জুমবাংলা ডেস্ক : শিশু-কিশোর ও তরুণদের ধূমপানে নিরুৎসাহিত করতে আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে সিগারেটের নিম্ন ও মধ্যম স্তরকে একত্রিত করে প্রতি শলাকা সিগারেটের সর্বনিম্ন খুচরা মূল্য ৯ টাকা করার দাবি জানিয়েছে আহছানিয়া মিশন ইয়ুথ ফোরাম ফর হেলথ অ্যান্ড ওয়েলবিয়িং নামে একটি সংগঠন।
সংগঠনটি জানায়, দাবি অনুযায়ী দাম বাড়ালে তরুণেরা সিগারেট সেবনে নিরুৎসাহিত হবে। দীর্ঘ মেয়াদে প্রায় ৯ লাখ তরুণের তামাকজনিত অকাল মৃত্যু রোধ করা সম্ভব হবে এবং সরকারের বাড়তি রাজস্ব আদায় হবে ২০ হাজার কোটি টাকা, যা আগের বছরের তুলনায় ৪৩ শতাংশ বেশি।
আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানায় সংগঠনটি। আহছানিয়া মিশন ইয়ুথ ফোরাম ফর হেলথ অ্যান্ড ওয়েলবিয়িং-এর সমন্বয়ক মারজানা মুনতাহার সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংগঠনটির সদস্য তাসনিম হাসান আবির।
এ ছাড়াও বক্তব্য রাখেন—বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি রাশেদ রাব্বি, আহসানিয়া মিশনের তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের কো-অর্ডিনেটর শরিফুল ইসলাম প্রমুখ।
মূল প্রবন্ধে বলা হয়, নিম্ন এবং মধ্যম স্তরের সিগারেটের দাম কাছাকাছি হওয়ায় ভোক্তারা যে কোনো একটি স্তরের সিগারেট বেছে নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। সিগারেটের নিম্ন ও মধ্যম স্তরকে একত্রিত করে দাম বাড়ালে স্বল্প আয়ের জনগোষ্ঠী এবং তরুণ প্রজন্ম ধূমপানে নিরুৎসাহিত হবে। তাই ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়ে প্রতি ১০ শলাকার নিম্ন ও মধ্যম স্তরকে একত্রিত করে খুচরা মূল্য ৯০ টাকা, উচ্চ স্তরে খুচরা মূল্য ১৪০ টাকা, প্রিমিয়াম স্তরের খুচরা মূল্য ১৯০ টাকা নির্ধারণ এবং বিড়ির প্রতি শলাকার দাম অন্তত ১ টাকা করার দাবি জানাই।
তাসনিম হাসান আবির আরও বলেন, সুপারিশ অনুযায়ী তামাক পণ্যের বিদ্যমান কর কাঠামো সংস্কার করা গেলে-সিগারেটের ব্যবহার ১৫ দশমিক ১ শতাংশ থেকে হ্রাস পেয়ে ১৩ দশমিক ৩ শতাংশে নেমে আসবে। প্রায় ২৪ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক ধূমপান থেকে বিরত থাকবে এবং প্রায় ১৮ লাখ কিশোর-তরুণকে নতুন করে সিগারেট ব্যবহারে নিরুৎসাহিত হবে। এতে সরকারের বাড়তি রাজস্ব আয় হবে ২০ হাজার কোটি টাকা।
বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি রাশেদ রাব্বি বলেন, আগামী প্রজন্মকে তামাকের করাল গ্রাস থেকে রক্ষা করতে এবং নতুন তামাকসেবী সংখ্যা কমাতে হলে-কর ব্যবস্থাকে সহজ করে মূল্যস্ফীতি ও আয় বৃদ্ধির তুলনায় বেশি হারে তামাক পণ্যে করারোপ করতে হবে। বাংলাদেশে তামাকজাত দ্রব্যের কর বৃদ্ধির হার পার্শ্ববর্তী দেশেরগুলোর চাইতে তুলনামূলক অনেক কম। তাই তামাক কর বাড়াতে সক্ষম হলে দীর্ঘ মেয়াদে ১৭ লাখ ১৩ হাজার অকাল মৃত্যু রোধ করা সম্ভব হবে।
ঢাকা আহছানিয়া মিশনের তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের কো-অর্ডিনেটর শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশে আগামী বছরে যে রাজস্ব আয়, সেটি ৪৩ হাজার কোটির বেশি হতে পারে। তামাক ব্যবহারের হার ১৩ শতাংশে নেমে আসতে পারে। এর প্রভাবে দীর্ঘমেয়াদি রোগ ও অকাল মৃত্যুর হার কমাতে পারব। আমাদের ইয়ুথদের এই প্রস্তাবনা একটা চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করবে। আমরা আশা রাখছি তরুণদের এই প্রস্তাবনা আগামীর বাজেটে কার্যকর হবে।’
কর বাড়িয়ে তামাক নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না, সাংবাদিকদের এমন মন্তব্যের জবাবে সংগঠনের সমন্বয়ক মারজানা মুনতাহা বলেন, ‘আমাদের টার্গেট নতুন প্রজন্ম। যারা অ্যাডিক্টেড তাদের সবাইকে আমরা হয়তো ফেরাতে পারব না। কিন্তু আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাব। তবে নতুন প্রজন্ম এই ফল ভোগ করবে, যদি মূল্য বৃদ্ধি করা হয়। কারণ এখানে টাকার বিষয় জড়িত। আমাদের এখন মূল টার্গেট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে তামাকমুক্ত করা। আমরা প্রতিনিয়ত সোশ্যাল মিডিয়ায় এই বিষয়ে অ্যাডভোকেসি করে যাচ্ছি।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।