সাতকানিয়া প্রতিনিধি: চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার নলুয়া ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি মো. মহিউদ্দিনের বাড়িতে গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (১৩ আগস্ট) রাত প্রায় ২ টায় এ ঘটনা ঘটে।
মহিউদ্দিনের অভিযোগ, গত ইউপি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মিন্টুর সন্ত্রাসী বাহিনী আমাকে হত্যা করার জন্য গুলিবর্ষণ করেছে।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন সাতকানিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ তারেক মো. আবদুল হান্নান।
তিনি বলেন, ‘ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। নলুয়ার পূর্ব গাটিয়া ডেঙ্গা এলাকায় কিছু দুষ্কৃতকারী দীর্ঘদিন থেকে নানা অপরাধ কর্মকাণ্ডে জড়িত। প্রভাবশালী কয়েকজন এসবের নেপথ্যে কাজ করছে। ওইদিন রাতে খবর পেয়ে ঢেমশা তদন্তকেন্দ্র থেকে এসআই আবসার উদ্দিন ভূঁইয়া ও থানা থেকে এসআই প্রবীর মিত্রের নেতৃত্বে পুলিশ ফোর্স ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আলামত সংগ্রহ করেছেন। এ ব্যাপারে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’
স্থানীয়দের অভিযোগ, মো. বকসুর ছেলে কামাল ও ফখরুদ্দিন মিন্টু সম্প্রতি প্রবাসে গিয়ে বিত্ত বৈভবের মালিক হয়েছেন। বড় ভাই মোস্তাকের বদান্যতায় তারা সৌদিআরব যান ভাগ্য পরিবর্তনের আশায়। কিছু টাকা পয়সা রোজগার করলেই প্রথম বিরোধিতা করেন মোস্তাকের সাথে। বড় ভাই মোস্তাককে এখন বাড়ি থেকেই বিতাড়িত করা হয়েছে। একইভাবে তারা এখন পুরো এলাকাকে নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য সামাজিক শান্তি শৃঙ্খলা বিনষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মূলত তাদের ইন্ধন ও পৃষ্ঠপোষকতায় এলাকায় একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ রয়েছে। ওই সন্ত্রাসী গ্রুপের সক্রিয় সদস্যরা হলো— জামশেদ ওরফে ভাগিনা জামশেদ, মো. ফারুক ওরফে টাইগার ফারুক, শহিদুল ইসলাম ওরফে হাশেম শহিদ, জোবায়ের ওরফে মৌলানা জোবায়ের, রিয়াজ প্রমুখ।
অভিযোগ রয়েছে, মিন্টু প্রবাসে থাকলেও তার হয়ে এলাকায় সন্ত্রাসী গ্রুপের নিয়ন্ত্রণ করেন মনজুর ওরফে কানা মনজুর ও স্থানীয় মেম্বার মোরশেদ। ওই গ্রুপের সদস্যরা পুরো এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে আছে। চাঁদাবাজি, মাস্তানি, জমি দখল, ইয়াবা ও মাদক সেবন এবং বিক্রি, গরীব ও অসহায় পরিবারের মহিলাদের নির্যাতনসহ এমন কোনো অপরাধ নেই যা তারা করে না। তারা এতোই বেপরোয়া যে তাদের ভয়ে এলাকায় কেউ মুখ খোলার সাহস পর্যন্ত পায় না প্রতিবাদ দূরে থাক।
নলুয়া ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মো. মহিউদ্দিনের অভিযোগ বলেন, ‘আমি গত ৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ইউনিয়র পরিষদ নির্বাচনে সদস্য পদে নির্বাচন করি। ওই নির্বাচনে মো. মোরশেদ ছিলেন আমার প্রতিদ্বন্দ্বি। তাদের হুমকির পরও নির্বাচন করায় তারা আমার পিছু লেগেছেন। এরই ধারাবাহিকতায় তারা নির্বাচনকালীন বিভিন্ন সময় আমাকে নানাভাবে হুমকি ধমকি দিয়েছেন। পরবর্তীতে জোরপূর্বক ভোট ছিনিয়ে নিয়ে মিন্টুর ভাগিনা মোরশেদকে তারা নির্বাচনে জেতান। এজন্য মিন্টু বিদেশ থেকে দেশে আসেন কিছুদিনের জন্য। এসেই তার সাঙ্গপাঙ্গদের নিয়ে দিনরাত স্বশস্ত্র মহড়া দিয়ে পুরো এলাকায় আতংক সৃষ্টি করে।’
‘নির্বাচনে জিতে হয়ে পড়েন আরও বেপরোয়া। নির্বাচনের পরের দিন বিরোধিতাকারী ও নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রাথীদের বাড়িতে হামলা করেন তারা। তখন হোসাইন, রহিম, দিদার ও আমার বাড়িতে হামলা করা হয়। মারধর করা হয় বেশ কয়েকজনকে। ওই সময় আমার বাড়িতে অন্তত ১৫ রাউন্ড গুলিবর্ষণ করে মিন্টুর নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা। পরবর্তীতে আমি আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগ নিলে মিন্টু আমার হাত ধরে ক্ষমা চান এবং মামলা না করার জন্য অনুনয় করেন। তাই সামাজিক শান্তি রক্ষায় আমিও সরল বিশ্বাসে তার কথা মেনে নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেইনি। এরপরও তারা বিভিন্ন সময় আমার ওপর হামলা করে।’— বলেন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মহিউদ্দিন।
তিনি বলেন, ‘সর্বশেষ গত শনিবার প্রায় ২ টায় আমাকে হত্যার উদ্দেশে বাড়িতে গুলিবর্ষণের মতো ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটান। এ ঘটনায় আমি নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি। ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।