জুমবাংলা ডেস্ক : ব্যাংকের মোট তরল সম্পদের দুই-তৃতীয়াংশই এখন সরকারের কোষাগারে আটকে রয়েছে জানিয়ে প্রতিবেদন করেছে দৈনিক নয়া দিগন্ত। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ হিসাবে ব্যাংকের মোট তরল সম্পদ রয়েছে চার লাখ ২৪ হাজার ৪৬১ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারের কোষাগারেই রয়েছে তিন লাখ ১০ হাজার ৫৮৯ কোটি টাকা।
এদিকে, মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাওয়ার কারণে মানুষ আর আগের মতো সঞ্চয় করতে পারছেন না। বরং, সঞ্চিত বিনিয়োগই অনেকে ভেঙে খাচ্ছেন। এ কারণে ব্যাংকগুলো আমানত সংগ্রহ করতেও পারছে না।
এমনি পরিস্থিতিতে দীর্ঘ দিন ধরে চলে আসা ব্যাংকগুলোর টাকার সঙ্কট দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। তারই নমুনা হল, ঈদের পর দুই কার্যদিবসে ব্যাংকগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে প্রায় ৩৬ হাজার কোটি টাকা ধার করেছে।
এর মধ্যে ব্যাংক খোলার দিনই, অর্থাৎ ১৫ এপ্রিলে ধার করেছে ১৯ হাজার ৫৯১ কোটি টাকা। ব্যাংকাররা জানিয়েছেন, ব্যাংক খাতে কোর ডিপোজিট বাড়ছে না।
আবার মূল্যস্ফীতির কারণে গ্রাহকদের ঋণ পরিশোধের সক্ষমতাও কমে যাচ্ছে। সবমিলেই নগদ অর্থের সঙ্কট বেড়ে যাচ্ছে।
জানা গেছে, ঈদের আগে গ্রাহকরা নিজেদের প্রয়োজনে ব্যাংক থেকে বাড়তি অর্থ উত্তোলন করেন। আর এ কারণে ব্যাংকে নগদ টাকার সঙ্কট দেখা দেয়। আর এ সঙ্কট মেটাতে ব্যাংকগুলো কলমানি মার্কেট থেকে উচ্চ সুদে ধার নেয়। আবার বাজারে কাক্সিক্ষত হারে টাকা পাওয়া না গেলে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ধার নেয়। ঈদের পরে ব্যাংক থেকে অর্থ উত্তোলনের চাপ কম থাকে।
তাই ঈদের পর ব্যাংকে তেমন তারল্য সঙ্কট থাকে না। কিন্তু এবার ঠিক তার উল্টো। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, ঈদের ছুটির পর প্রথম কার্যদিবসে অর্থাৎ গত ১৫ এপ্রিলে টাকার সঙ্কটে পড়া ব্যাংকগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ধার করেছে ১৯ হাজার ৫৯১ কোটি টাকা। আর ১৬ এপ্রিল ধার করেছে ১৬ হাজার ১৪৬ কোটি টাকা। এ থেকেই অনুমান করা যায়, ব্যাংকিং খাতে টাকার সঙ্কটের প্রকৃত অবস্থা কতটা ভয়াবহ।
ব্যাংকারদের শীর্ষ সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের সাবেক চেয়ারম্যান ও মিউচুয়্যাল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী সৈয়দ মাহবুবুর রহমান জানিয়েছেন, দীর্ঘ দিন ধরেই টাকার সঙ্কট চলছে। এর অন্যতম কারণ হলো মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষ আর আগের মতো সঞ্চয় করতে পারছেন না। বরং বিদ্যমান সঞ্চয় অনেকেই ভেঙে খাচ্ছেন। এ কারণে কোর ডিপোজিট বাড়ছে না।
অপরদিকে, ব্যাংকগুলো দীর্ঘ দিন ধরেই ডলার সঙ্কটের কারণে বাড়তি দামে ডলার কিনছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকেও প্রায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো ব্যাংক ডলার কিনছে। বিপরীতে মার্কেট থেকে টাকা কেন্দ্রীয় ব্যাংকে চলে যাচ্ছে। অপরদিকে খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কায় কোনো কোনো ব্যাংক বেশি হারে সরকারি ট্রেজারি বিল বন্ডে বিনিয়োগ করেছিল। সবমিলেই টাকার তারল্য সঙ্কট কাটছে না। আর এ কারণেই কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ধার করে চলছে অনেক ব্যাংক।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।