Close Menu
Bangla news
    Facebook X (Twitter) Instagram
    Bangla news
    • প্রচ্ছদ
    • জাতীয়
    • অর্থনীতি
    • আন্তর্জাতিক
    • রাজনীতি
    • বিনোদন
    • খেলাধুলা
    • শিক্ষা
    • আরও
      • লাইফস্টাইল
      • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
      • বিভাগীয় সংবাদ
      • স্বাস্থ্য
      • অন্যরকম খবর
      • অপরাধ-দুর্নীতি
      • পজিটিভ বাংলাদেশ
      • আইন-আদালত
      • ট্র্যাভেল
      • প্রশ্ন ও উত্তর
      • প্রবাসী খবর
      • আজকের রাশিফল
      • মুক্তমত/ফিচার/সাক্ষাৎকার
      • ইতিহাস
      • ক্যাম্পাস
      • ক্যারিয়ার ভাবনা
      • Jobs
      • লাইফ হ্যাকস
      • জমিজমা সংক্রান্ত
    • English
    Bangla news
    Home সাবরিনা মন্ত্রে আরিফের করোনাজাদু
    Coronavirus (করোনাভাইরাস)

    সাবরিনা মন্ত্রে আরিফের করোনাজাদু

    July 11, 20209 Mins Read

    সাবরিনা মন্ত্রে আরিফেডা. সাবরিনা এ চৌধুরী ওরফে ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরীকে প্রায়ই টেলিভিশন টকশোতে দেখা যেত স্বাস্থ্যবিষয়ক আলোচনায়। জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের এই কার্ডিয়াক সার্জন কথিত ‘স্বেচ্ছাসেবী’ সংগঠন জেকেজি হেলথ কেয়ার লিমিটেডের চেয়ারম্যান। জেকেজি হেলথ কেয়ারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আরিফুল হক চৌধুরী। ডা. সাবরিনা তার চতুর্থ স্ত্রী। আরিফের এক স্ত্রী থাকেন রাশিয়ায়, অন্য একজন লন্ডনে। আর আরেকজনের সঙ্গে তার ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে। তবে ছাড়াছাড়ির পরও ওই স্ত্রী আরিফের সঙ্গে সমঝোতার জন্য বিভিন্ন স্থানে ধরনা দিচ্ছেন। এদিকে করোনা সনদ জালিয়াতিসহ চার মামলায় গ্রেপ্তার আরিফুলসহ ছয়জন আছেন কারাগারে। পরে থানায় হামলার মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন জেকেজির ১৮ কর্মী। কিন্তু তার স্ত্রী সাবরিনা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে।

    তদন্ত ও তদন্ত তদারকি কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, করোনা মহামারীর শুরুর দিকে ডা. সাবরিনার তদবিরে জেকেজি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে করোনার নমুনা সংগ্রহের কাজ বাগিয়ে নেয়। এখান থেকে করোনা টেস্টের নামে ভুয়া সদন দেওয়া শুরু করেন আরিফুল। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ৪৪টি নমুনা সংগ্রহ বুথ বসিয়ে ও হটলাইন খুলে নমুনা সংগ্রহ করে কোনো পরীক্ষা না করেই প্রতিষ্ঠানটি কমপক্ষে ১৬ হাজার মানুষকে করোনা টেস্টের ভুয়া সনদ দিয়েছে। গুলশানে তাদের অফিসের ১৫ তলার কক্ষে বসেই এসব মনগড়া সনদ তৈরি করে হাজার হাজার মানুষের মেইলে পাঠানো হতো। বুথের বাইরে হটলাইনের মাধ্যমে ‘বিশ্বস্ত এজেন্ট’ দিয়ে বাসা বাড়িতে গিয়েও নমুনা সংগ্রহ করতেন জেকেজি কর্মীরা। গত ২৩ জুন করোনার মনগড়া সনদ দেওয়া, জালিয়াতি ও প্রতারণার অভিযোগে তেজগাঁও থানা পুলিশ আরিফুলসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করে। অভিযান তদারকি করেন তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার হারুন অর রশীদ। গ্রেপ্তারের পর থানা-হাজতে থাকা অবস্থায় আরিফুলের ক্যাডার বাহিনী ভাঙচুর ও হামলা করে থানায়। মারধর করে পুলিশকেও। এছাড়া রাজধানীর মহাখালীর তিতুমীর কলেজে নমুনা সংগ্রহের বুথ বসিয়ে সেখানে প্রশিক্ষণের নামে শুরু করেন নানা অনৈতিক কর্মকাণ্ড। কলেজের কক্ষে কক্ষে নারী-পুরুষের আপত্তিকর অবস্থানসহ নানা অনৈতিক কাজে বাধা দিলে তিতুমীর কলেজের শিক্ষক, কর্মচারী ও ছাত্রদের ওপরও হামলা করে আরিফুলের ক্যাডার বাহিনী। মূলত ওই মামলার অনুসন্ধান করতে গিয়েই বেরিয়ে আসে আরিফুলের নানা অপকর্মের কাহিনী। রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহেদের মতো বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নাম ভাঙিয়ে বিভিন্ন জনকে হুমকি দিতেন তিনি। এমনকি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নাম ব্যবহার করে স্বাস্থ্য অধিপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালককেও দেখে নেওয়ার হুমকি দেন আরিফুল।

    তার বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় প্রতারণা জালিয়াতি, সরকারি কাজে বাধা, পুলিশের ওপর হামলাসহ নানা অভিযোগে চারটি মামলা করেছে পুলিশ। তার একটি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তেজগাঁও থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কামাল উদ্দিন গতকাল বলেন, ‘গ্রেপ্তার আসামিরা জেলহাজতে আছে। আমি একটি মামলার তদন্ত করছি। তদন্তে যাদের সম্পৃক্ততা আসবে সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।’ তদন্ত প্রায় শেষ পর্যায়েও বলে জানান তিনি।

    তদন্ত তদারকি কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, প্রথমে তিতুমীর কলেজ মাঠে নমুনা সংগ্রহ বুথ স্থাপনের অনুমতি পায় জেকেজি। পরে প্রভাব খাটিয়ে ঢাকার বাসাবোসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে কমপক্ষে ৪৪টি বুথ বসিয়ে নমুনা সংগ্রহ করছিল তারা। স্বামী-স্ত্রী মিলে করোনা টেস্টের ভুয়া সনদ বিক্রি করতে থাকেন। প্রতিটি টেস্টের জন্য জনপ্রতি নেওয়া হয় সর্বনিম্ন পাঁচ হাজার টাকা আর বিদেশি নাগরিকদের কাছ থেকে জনপ্রতি নিতে থাকে ১০০ ডলার। করোনা টেস্ট কারবার করে জেকেজি হাতিয়ে নিয়েছে কমপক্ষে ৮ কোটি টাকা।

    জেকেজির কভিড-১৯ টেস্ট কেলেঙ্কারিতে আরিফসহ কয়েকজন গ্রেপ্তার হলেও তার চতুর্থ স্ত্রী ডা. সাবরিনা এখনো ধরা পড়েননি। তবে তিনি মাঝেমধ্যে অফিসে গিয়ে হাজিরা দেন বলে হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মীরা জানিয়েছেন। তারা আরও জানান, অজ্ঞাত স্থান থেকে ফোনে প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করে গ্রেপ্তার এড়িয়ে চলছেন সাবরিনা।

    ৫ প্রশ্নের জবাব মিললেই কভিড পজিটিভ : পুলিশের তদন্তে জানা গেছে, জেকেজি তাদের প্রতিষ্ঠান থেকে মোট ২৭ হাজার রোগীর করোনা পরীক্ষার সনদ দিয়েছে। এর মধ্যে আইইডিসিআরের মাধ্যমে ১১ হাজার ৫৪০ জনের করোনার নমুনার পরীক্ষা করা হয়েছিল। তাদের রিপোর্ট সঠিক বলে ধরে নিয়েছে পুলিশ। অপর ১৫ হাজার ৪৬০টি রিপোর্ট তারা গুলশানে নিজ কার্যালয়ে বসেই তৈরি করে, যার প্রমাণ তার অফিস থেকে জব্দ করা ল্যাপটপে পাওয়া গেছে। অফিসের ওই কক্ষটিতে ল্যাপটপ, একটি বিছানা আর টেবিল ছাড়া কোনো আসবাবপত্র ছিল না। জেকেজির ৭-৮ জন কর্মী দিনরাত ওই ল্যাপটপ দিয়ে ভুয়া এবং মনগড়া সনদ তৈরি করত। জেকেজির মাঠকর্মীরা ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, নরসিংদীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে ৪৪টি বুথের মাধ্যমে এবং বাড়ি বাড়ি গিয়ে সন্দেহভাজন করোনা রোগীর নমুনা সংগ্রহ করত। পরে ওইসব নমুনা ডাস্টবিনে ফেলে দিত। তারা সন্দেহভাজনদের ১০টি প্রশ্নমালা সংবলিত একটি ফরম পূরণ করাত। সেখানে লেখা থাকত কত দিন ধরে জ্বর, সম্প্রতি বাড়িতে কোনো অতিথি এসেছেন কি না, শরীর ব্যথা আছে কি না? ঠোঁট শুকিয়ে যাচ্ছে কি না? পাতলা পায়খানা হচ্ছে কি না? গলা ব্যথা আছে কি না? নাকে ঘ্রাণ পাচ্ছেন কি না ইত্যাদি। ‘হ্যাঁ’ অথবা ‘না’ সূচক প্রশ্নমালাগুলো তারা পূরণ করে নিয়ে আসত। এক্ষেত্রের আরিফ তার কর্মী বাহিনীকে শিখিয়ে দেন যে, ১০টি প্রশ্নের মধ্যে যার পাঁচটি বা তারও বেশি উপসর্গ রয়েছে তিনি ‘পজিটিভ’ সনদ পাবেন। যার ৫-এর কম তার সনদ হবে নেগেটিভ। সে অনুযায়ী গুলশানের কার্যালয়ে বসেই ওই প্রশ্নমালা অনুযায়ী মনগড়া নেগেটিভ-পজিটিভ করোনা সদন বানিয়ে সরকারি দপ্তরের প্যাড ব্যবহার করে মেইলে পাঠাত জেকেজি কর্মীরা। মোবাইলেও দিত খুদে বার্তা। আরিফ ও তার কয়েক সহযোগী গ্রেপ্তারের পর জেকেজির সঙ্গে করোনার নমুনা সংগ্রহের চুক্তি বাতিল করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

    কর্মীদের খুশি রাখতে ‘আনন্দ ট্রিপ’ : কভিড-১৯ এর এই ভুয়া সনদ দেওয়ার বিষয়টি জেকেজির প্রায় সব কর্মীই জানত। তারা যাতে বিষয়টি বাইরে প্রকাশ না করে সেজন্য বাড়তি অর্থ দেওয়ার পাশাপাশি কিছু ভিন্ন কৌশল হাতে নেন আরিফ-সাবরিনা দম্পতি। সপ্তাহে ছয় দিন কাজ করার পর এক দিন ‘আনন্দ ট্রিপ’ হিসেবে ঢাকার বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে একজন নারী ও একজন পুরুষ কর্মীকে থাকতে পাঠানো হতো। কর্মীদের কাছে সেটা ছিল ‘হানিমুন ট্রিপ’। এমনকি মহাখালীতে তিতুমীর কলেজের মাঠে জেকেজি যে বুথ স্থাপন করেছিল সেখানে প্রতি রাতে মদ সেবনের আসর বসত। জেকেজির কর্মীরা রাতভর সেখানে নাচানাচি করত। তারা নারী-পুরুষ জোড়ায় জোড়ায় কলেজের বিভিন্ন কক্ষে অবস্থান করত। তিতুমীর কলেজের নিরাপত্তাকর্মী মো. সানাউল্লাহ ও গাড়িচালক শাহাবুদ্দীন এসব তথ্য জানিয়েছেন। কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আশরাফ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘করোনা নমুনা সংগ্রহের বুথ বসানোর শুরুতেই নানা অপকর্মের বিষয়টি তাদের নজরে আসে। যেহেতু করোনা নমুনা সংগ্রহ করছে তাই তাদের কিছু বলা হয়নি। কিন্তু যখন অবস্থা সহ্যসীমার বাইরে চলে যায় তখন কলেজের শিক্ষক, ছাত্র ও কর্মচারীরা এসব অন্যায় ও অনৈতিক কাজের প্রতিবাদ করে। তারা আমাদের লোকজনের ওপর হামলা করে।’

    ‘বিদেশি মুরগি ১০০ ডলার’ : নমুনা সংগ্রহের জন্য জেকেজির বেশ কয়েকটি হটলাইন (মোবাইল নম্বর) ছিল। ওই নম্বরে কেউ ফোন করলে তাদের বাসায় গিয়ে মাঠকর্মীরা নমুনা সংগ্রহ করত। বাংলাদেশিদের কাছ থেকে করোনার টেস্টের জন্য জনপ্রতি সর্বনিম্ন ৫ হাজার টাকা নেওয়া হতো। আর কোনো বাসায় মাঠকর্মীদের যাতায়াত বাবদ নেওয়া হতো আরও এক হাজার টাকা। বিদেশি নাগরিকদের কাছ থেকে জনপ্রতি টেস্টের জন্য ১০০ ডলার নেওয়া হতো। প্রতিষ্ঠানটির কর্মীদের ভাষায় তারা ছিল ‘বিদেশি মুরগি’ বা ‘ফার্মের মুরগি’। তারা প্রায়ই বলাবলি করত ‘বিদেশি মুরগি ১০০ ডলার’। অথচ স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতির ভিত্তিতে বিনামূল্যে তাদের নমুনা সংগ্রহ করার কথা।

    জেকেজির সমন্বয়কের আলাদা জালিয়াতি : জেকেজির কর্মী ছিলেন তানজিনা পাটোয়ারী নামে এক নার্স ও তার স্বামী হুমায়ুন কবীর। পরীক্ষা ছাড়াই করোনার টেস্ট রিপোর্ট হাজার হাজার মানুষকে দিতে বাড়তি টাকা দাবি করেন তানজিনা। তিনি জেকেজির সব মাঠকর্মীর সমন্বয়কের দায়িত্বে ছিলেন। মাসে তার বেতন ছিল ৩০ হাজার টাকা। তবে এক পর্যায়ে তানজিনা বলেন, নমুনা সংগ্রহের পর যদি এ ধরনের মনগড়া সনদ দেওয়া হয় তাহলে তাকে বেতন বাড়িয়ে দিতে হবে। বেতন বাড়ানোর কথা বলার পরপরই জেকেজি থেকে তাকে ও তার স্বামী হুমায়ুন কবীরকে চাকরিচ্যুত করেন আরিফ চৌধুরী। চাকরি খোয়ানোর পর এই দম্পতি নিজেরাও আরিফের শেখানো ‘বিদ্যা’ কাজে লাগান। ফেইসবুকে পেইজ খুলে তারাও আশকোনার বাসায় বসেই তৈরি করতে থাকেন করোনার ভুয়া সনদ। তানজিনা বাসাবাড়িতে গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করতেন আর ঘরে বসে তার স্বামী ভুয়া সনদ তৈরি করতেন। এভাবে এই দম্পতিরও লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার তথ্য পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে আসে। তদন্তে আরও জানা গেছে, মাসখানেক করোনার নকল সনদের কারবার চালিয়ে নতুন গাড়ি (প্রাইভেটকার) কেনার পরিকল্পনা করেন হুমায়ুন কবীর। পুলিশের হাতে গ্রেপ্তারের পর করোনার জাল সনদ বাণিজ্যের কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন তানজিনা ও হুমায়ুন।

    ‘সাহেদের গুরু আরিফ’ : দেশে করোনার প্রকোপ শুরু হওয়ার পরপরই এলাকাভিত্তিক ফ্রি করোনার নমুনা সংগ্রহের দায়িত্ব পায় জেকেজি হেলথ কেয়ার। কর্মীদের প্রশিক্ষণ ও তার কর্মকাণ্ডের জন্য বেছে নেয় সরকারি তিতুমীর কলেজ। সেখানে আরিফ নিজেই প্রশিক্ষণ দিতেন। তদন্ত সংশ্লিষ্ট কেউ কেউ বলছেন, জেকেজির আরিফ আর রিজেন্ট হাসপাতালের মালিক মোহাম্মদ সাহেদ একে অপরের গুরু। আবার কেউ কেউ বলছেন, সাহেদের কাছ থেকেই করোনা সনদ জালিয়াতির শিক্ষা নিয়েছেন আরিফ। সাহেদের মতো আরিফেরও কয়েকটি ছদ্মনাম আছে। তার জাতীয় পরিচয়পত্রে নাম আরিফ মিয়া থাকলেও নিজেকে পরিচয় দিতেন আরিফ চৌধুরী নামে। আরিফ আবার মাদক কারবারেও জড়িত। নিজে নিয়মিত ইয়াবা সেবন ও বিক্রিতে সম্পৃক্ত। গ্রেপ্তারের পর তেজগাঁও থানায় আনা হলে ইয়াবার জন্য ছটফট করতে থাকেন তিনি। তার একটি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তেজগাঁও থানার এসআই দেওয়ান মো. সবুর দেশ রূপান্তরকে বলেন, রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের সময় পুলিশের সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেছেন আরিফ। তিনি পুলিশের কাছে ইয়াবা বড়ি চেয়েছেন, না পেয়ে এক পর্যায়ে থানার সিসি ক্যামেরা ও বাতি ভেঙে ফেলেন আরিফ। প্রতিষ্ঠানের কিছু কর্মী আরিফকে ছাড়িয়ে নিতে থানায় হামলা করে, যা থানার সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়ে। এই হামলার ঘটনায় আলাদা মামলা হয় আরিফ ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। পরে ফুটেজ দেখে ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, সাহেদের মতো আরিফ বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তির নাম ব্যবহার করে হুমকিধমকি দিতেন। এমনকি অভিযান পরিচালনাকারী পুলিশ কর্মকর্তাদেরও তিনি একাধিক মন্ত্রীর নাম বলে হুমকি দেন।

    তদন্ত কর্মকর্তারা জানান, গত ১৩ জুন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক নাসিমা সুলতানার কাছে ১৩ হাজার পিস পিপিইর চাহিদা নিয়ে যান জেকেজির আরিফ। কিন্তু প্রাতিষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত হয় ৭টি বুথের বিপরীতে ১৪টি পিপিই বরাদ্দ দেওয়া হবে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে নাসিমা সুলতানাকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দেন আরিফ।

    জেকেজি ছাড়ার দাবি ডা. সাবরিনার : ওভাল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও জেকেজির সিইও আরিফুল হক চৌধুরীর চতুর্থ স্ত্রী ডা. সাবরিনা চৌধুরী দাবি করেছেন, আদর্শের সঙ্গে না মেলায় আরিফ গ্রেপ্তার হওয়ার এক মাস আগে তিনি জেকেজি ছেড়ে চলে এসেছেন। বিষয়টি তিনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককেও জানিয়েছেন। এরপর আরিফ এক দিন তার হাসপাতালে (জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট) এসে ‘ঝামেলা করলে’ হাসপাতাল কর্র্তৃপক্ষ এবং তিনি নিজে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। এরপর থেকে তিনি তার বাবার বাসায় অবস্থান করছেন। পুলিশের তদন্ত বলছে, স্ত্রীর সঙ্গে হাসপাতালের এক চিকিৎসককে ‘অশালীন অবস্থায় দেখে’ আরিফ তাকে মারধর করেন। আরিফ গ্রেপ্তার হওয়ার পর জেকেজির পরীক্ষা ছাড়াই কভিড সনদ দেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে ডা. সাবরিনা সাংবাদিকদের বলেছেন, বিষয়টি তার জানা নেই। যে দুটি প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে বাসা থেকে গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করা হতো, সে দুটি প্ল্যাটফর্মের বিষয়েও তিনি কিছু জানেন না।

    তবে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আরিফের সব প্রভাব ও হুমকিধমকির পেছনে ছিল স্ত্রী ডা. সাবরিনা। হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের রেজিস্টার্ড চিকিৎসক হয়েও তিনি ছিলেন জেকেজি হেলথ কেয়ারের চেয়ারম্যান। স্বামীর প্রতিষ্ঠানকে কাজ পাইয়ে দিতে ‘নানা অনৈতিক উপায়’ অবলম্বনের অভিযোগও আছে তার বিরুদ্ধে। এতে নাম এসেছে বিএমএর এক নেতারও। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরসহ সরকারের অনেক উচ্চপদস্থদের সঙ্গে ‘ওঠাবসার’ ছবি দেখিয়ে সুবিধা নিতো এই দম্পতি। তবে জুনের শুরুতে মনোমালিন্যের পর দূরত্ব শুরু হয় দুজনের।

    আত্মগোপনে জেকেজির মাঠকর্মীরা : দেশের বিভিন্ন স্থানে ৪৪টি বুথ স্থাপন করে প্রতিদিন ৪০০ থেকে ৫০০ জনের নমুনা সংগ্রহ করত জেকেজি। শর্ত ছিল সরকার নির্ধারিত ল্যাবরেটরিতে নমুনা পাঠাতে হবে; কিন্তু জেকেজি সব শর্ত ভেঙে পরীক্ষা ছাড়াই করোনার ভুয়া টেস্ট রিপোর্ট সরবরাহের ফাঁদ পাতে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। নিজস্ব কর্মীবাহিনী ছাড়াও সিন্ডিকেটে যোগ করে দালালচক্র। আরিফ কয়েক সহযোগীসহ গ্রেপ্তার হওয়ার পর প্রতিষ্ঠানটির কর্মীবাহিনী গা-ঢাকা দিয়েছে। অনেক বুথের সামনে ঝুলছে অনিবার্য কারণবশত করোনা সমুনা সংগ্রহ বন্ধ রয়েছে।

    শিগগিরই চার্জশিট : তেজগাঁও জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার হারুন অর রশিদ বলেন, ‘জেকেজির সঙ্গে কারা কীভাবে জড়িত, তা তদন্তে উঠে আসছে। প্রতারণা করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে তারা। প্রতারণায় সম্পৃক্ততা আসায় ডা. সাবরিনাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আরও অনেক তথ্য বেরিয়ে আসবে। তার বিরুদ্ধে চার মামলায় চার্জশিট প্রস্তুতের কাজ চলছে।’ সূত্র: দেশরুপান্তর

    জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।
    Related Posts
    করোনা ভাইরাস

    করোনা ভাইরাস নিয়ে বড় দু:সংবাদ

    January 13, 2024
    বিএসএমএমইউ উপাচার্য

    করোনায় আক্রান্তদের ১২ শতাংশ ডিপ্রেশনে ভুগছেন: বিএসএমএমইউ উপাচার্য

    January 30, 2023
    বানর ছানা

    হাত বাড়াতেই কাছে চলে এলো, বানর ছানাটি অবুঝ শিশুর মত ফল খাচ্ছে

    August 24, 2022
    সর্বশেষ সংবাদ
    Redmi K80 Pro
    Redmi K80 Pro: Price in Bangladesh & India with Full Specifications
    Realme 12+ 5G
    Realme 12+ 5G: Price in Bangladesh & India with Full Specifications
    বাংলাদেশে সাশ্রয়ী মূল্যে আত্মপ্রকাশ করেছে অপো 'এ৫এক্স', ‘ডিউরাবিলিটি চ্যাম্পিয়ন’ স্মার্টফোন
    বাংলাদেশে সাশ্রয়ী মূল্যে আত্মপ্রকাশ করেছে অপো ‘এ৫এক্স’, ‘ডিউরাবিলিটি চ্যাম্পিয়ন’ স্মার্টফোন
    Zara Fashion Innovation
    Zara Fashion Innovation: Leading Global Fast-Fashion Trends
    ২১ আগস্ট: রায়ের বিরুদ্ধে
    ২১ আগস্ট: রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আপিল শুনানি শুরু
    Tecno Camon 30 Pro
    Tecno Camon 30 Pro: Price in Bangladesh & India with Full Specifications
    Lava Storm 5G
    Lava Storm 5G: Price in Bangladesh & India with Full Specifications
    iQOO Z9 5G
    iQOO Z9 5G: Price in Bangladesh & India with Full Specifications
    H&M Fashion Evolution
    H&M Fashion Evolution: Leading Sustainable Style Innovation
    কাকরাইল মোড়ে সকালেও
    কাকরাইল মোড়ে সকালেও বিক্ষোভ জগন্নাথ শিক্ষার্থীদের
    • About Us
    • Contact Us
    • Career
    • Advertise
    • DMCA
    • Privacy Policy
    © 2025 ZoomBangla News - Powered by ZoomBangla

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.