আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইতালির নেপলসের উপকূলে সমুদ্রের তলায় পাওয়া গেল প্রাচীন এক রোমান ভিলার ধ্বংসাবশেষ। ভিলাটির মেঝের জমকালো টাইলসের ছবি প্রকাশ করেছেন এই উদ্ধার অভিযানের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা। এককালে সাগরের দিকে মুখ করা একটি বাড়ির সুসজ্জিত বারান্দায় ব্যবহৃত হয়েছিল টাইলসটি। ইতালির সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় সম্প্রতি এই আবিষ্কারের খবর জানিয়েছে।
ভিলাটি নির্মিত হয়েছিল প্রাচীন স্পা শহর বাই-আইয়ে। রোমান সাম্রাজ্যের শেষের দিকে জনপ্রিয় ছিল এলাকাটি। খোদ সম্রাট জুলিয়াস সিজার ও নিরোর বাসস্থান ছিল এই শহরে। ব্রেইডিসেয়াজম নামের বিশেষ একটি ভূতাত্ত্বিক ঘটনার ফলে ডুবে যাওয়া ভূমির মধ্যে পড়ে শহরটি।
ব্রেইডিসেয়াজম হলে ভূগর্ভের চাপের কারণে ভূমি ওপরে ওঠে বা নিচে নেমে যায়। বাই-আই শহরের ক্ষেত্রে ঘটেছে দ্বিতীয়টি।
প্রাথমিক গবেষণায় দেখা গেছে, ভিলাটির মেঝে মূলত নানা আকারের পুরনো মার্বেল পাথরের টুকরা দিয়ে তৈরি করা হয়েছিল। এই নির্মাণ কৌশল তৃতীয় থেকে পঞ্চম শতাব্দীর মধ্যে প্রচলিত ছিল।
মেঝের মার্বেল টাইলসগুলো ভেঙে গেছে, কারণ ঘরের দেয়ালগুলো নিচে ভেঙে পড়েছিল। ঘরটি মেঝে থেকে ১০ মিটারেরও বেশি (৩২ ফুট) উঁচু ছিল। পানির নিচে থাকা মেঝের আরো অংশ খুঁজে বের করে পুনরুদ্ধারের কাজ চলছে। অন্যদিকে কিছু অংশ ডাঙায় তুলেও পরিষ্কার করা হচ্ছে।
স্থানীয় মেয়র জোসি জেরার্দো দেলা রাজিওনে ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে নিমজ্জিত ভিলার ধ্বংসাবশেষ পাওয়ার বিষয়টিকে চমকপ্রদ বলে অভিহিত করেছেন।
তাঁর ধারণা, রোমান সাম্রাজ্যের শেষের দিকেই মেঝেটি নির্মিত হয়েছিল।
এলাকাটি এখন একটি জনপ্রিয় ডাইভিং স্পট। সেখানে পর্যটকরা সাগরতলে ডোবা বিভিন্ন ধরনের ধ্বংসাবশেষ দেখার সুযোগ পায়।
ক্যাম্পি ফ্লেগ্রেই নামের একটি বৃহৎ আগ্নেয়গিরি এলাকা নেপলস উপসাগর এবং কাপ্রি ও ইসচিয়া নামের দ্বীপের তলা দিয়ে নেপলস শহরের উপকণ্ঠ পর্যন্ত গেছে। এটি একটি বিশাল ক্যালডেরা অর্থাৎ দেবে যাওয়া ভূমি। এই এলাকায় ৩৯ হাজার বছর ধরে সক্রিয় একাধিক আগ্নেয়গিরি রয়েছে। এর মধ্যে কিছু সাগরের পানির নিচে। ক্যাম্পি ফ্লেগ্রেইয়ের শেষ বড় অগ্ন্যুৎপাত হয়েছিল ১৫৩৮ সালে। তখন এটি নেপলস উপসাগরে একটি নতুন পর্বত তৈরি করেছিল।
ইতালির ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব জিওফিজিকস অ্যান্ড ভলক্যানোলজি অনুসারে, এই অঞ্চলে ভূমিকম্পসংশ্লিষ্ট তৎপরতা ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে ক্রমেই তীব্রতর হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, অনেক প্রজন্ম ধরে সুপ্ত থাকার পর আগ্নেয়গিরিটি এখন আবার জেগে উঠতে পারে। সূত্র : সিএনএন
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।