জুমবাংলা ডেস্ক : আপনারা সবাই ঘরে থাকুন, আমরা বাইরে আছি। এ ভাইরাসকে নির্মূল না করা পর্যন্ত প্রকাশ্যে ত্রাণ নিতে সংকোচবোধ করেন মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ। তাদের জন্য জেলা প্রশাসকের ফেসবুক ম্যাসেঞ্জার ও মোবাইল ফোনে এসএমএস ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। এ মাধ্যমের তথ্য নিয়ে মোটরসাইকেল টিমের মাধ্যমে গোপনে তাদের বাড়িতে ত্রাণ পৌঁছে দেয়া হচ্ছে।
এসব জানিয়ে সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক এস.এম মোস্তফা কামাল বলেন, মানুষজনকে ঘরে রাখতে ও করোনা ক্লান্তি কাটাতে ফেসবুক লাইভে ও স্থানীয় ক্যাবল টিভির চ্যানেলের মাধ্যমে কবিতা আবৃত্তি ও সাংস্কৃতিক চর্চাসহ প্রতিদিন জেলার সার্বিক চিত্র জনগণের কাছে তুলে ধরা হচ্ছে। ঘরে থাকা স্কুল, কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য গ্রুপভিত্তিক উন্মুক্ত রচনা, কবিতা, গল্প লেখা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে।
উপজেলায় ফেসবুকভিত্তিক অনলাইন বাজার চালু করা হয়েছে। এর মাধ্যমে বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন প্রকার মাছ, নিত্যপণ্য সরবরাহ করা হচ্ছে। সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে জেলাব্যাপী ৮৪টি হাট-বাজার স্থানান্তর করা হয়েছে। সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে এসব সফল করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের প্রশাসন জনপ্রতিনিধিদের সাথে করণীয় নির্ধারনে দফায় দফায় বৈঠক করা হয়েছে। জনসচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ, মাইকিং করা হয়েছে। করোনা মোকাবিলায় শুরু থেকে কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়ায় এখনও পর্যন্ত সাতক্ষীরায় করোনা পজিটিভ রোগী শনাক্ত হয়নি।
করোনা মোকাবিলায় ত্রাণ বিতরণ ও তথ্য নিয়ে সাতক্ষীরায় একটি সফটওয়্যার চালু করা হয়েছে। যার মাধ্যমে জেলার বিভিন্ন স্থানে ত্রাণ বিতরণ সহজীকরণ, ত্রাণ ব্যবস্থাপনা মনিটরিং, জেলার সার্বিক করোনা পরিস্থিতি সহজেই জনগণ জানতে পারে।
জেলা প্রশাসনের কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, খাদ্য সহায়তা কর্মসূচির আওতায় ৪ লাখ ৩৬ হাজার ৮৫৬ জনকে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। জেলায় এ পর্যন্ত ১ হাজার ১০০ মেট্রিকটন চাল পাওয়া গেছে। যার মধ্যে ৮৭৫ মেট্রিকটন চাল বিতরণ হয়েছে। নগদ ৫০ লাখ ৫০ হাজার টাকা পাওয়া গেছে। বিতরণ করা হয়েছে ৩৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
সামাজিক দূরত্ব বজায় না রাখা, সরকারি আদেশ অমান্য করা, বিনা প্রয়োজনে ঘোরাঘুরি করায় ১ হাজার ৯৫৬ জন ব্যক্তি ও ৪৭টি প্রতিষ্ঠানকে ২০ লক্ষাধিক টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
বিদেশ বা দেশের বিভিন্নস্থান থেকে আগতদের বিষয়ে গৃহীত পদক্ষেপ উল্লেখ করে জেলা প্রশাসক এস.এম মোস্তফা কামাল বলেন, ১ মার্চ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত সারাবিশ্বের নানা দেশ থেকে প্রায় ১১ হাজার মানুষ সাতক্ষীরায় এসেছেন। তাদের বাড়িতে লাল পতাকা টানিয়ে হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করা হয়েছে। এছাড়া গত ১৪ দিনে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর মাদারীপুর, শরীয়তপুরসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে লকডাউনের মধ্যেও ১৫ হাজারের বেশি মানুষ সাতক্ষীরা জেলায় এসেছেন। তাদের প্রাতিষ্ঠানিক ও হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে ৩ হাজার ৯৬ জনকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন ও অন্যদের বাড়িতে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক জানান, পবিত্র রমজান মাসে রোজাদারদের সম্মান প্রথম রোজা থেকে শহরের ১৮টি পয়েন্টে ভ্রাম্যমাণ ইফতারি বাজার চালু করা হবে। যেখান থেকে রোজাদারগণ ইফতার সামগ্রী ক্রয় করতে পারবেন। এছাড়া জনসমাগম এড়াতে ‘নো প্রফিট-নো লস’ এই ধারণা নিয়ে জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধায়নে সকাল ৮টা থেকে চালু হয়েছে ট্রাকে চারটি ভ্রাম্যমাণ বাজার। রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে বিশেষ মনিটরিং টিম গঠন করা হয়েছে। যারা মাঠে থাকবে।
করোনা পরিস্থিতিতে মাঠে কাজ করছেন স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা। সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন ডা. মো.হুসাইন সাফায়াতের কাছে প্রশ্ন রাখা হয়েছিল সাতক্ষীরায় এখন পর্যন্ত কোনো করোনা রোগী শনাক্ত হয়নি এর নেপথ্যে কি?
উত্তরে সিভিল সার্জন ডা. মো. হুসাইন সাফায়াত জানান, প্রথম পর্যায়ে যারা বিদেশ থেকে এসেছিলেন আমরা তাদের কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করতে পেরেছি। এছাড়া গতকাল বৃৃহস্পতিবার পর্যন্ত জেলা থেকে ২৬৬ জনের নমুনা সংগ্রহ করে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট হাতে পাওয়া গেছে ৭৭টি। সবগুলো নেগেটিভ। বাকি রিপোর্টগুলোও নেগেটিভ আসার সম্ভাবনাই বেশি।সূত্র : জাগো নিউজ
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।