সাজ্জাদ বাসার, কুবি প্রতিনিধি: কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের মূল ফটকের সামনের রাস্তা দিয়ে একাধারে চলাচলকারী পিকনিক বাসের হর্ণ, মাইক-সাউন্ডবক্স আর পিকনিক স্পটের ডিজে গানের শব্দে অতিষ্ট হয়ে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ রাস্তায় প্রতিদিন অসংখ্য পর্যটকবাহী বাস চলাচল করলেও নেই কোনো সতর্কীকরণ সাইনবোর্ড কিংবা গতিরোধক। এতে করে দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা বৃদ্ধি পাচ্ছে ও বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক পরিবেশ বিঘ্নিত হচ্ছে বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।
ঐতিহাসিক ময়নামতি / শালবন বিহারের কাছেই অবস্থিত কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের উত্তর দিকে স্বপচূড়া পার্ক, ব্লু ওয়াটার পার্ক, কাশবন রিসোর্ট, দক্ষিণ দিকে ম্যাজিক প্যারাডাইজ পার্ক, ডাইনোসর পার্কসহ বিভিন্ন পার্ক-রিসোর্টে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ আসে। চারদিক থেকে এগুলো বিশ্ববিদ্যালয়কে ঘিরে রেখেছে৷
এসব পিকনিক স্পটে আসা বাসের নিরাপদ পার্কিংয়ে পরিণত হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। বিশ্ববিদ্যালয় পার্কিংয়ের জায়গা কিনা এ নিয়ে প্রশ্ন তুলছে শিক্ষার্থীরা।
শব্দদূষণে অতিষ্ট হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু হলের আবাসিক শিক্ষার্থী শাহাবুদ্দিন আহাম্মেদ বলেন, ‘শব্দদূষণ নিয়ে আইন থাকলেও এখানে কোনো আইন মানা হচ্ছে না। হলগুলোর পাশ দিয়েই গিয়েছে রাস্তা। রাস্তা দিয়ে সারাদিন পিকনিকের বাস যাওয়া-আসা করে, বিকট আওয়াজে হর্ণ বাজে, গান বাজে। সারাক্ষণ শুনতে হয় বাসের হর্ণ আর ডিজে গান, পড়বো কখন।’ এখানে এখন আর পড়াশোনার কোনো পরিবেশ নেই। আমরা এসবের আওয়াজে অতিষ্ট৷’
বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী সোহাগ মাহমুদ বলেন, ‘কোনো গতিরোধক না থাকায় বাসগুলো এতো দ্রুত গতিতে চলে যে রাস্তায় বেড় হলেই ভয় লাগে। আর পর্যটকেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চে খাওয়া-দাওয়া করছে, খাবারের প্যাকেট যেখানে সেখানে ফেলছে। ধূমপানমুক্ত ক্যাম্পাসে পর্যটকেরা এসে দেদারসে ধূমপান করছে। জুতো পায়ে সেলফি তোলার জন্য শহীদ মিনারে উঠছে।’
পিকনিক স্পটগুলোর উচ্চশব্দ ও বাসগুলোর হর্ণের শব্দের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এমরান কবির চৌধুরী বলেন, ‘পার্কগুলোর ব্যাপারে জেলা প্রশাসন দেখার কথা। এগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতার বাইরে। তবে আমরা জেলা প্রশাসনকে জানিয়েছি। আর সিটি কর্পোরেশন এর সাথে কথা বলে রাস্তায় গতিরোধকের ব্যবস্থা করবো।’
ক্যাম্পাসে গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যাপারে তিনি জানান, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে কেউ আসতে চাইলে অনুমতি দিতে হয়। আমরাও তো বিভিন্ন সময় বিভিন্ন স্থানে যাই। তবে পরিবেশ যেনো নষ্ট না হয় সে ব্যাপারে অবশ্যই আমাদের নজর থাকবে।’
উচ্চশব্দে গান বাজানোর ব্যাপারে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মো. আবুল ফজল মীর বলেন, ‘আমরা ব্যবস্থা নেবো। উচ্চশব্দে যেনো গান না বাজে সেজন্য আমরা মোবাইল কোর্ট পাঠাবো।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।