জুমবাংলা ডেস্ক : পাবনার বেড়া উপজেলার নাটিয়াবাড়ি এলাকায় সাবেক এক সংসদ সদস্যের ভাতিজার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গ্রাউন্ড ফ্লোরে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির কারখানার সন্ধান পেয়েছে পুলিশ।
পাবনা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আজিজুল হক আরজুর ভাতিজা আবু বকর ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও বাড়িটির মালিক বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
সোমবার (৮ মার্চ) বিকেলে এক অভিযানে আগ্নেয়াস্ত্র, অস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম ও বিপুল পরিমাণ ভেজাল ওষুধসহ ২ জনকে আটক করে পুলিশ।
স্থানীয় রাজনীতি ও পার্শ্ববর্তী নগরবাড়ী ঘাটে নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে আরজুর অনুসারী সন্ত্রাসীদের সরবরাহের জন্য এসব অস্ত্র তৈরি করা হচ্ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ। এমপির ভাতিজা ও বাড়ির মালিক আবু বকর পলাতক রয়েছেন।
পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম জানান, আমিনপুর থানায় নাটিয়াবাড়ী এলাকায় একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের গ্রাউন্ড ফ্লোরে পেশাদার অস্ত্র ব্যবসায়ীরা অস্ত্র তৈরির কারখানা স্থাপন করেছে-এমন গোপন সংবাদে সেখানে অভিযান চালায় গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল। এ সময় তাদের কাছ থেকে সম্পূর্ণ প্রস্তুত দুটি ওয়ান শুটার গান, একটি রিভলবার, অস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম ও বিপুল পরিমাণ অনুমোদনহীন ভেজাল ওষুধ উদ্ধার করা হয়।
আটকরা হলেন- বেড়া উপজেলার রাকসা ভারেঙ্গা এলাকার মৃত মোকসেদ আলীর ছেলে আব্দুল্লাহ আল মনসুর ওরফে মিঠু (৪৩) ও আমিনপুর থানার রাজনারায়ণপুর গ্রামের হানিফ কাজীর ছেলে আব্দুল্লাহ আল সিয়াম (১৯)।
নাটিয়াবাড়ি এলাকার আওয়ামী লীগ কর্মী শাহ আলম ব্যাপারী জানান, সাবেক এমপি আরজু খন্দকার দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় জামায়াত নেতা ইমান আলী মোল্লাকে সঙ্গে নিয়ে নগরবাড়ী ঘাটের দখল ও চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করে আসছেন। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও আওয়ামী লীগ নেতারাও বিব্রত। সাবেক এমপি আজিজুল হক আরজু তার দুই ভাতিজা আবু বকর ও আব্দুল মজিদ এবং ভাতিজার ছেলে মেহেদী হাসান শোভনকে দিয়ে পুরো এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, মাদক ব্যবসা ও নিয়ন্ত্রণ করেন বলে অভিযোগ শাহ আলমের।
তিনি বলেন, বিষয়টি এলাকায় ওপেন সিক্রেট হলেও ভয়ে কেউ বাধা দেওয়ার সাহস করে না। স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও জনপ্রতিনিধিরাও বিব্রত বোধ করেন।
তবে আধিপত্য বিস্তার ও সন্ত্রাসীদের প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পাবনা-২ আসনের সাবেক এমপি খন্দকার আজিজুল হক আরজু।
তিনি বলেন, এলাকায় আমার কোনো আত্মীয় স্বজন নেই। আমার নিজেরই কোনো আশ্রয়স্থল নেই, সেখানে সন্ত্রাসীদের প্রশ্রয় দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। আমি কখনোই চাঁদাবাজির সঙ্গে যুক্ত ছিলাম না, রাজনৈতিক হেয় প্রতিপন্ন করতেই অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
এদিকে ঘটনার পর অস্ত্র কারখানাটি পরিদর্শন করেন পাবনার পুলিশ সুপার মুহিবুল ইসলাম খান। তিনি জানান, আটকরা পেশাদার অস্ত্র ব্যবসায়ী। এরা বিভিন্ন সময় স্থানীয় সন্ত্রাসীদের চাহিদা অনুযায়ী অস্ত্র সরবরাহের পাশাপাশি নিজেরাও ভাড়াটে সন্ত্রাসী হিসেবে কাজ করে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে। তাদের আশ্রয় প্রশ্রয়দাতা কারা সে বিষয়ে জানতেও অনুসন্ধান শুরু করছে পুলিশ।
পুলিশ সুপার আরও জানান, আটকদের বিরুদ্ধে আমিনপুর থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। মঙ্গলবার (৯ মার্চ) তাদের আদালতে সোপর্দ করা হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।