স্পোর্টস ডেস্ক : এবার ভারতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে বিশ্বকাপের আসর। এ নিয়ে বাংলাদেশ সপ্তমবার অংশ নিচ্ছে বিশ্বকাপে। ১৯৯৯ সাল থেকে শুরু করে ২০২৩- প্রতিটি বিশ্বকাপেই সরব উপস্থিতি বাংলাদেশের। এর মধ্যে ২০০৩ বিশ্বকাপে কোনো জয় নেই। বাকিগুলোতে মোট ১৪টি ম্যাচে জয় পেয়েছেন টাইগাররা। তবে কোনো বিশ্বকাপে তিনটির বেশি জয় পাননি টাইগাররা।
বিশ্বকাপে বাংলাদেশ অংশগ্রহণ করে সর্বোচ্চ সেমিফাইনাল খেলার লক্ষ্য নিয়ে। এর বেশি লক্ষ্য নির্ধারণ করারই যেন সাহস পায় না। কিন্তু যে লক্ষ্যটা নির্ধারণ করে, সেটিও অর্জন হয়নি কখনো।
এ বিষয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন বাংলাদেশ দলের সাবেক অধিনায়ক মোহাম্মদ আশরাফুল। তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল খেলার মতো যোগ্য দল হয়ে উঠতে পারেনি।
কেন পারেনি? এমন প্রশ্নের জবাবে আশরাফুল বলেন, এমনিতে দলটা অনেক ভালো। ব্যাটিং ও বোলিংয়ে বেশ কিছু কোয়ালিটি ও ট্যালেন্টেড প্লেয়ার আছে। তার পরও আমার মনে হয়, বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল খেলা আর চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মতো দল হয়ে উঠিনি আমরা। কিছু কিছু জায়গা ও ক্ষেত্রে ঘাটতি রয়ে গেছে। এই কারণে আমি অতদূর চিন্তা করছি না। তবে এমনিতে আমি আশা করব, আমাদের দল তিনটা ম্যাচ জিতবে। এর চেয়ে বেশি যদি জিততে পারে, সেটাই হবে পাওয়া।
তিনি বলেন, এখনো আমরা ৩৫০ রান বলে-কয়ে ও প্রায় সময় করতে পারি না। ৩০০ প্লাস ও ৩৫০ রান চেজ করার সামর্থ্যও খুব কম। এটা বড় মঞ্চে সফল হতে না পারার পথে অন্যতম বাধা এটি। আপনি যদি অনুশীলন ম্যাচগুলো দেখেন, তা হলে দেখবেন আমাদের সেই ৩০০ প্লাস বা সাড়ে ৩০০ রান মিসিং। আমরা এখনো গড়পড়তা ২৭০-এ পড়ে আছি।
সাবেক এ অধিনায়ক বলেন, প্রথমত আমরা তো দেশে এমন ভালো ব্যাটিংবান্ধব উইকেট তৈরি করিনি। যে কারণে আমাদের ব্যাটাররা ভালো ও ট্রু ব্যাটিং কন্ডিশনে নিজেদের তৈরিই করতে পারেনি। বিশ্বকাপের কয়েক মাস আগে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ৩০০ প্লাস করেছে; কিন্তু ভালো ও বড় দলের সঙ্গে আমরা এখনো সেভাবে সাড়ে তিনশ রান করতে পারি না। সামর্থ্যের ঘাটতির পাশাপাশি অভ্যাসটাও অনেক কম।
তিনি আরও বলেন, আফগানিস্তান, শ্রীলংকা আর নেদারল্যান্ডসের সঙ্গেই আমাদের জেতার চান্স বেশি বলে আমার ধারণা। এই তিনটি বাংলাদেশের মাস্ট উইন গেম অবশ্যই। বাকিদের সঙ্গে জিততে পারটা হবে অনেক বড় অর্জন ও কৃতিত্ব।
তার ভাষায়, ঘাটতি মানে কী, মূল সমস্যার জায়গা হলো ব্যাটিং। ব্যাটাররা সেট হয়ে আউট হয়ে যায় বা যাচ্ছে। কেউই লম্বা ইনিংস খেলতে পারে না তেমন একটা। কারও ১৩০-১৪০ থেকে দেড়শ রানের ইনিংস খেলার সামর্থ্য তৈরি হয়নি এখনো। আমাদের এখনো দৌড় দেখবেন ৬০ থেকে ৭০, আকর্ষণীয় ৭০ রানের ইনিংস শেষেই আমরা থেমে যাই। যে জায়গায় বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা আর বাবর আজমরা যেদিন রান করেন, সেদিন দেখবেন ১৩০-১৪০ বা ১৫০ করে ফেলেন; কিন্তু আমরা তা পারি না। অতদূর যাই না। যাওয়া সম্ভব হয় না। এই জায়গাটায় ঘাটতি আছে।
আশরাফুল বলেন, আমার মনে হয় ভারত আর ইংল্যান্ড ফাইনাল খেলবে। আর টপ ফোরে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের সম্ভাবনাই বেশি। ভারতের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি। আমার মনে হয়, ২০১১ সালের মতো এবারও দেশের মাটিতে ভারতই হবে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। যেহেতু তাদের হোম কন্ডিশন, একটা অনেক বড় অ্যাডভানটেজ। প্রচুর অলরাউন্ডার। ব্যাটাররা ফর্মে আছে। জাসপ্রিত বুমরাহ ফেরায় ভারতের শক্তি অনেক বেড়ে গেছে। ভারতবধ খুব কঠিন হবে।
তিনি বলেন, পাকিস্তানের পেস আক্রমণ খুব ভালো, কিন্তু ইনিংসের মাঝামাঝি রানের গতি নিয়ন্ত্রণে রাখা আর ব্রেক থ্রু আনার মতো স্পিনার কম। সেটা বড় দুর্বলতা। এটা পাকিস্তানের বড় ঘাটতি। তা পুষিয়ে বিশ্বকাপের মঞ্চে বড় কিছু করা কঠিন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।