকারি ছুটি সংক্রান্ত অতিরিক্ত তথ্য
- ঈদ, পূজা, বড়দিন, বুদ্ধ পূর্ণিমার মতো উৎসব উপলক্ষে সরকারি ছুটি নির্ধারিত হয়।
- বিশেষ জাতীয় দিবস যেমন স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস উপলক্ষেও ছুটি দেওয়া হয়।
- সরকার নির্দিষ্ট সময়ে নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে অতিরিক্ত ছুটি ঘোষণা করতে পারে।
- ছুটি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত সাধারণত প্রশাসনিক প্রয়োজনে বা জনস্বার্থে নেওয়া হয়।
FAQs
সরকারি ছুটি কীভাবে নির্ধারণ করা হয়?
সরকারি ছুটি সাধারণত সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ছুটির তালিকা অনুযায়ী এবং জাতীয় বা ধর্মীয় উৎসবের ভিত্তিতে নির্ধারিত হয়।
ঐচ্ছিক ছুটি কি সরকারি ছুটির সাথে যুক্ত করা যায়?
হ্যাঁ, নির্দিষ্ট নিয়ম অনুযায়ী ঐচ্ছিক ছুটি সাধারণ ছুটি বা সাপ্তাহিক ছুটির সাথে যুক্ত করা যায়, তবে এর জন্য কর্তৃপক্ষের অনুমতি প্রয়োজন।
সরকারি চাকরিজীবীরা কি নৈমিত্তিক ছুটি নিয়ে টানা ছুটি করতে পারে?
না, সরকারি ছুটির মাঝে নৈমিত্তিক ছুটি নেওয়া নিয়মবহির্ভূত, তবে অর্জিত ছুটি বা ঐচ্ছিক ছুটি ব্যবহারের সুযোগ আছে।
জরুরি সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের ছুটি কীভাবে পরিচালিত হয়?
জরুরি সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেদের আইনের আলোকে জনস্বার্থ বিবেচনায় ছুটি পরিচালনা করে।
কীভাবে ছুটির সময় পরিকল্পনা করা উচিত?
ছুটির সময় ব্যক্তিগত ও পেশাগত দায়িত্বের সমন্বয় রেখে পরিকল্পনা করা উচিত যাতে ছুটির শেষে কর্মজীবনে ফিরে আসা সহজ হয়।
মে মাসে সরকারি ছুটি কতগুলো দিন?
মে মাসে সরকারি চাকরিজীবীরা দুবার তিন দিন করে, মোট ছয় দিন সরকারি ছুটি উপভোগ করবেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।