জুমবাংলা ডেস্ক : গত ৩০ আগস্টের ঘটনা। সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনির ছেলের গাড়ি থামিয়ে টাকা আদায় করেন পুলিশের এক কনস্টেবল। এমন অভিযোগে ওই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীটি। বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সাবেক এমপি রনি এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে বিষয়টি জানান।
স্ট্যাটাসে রনি জানান, সকালে ঢাকার সার্কিট হাউজ রোডে ডিএমপি দক্ষিণ ট্রাফিক পুলিশের কার্যালয়ে রনি ও তার ছেলেকে নেওয়া হয়। এরপর তাদের সামনে বিভিন্ন টিমের সদস্যদের ডেকে সেই কনস্টেবলকে শনাক্ত করা হয়। সেখানেই তৎক্ষণাৎ ওই কনস্টেবলের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
ফেসবুক স্ট্যাটাসে ডিএমপি কমিশনারের প্রশংসা করে গোলাম মাওলা রনি লিখেছেন, ‘গত ১১ সেপ্টেম্বর সোমবার দুপুরে তিনি তার ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন। সেখানে উল্লেখ করেন- ট্রাফিক পুলিশের এক সিপাহী তার ছেলে রিয়াদের গাড়ি থামিয়ে তার কাছ থেকে এক হাজার টাকা ঘুষ আদায় করেছে। বিষয়টি ডিএমপি কমিশনারের নজরে আসে। এরপর তিনি সংশ্লিষ্ট বিভাগকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। যা পুরো ট্রাফিক বিভাগে নজিরবিহীন এক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে!
রনি আরও লিখেছেন, ঢাকা দক্ষিণ ট্রাফিকের ডিসি জয়নুল আবেদিন পুরো নিউমার্কেট এলাকায় দায়িত্বরত সাব ইন্সপেক্টর, সার্জেন্ট, সিপাহিকে ডেকে পাঠান এবং গতকাল মঙ্গলবার দীর্ঘসময় নিয়ে তাদের সঙ্গে প্রথমে মোটিভেশনাল প্যারেড করেন! তারপর অভিযুক্তকে শনাক্ত করার প্রাথমিক কাজগুলো করে আমাকে ফোন করে তার অফিসে চায়ের দাওয়াত দেন।
সাবেক এই সংসদ সদস্য আরও লিখেছেন, বুধবার সকাল ১১টায় আমি আমার ছেলেকে নিয়ে সার্কিট হাউজ সড়কে ঢাকা দক্ষিণ ট্রাফিক পুলিশের উপকমিশনারের কার্যালয়ে যাই। কুশল বিনিময়ের পর অভিযুক্ত ব্যক্তিকে শনাক্ত করার জন্য ১৫/১৬ জনের টিমকে আমাদের সামনে আনা হয়, যাদের মধ্যে থেকে আমার ছেলে একজনকে শনাক্ত করে। উপকমিশনার জয়নুল আবেদিন তার কর্মকর্তাদের নিয়ে এবার অভিযুক্ত ব্যক্তিকে জেরা করে ঘটনার সত্যতা পান এবং তৎক্ষণাৎ দৃষ্টান্তমূলক বিভাগীয় শাস্তি প্রদান করেন! আপনি যদি উল্লেখিত দৃশ্যটি নিজ চোখে দেখতেন তবে আমার বিশ্বাস ঢাকা মেট্রোপলিটান পুলিশের বর্তমান নেতৃত্ব সম্পর্কে আপনার ধারনা পাল্টে যেত!
পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন গোলাম মাওলা রনি। পুলিশের এমন তৎপরার জন্য ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুককে ধন্যবাদ জানান তিনি।
রমনা ট্রাফিকের ডিসি জয়নাল আবেদীন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা বিষয়টি জানতে পারি ১২ সেপ্টেম্বর। এরপর বিষয়টি খুঁজতে থাকি। বিভিন্ন টিমের সদস্যদের ডাকা হয়। এরপর তার কাছ থেকে আমরা বিষয়টি জানতে চাই। তিনি জানান, তার ছেলের কাছ থেকে গত ৩০ আগস্ট সায়েন্সল্যাব এলাকায় এ টাকা আদায় করা হয়েছে। কিন্তু এই সময়ে তিনি কোনো অভিযোগ করেননি। গত ১১ সেপ্টেম্বর ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন। এরপর আমাদের নজরে আসে বিষয়টি।’
জয়নাল আবেদীন আরও বলেন, ‘আজ রনি ও তার ছেলেকে আমার কার্যালয়ে আসতে বলা হয়েছিল। তিনি ও তার ছেলে এসেছিলেন। তার ছেলে সেই কনস্টেবলকে শনাক্ত করেছেন। আমরা অভিযুক্ত কনস্টেবলকে রমনা ডিসির কার্যালয়ে প্রত্যাহার করেছি। নিউ মার্কেট জোনের এডিসিকে বিষয়টি তদন্তের পর প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে অভিযুক্তের কাছ থেকে বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এরপর চূড়ান্ত প্রতিবেদন পেলে আরও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।