স্পোর্টস ডেস্ক : সাকিব আল হাসানের দক্ষিণ আফ্রিকা সফর নিয়ে নাটকের আপাতত পরিসমাপ্তি ঘটেছে। আজ শনিবার মিরপুর শেরে বাংলায় এসে তিনি এবং বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন বলেছেন, সাকিব রবিবার আফ্রিকায় যাচ্ছেন। এসময় গত কয়েকদিনে ঘটে যাওয়া ‘সাকিব নাটক’ নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করায় মিডিয়ার সমালোচনাও করেন বিসিবি সভাপতি। যদিও ৭ মার্চ তিনি নিজেই সাকিবের ব্যাপক সমালোচনা করেছিলেন।
আজ শেরে বাংলায় বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘একটা দুইটা সিরিজ যদি কেউ না খেলে, এটা নিয়ে এতো জল্পনা করার কিছু নেই। এমনও হতে পারে বোর্ডও অনেক সিরিজে রাখবে না কাউকে। ড্রপ দিয়ে আমরা নতুন কাউকে দেখতে পারি। এটা দেখে আপনারা বলবেন বোর্ড এটা কেন করল? কয়েক জন কমেন্ট করবে এটা কিন্তু আসলে ঠিক না, ক্রিকেটের বেটারমেন্টের জন্য ঠিক না। অনেক খেলোয়াড় সিরিজে নাও খেলতে পারে। তার অসুবিধা থাকতেই পারে। এটাকে আমি বলবো আপনারা স্পোটিংলি নেন। এটাও খেলার একটা অংশ। বিশ্বজুড়ে এটাই হয়ে আসছে। ‘
নাজমুল হাসান আরও বলেন, ‘সাকিব আমাকে বলেছে , যদিও এটা বলা উচিত না। ও একটু মেনন্টালি ডিস্টার্ব। ওকে আমার মনে হয় এই সময়টা আমাদের সকলের সাকিবকে সমর্থন দেওয়া উচিত। ওর সাথে থাকা উচিত, ওকে মানসিক শক্তি দেওয়া উচিত। কাজেই এটা নিয়ে আলাপ আলোচনা, যে সমস্ত টকশো, লেখালিখ হচ্ছে আসলে এটা কারো জন্যই ভালো না। একটা জিনিস আমাদের মনে রাখা উচিত সাকিব, তামিম, মাশরাফি, মুশফিকুর, রিয়াদ দেশের জন্য অনেক কিছু করেছে। এটাতো অস্বীকার করার উপায় নেই। ‘
তিনি বলেন, ‘মানুষের যে কোন সময় একটা সমস্যা হতেই পারে। সেটা ফিজিক্যাল হোক আর মেন্টাল। ওই সময় আমাদের তাদের পাশে থাকা উচিত, বোর্ডের থাকা উচিত। আমরা সব সময় ওদের পাশে আছি, সামনেও থাকবো। আপনাদের কাছেও অনুরোধ যদি কিছু হয় সরাসরি জিজ্ঞেস করবেন। আমাকে জিজ্ঞেস করবেন, নয়তো যে খেলোয়াড় তাকে জিজ্ঞেস করবেন। নিজের নিজেরা অনুমান করবেন না, তাতে করে অনেক কনফিউশনের সৃষ্টি হয়। ‘
দক্ষিণ আফ্রিকার কোন ফরম্যাটে সাকিব অ্যাভেইলেবল থাকছে, যাচ্ছে কিনা- এমন প্রশ্নে বিসিবি প্রধান বলেন, ‘সাকিব আল হাসান সব ফরম্যাটেই অ্যাভেইলেবল। কাল রাতে সে যাবে। ওখানে তিনটি ওয়ানডে ও দুটি টেস্ট আছে, প্লিজ আপনার একটু বোঝার চেষ্টা করেন, কোনো একটায় ও যদি না খেলে, এমন হতে পারে টিম ম্যানেজমেন্ট তাকে ওই ম্যাচে ড্রপ করেছে। এমন হতে পারে ও একটা ম্যাচ বিশ্রাম চেয়েছে। এটা নিয়ে এতো হুলুস্থুল করার কিছু নাই। মোদ্দা কথা, ও আমাদের পুরো প্রোগ্রাম দেখে বলেছে, ও খেলতে চায় এবং সে খেলতে তিন ফরম্যাটেই। ‘
অথচ গত ৭ মার্চ নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের কাছে ক্ষুব্ধ পাপন বলেছিলেন, ‘সাকিব এই আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি সিরিজ নাকি এনজয়ই করে নাই! সে এনজয়ই করে নাই! আমরা যে ওয়ানডে সিরিজ জিতি, তাতে এনজয় করে নাই! প্রথম টি-টোয়েন্টি জিতলাম, তাতেও এনজয় করে নাই! হোয়াই? তার যদি অফ ফর্ম থাকে তাহলে বলুক খেলব না। খেলা শেষ হওয়ার পর এনজয় করি নাই, আগ্রহ নাই বলছ কেন? কিভাবে সে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়? মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হইলে তো সে আইপিএলে খেলতে যেত না। ধরেন ওকে আইপিএলে নেওয়া হলো, তখন কি ও নিজেকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত বলত? জিনিসটা আমার মাথাতেই ঢুকছে না!’
এরপর জাতীয় দলের টিম লিডার খালেদ মাহমুদ সুজন গত ৮ মার্চ বলেছিলেন, ‘সাকিব একটু এ রকম আমরা সবাই জানি। তবে এটা মেনে নেওয়াটা অবশ্যই ঠিক না। কারণ সাকিব-রিয়াদ-মুশফিক-তামিম, মাশরাফি যেহেতু নেই, তাই ওর কথা না বললাম… এরা তো সেই ছোটবেলা থেকেই জাতীয় দলের পাইপলাইন ধরে উঠে এসে এত বড় ক্রিকেটার হয়েছে। ওদের পেছনে তো দেশের ক্রিকেটের ইনভেস্ট অনেক। তো আমার কথা হচ্ছে, দেশের যখন প্রয়োজন তখন ওদের পেতে হবে। এটা তো পাপন ভাইয়ের টিম না, বাংলাদেশ দল। দেশের হয়ে খেলাটাই তো বড় বিষয়। ‘
এখানেই শেষ নয়, প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নুও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। গতকাল শুক্রবার মিরপুর শেরে বাংলায় সাংবাদিকরা তাকে প্রশ্ন করেছিলেন যে, সাকিবের খেলা নিয়ে এই অনিশ্চয়তা যে বারবার সমস্যার সৃষ্টি করছে, সেটা তিনি কীভাবে দেখেন? জবাবে মিনহাজুল বলেন, ‘অবশ্যই (খারাপ লাগে), কারণ এখানে একটা পরিকল্পনা অবশ্যই থাকে। নির্বাচকরা ও টিম ম্যানেজমেন্ট থেকে পরিকল্পনা করে দল দেওয়া হয়। এরপর বোর্ডও অনুমোদন দেয়। না যাওয়াটা অবশ্যই ব্যাকফায়ারের মতো হয়। না গেলে তো জোর করে খেলানো যায় না। ‘
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।