জুমবাংলা ডেস্ক : শেয়ার কারসাজিতে জড়িত থাকায় বেশ কয়েকজন বিনিয়োগকারী ও প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। তবে এই কারসাজিতে পুঁজিবাজারসহ বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রমের শুভেচ্ছাদূত বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান জড়িত নয় বলে প্রমাণ পেয়েছে শেয়ারবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা। বিএসইসি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, বেশ কিছু কোম্পানির কারসাজির সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করতে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে সাকিব আল হাসান ও তার প্রতিষ্ঠানের নাম আসে। তবে শেয়ার কারসাজিতে সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় সাকিব ও তার প্রতিষ্ঠানকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
কমিশন বলছে, তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনার সময় তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের জন্য অনেককেই সন্দেহের তালিকায় নেওয়া হয়। কিন্তু তাদের সবাই যে কারসাজিতে জড়িত থাকবেন, এমনটি নয়। একাধিক যাচাই-বাছাই করে, প্রকৃতপক্ষে যারা শেয়ার কারসাজির সঙ্গে জড়িত; তাদের চিহ্নিত করে জরিমানা করা হয়েছে। আর সাকিব আল হাসানসহ কয়েকজন শেয়ার কারসাজিতে জড়িত নয় বলে তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে।
বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম অর্থসংবাদকে বলেন, নির্দিষ্ট পরিমাণের শেয়ার যারা কিনেছেন তাদের নিয়ে একটা প্রাথমিক তালিকা তৈরী করা হয়েছিল। এখানে সাকিব আল হাসানের নাম ছিল। কিন্তু এই প্রাথমিক তালিকা অনুযায়ী যখন তদন্ত করা হয়েছে সেই তদন্তে শেয়ার কারসাজিতে সাকিব আল হাসানের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি, তাই তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে বিএসইসির মুখপাত্র বলেন, সাকিব আল হাসান বিএসইসির শুভেচ্ছাদূত। অনেক সংবাদমাধ্যম পাঠক পাওয়ার জন্য সাকিব আল হাসানকে জড়িয়ে সংবাদ উপস্থাপন করেছে। অথচ তদন্তে শেয়ার কারসাজিতে তার সংশ্লিষ্টতাই পাওয়া যায়নি।
এদিকে, কারসাজির সঙ্গে জড়িত থাকার খবরে সাকিবসহ তার পরিবার ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডও (বিসিবি) বিব্রত। মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) মিরপুরে ত্রিদেশীয় সিরিজ ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দলের পরিকল্পনার ব্যাপারে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন নাজমুল হাসান পাপন। এসময় শেয়ার কারসাজিতে সাকিবের জড়িত থাকা নিয়ে প্রশ্ন শুনে ‘হতভম্ব’ হন বিসিবি বস। তিনি বলেন, ‘বলেন কী! আমি তো এ ব্যাপারে জানি না। ওটা যেহেতু ক্রিকেটের সঙ্গে না, এখন আমি কী করব? এ বিষয়ে আমি জানি না। যদি ক্রিকেটের সঙ্গে হতো তাহলে কথা ছিল।’
উল্লেখ্য, দেশের পুঁজিবাজারের ভাবমূর্তি বাড়ানো এবং বিনিয়োগকারীদের অনুপ্রাণিত করতে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানকে ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর (শুভেচ্ছাদূত) হিসেবে ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে মনোনয়ন দিয়েছিল বিএসইসি। ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন অফ সিকিউরিটিজ কমিশন (আইওএসসিও) দেশের বিখ্যাত রাজনীতিবিদ, পেশাজীবী, খেলোয়াড় বা নামীদামী ব্যক্তিকে শুভেচ্ছাদূত হিসেবে নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে। এরই অংশ হিসেবে সাকিব আল হাসানকে শুভেচ্ছাদূত হিসেবে নেয় কমিশন। শুভেচ্ছাদূত হিসেবে দেশব্যাপী বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রমের দায়িত্ব পালন করতে আগ্রহী হয়ে তিনিও পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করেন। সম্প্রতি তিনি মোনার্ক হোল্ডিং নামে একটি ব্রোকারেজ হাউজের (শেয়ার কেনাবেচা হাউজ) লাইসেন্স কিনেছেন। এভাবেই সাকিব শেয়ার ব্যবসায় ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে পড়েন।
বিএসইসির তথ্যমতে, বিভিন্ন ব্যক্তি ও তার সহযোগীরা গত বছরের মাঝামাঝি থেকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত কারসাজি করে ৭টি কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়ায়। এতে চরম লোকসানের শিকার হন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। কারসাজি চক্রটি এসব শেয়ারের মাধ্যমে ১৩৭ কোটি টাকা মুনাফা করে বলে তদন্তে বেরিয়ে এসেছে। সার্বিক দিক বিবেচনা করে অভিযুক্ত ব্যক্তি ও সহযোগীদের ১০ কোটি ৮৯ লাখ টাকা জরিমানা করেছে বিএসইসি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।