জুমবাংলা ডেস্ক : বাধাহীন প্রজনন ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে শুক্রবার (২০ মে) থেকে আগামী ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিনের জন্য সাগরে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে মৎস্য বিভাগ। তবে দেশে ইলিশের অভয়াশ্রমে গত ০১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার দুই সপ্তাহ পর থেকে ভোলার মেঘনা-তেঁতুলিয়ায় জেলেদের জালে কাঙ্ক্ষিত মাছ ধরা পড়ছে। এতে হাসি ফুটেছে তাদের মুখে।
এদিকে ইলিশ ধরাকে কেন্দ্র করে সরগরম হয়ে উঠেছে ভোলায় ইলিশের আড়ৎগুলো । চলছে ইলিশ কেনা-বেচার ধুম।
জেলেরা জানান, দুই মাসের নিষেধাজ্ঞার পর ০১ মে থেকে নদীতে ইলিশ ধরা শুরু হলেও তেমন একটা ইলিশের দেখা না মেলেনি। এখন যে পরিমাণ মাছ ধরা পড়ছে, তাতেই খুশি জেলেরা। এতে তারা সংকট দূর করতে পারবেন বলে আশাবাদী।
ভোলার তুলাতলী, ইলিশা, নাছির মাঝি, ভোলার খাল, বাত্তির খাল, জোড়খালসহ বিভিন্ন মাছঘাট ঘুরে জেলেদের সঙ্গে কথা বলে ইলিশের এমনি তথ্য মিলেছে।
জানা গেছে, মার্চ-এপ্রিল দুই মাস ইলিশ ধরা বন্ধের পর মে মাসের প্রথমদিন থেকে শুরু হয় মেঘনা-তেঁতুলিয়া নদীতে ইলিশ ধরা। তখন সারাদিন জাল বেয়েও কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ মাছ পাননি জেলেরা। কিন্তু গত এক সপ্তাহ ধরে জেলেদের জালে ধরা পড়ছে ইলিশ। এতে হাসি ফুটেছে জেলেদের মুখে। এছাড়া সংকট কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন বলে আশাবাদী জেলেরা।
লালমোহনের বাত্তির খাল এলাকার জেলে মনির মাঝি মো. মহিউদ্দিন বলেন, কিছুদিন হলো নদীতে জালে মাছ পড়া শুরু হয়েছে। এমন অবস্থা থাকলে আমাদের সংকট থাকবে না।
আরেক জেলে নুর উদ্দিন বলেন, ২-৩ দিন ধরে নদীতে ইলিশ বেড়েছে। প্রতি বার নদীতে গিয়ে ২০-৩০ হাজার টাকার মাছ পাচ্ছি। মাছগুলোও অনেক বড় সাইজের। ফলে দামও অনেক ভালো পাচ্ছি।
একই কথা জানালেন জেলে জোবায়ের, আব্বাস ও গিয়াসসহ অন্যরা। তারা জানান, এখন আর কারও বসে থাকার সময় নেই। সবাই ব্যস্ত মাছ ধরা নিয়ে।
এদিকে, ইলিশ ধরাকে কেন্দ্র করে সরগরম ইলিশের আড়ৎগুলো। জেলেরা জাল নৌকা নিয়ে ছুটছেন নদীতে। ব্যস্ততা বেড়েছে তাদের।
ভোলা সদরের তুলাতলী ঘাটে আড়তদার মো. মঞ্জু হোসেন বলেন, আগের তুলনায় এখন বেশি ইলিশ ধরা পড়ছে। আগে এখানকার ১২টি আড়তে ৫০ হাজার টাকার মাছ কেনা-বেচা হতো। এখন তা বেড়ে ৪-৫ লাখ টাকা হয়েছে।
জেলে সমিতির সভাপতি মো. এরশাদ ফরাজি বলেন, ইলিশ ধরা পড়ছে, এভাবে চলতে থাকলে কিছুটা হলেও জেলেরা ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন।
এ ব্যাপারে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এসএম আজহারুল ইসলাম বলেন, অসময়ে মাছ ধরা পড়ায় ইলিশ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে বলে মনে করছি।
বিগত এমন সময়ে তেমন ইলিশ ধরা পড়েনি, এখন বড় ইলিশ ধরা পড়ছে। এটা জেলে এবং মৎস্য বিভাগের জন্য সুখবর।
মৎস্যজীবীরা মনে করছেন, এতোদিন ঋণ আর দেনার দায়ে যারা জর্জরিত ছিলেন, তারাও ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছেন।
গত ১৮ মে থেকে ৬৫ দিনের জন্য সাগরে মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকলেও নদীতে মাছ ধরা পড়ায় জেলেদের অভাব-অনটন কেটে যাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।