সিঙ্গাপুরে এক বাংলাদেশির নামে ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সন্ধান পাওয়া গেছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় এ অর্থের পরিমাণ ৮ হাজার কোটি টাকারও বেশি। আশ্চর্যের বিষয় হলো, এ বিপুল পরিমাণ অর্থের কোনো দাবিদার নেই। বাংলাদেশ ওই টাকার মালিকানা দাবি করেছে। সে টাকা ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
আলোচিত ব্যক্তির নাম-পরিচয় জানতে চাইলে দুদকের আইনজীবী তা প্রকাশ করতে রাজি হননি। অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান বলেন, ‘টিটি চুক্তি অনুযায়ী এখনই নাম প্রকাশ করা যাবে না। তবে গুঞ্জন রয়েছে, ‘কোনো একটি মামলায়’ এ অ্যাকাউন্টের মালিকের মৃত্যুদণ্ড হয়েছে। তার স্ত্রী-সন্তানও আছেন, কিন্তু তারাও এ টাকার মালিকানা দাবি করতে যাচ্ছেন না।
তিনি বলেন, সিঙ্গাপুর থেকে অর্থ ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া সহজসাধ্য নয়, যথেষ্ট সময়সাপেক্ষ তবে সম্ভব।
খুরশীদ আলম খানের এ বক্তব্যের পর তোলপাড় চলছে বিভিন্ন মহলে। কার এ অর্থ তা নিয়ে আলোচনা সর্বত্র। ধারণা করা হচ্ছে, যুদ্ধাপরাধ মামলায় ফাঁসি হওয়া সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী এ টাকার মালিক। অবশ্য এ ধারণার পক্ষে এখনো কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
খুরশীদ আলম খান বলেন, ‘সাধারণত কেউ মারা গেলে তার নমিনিরা ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থের মালিক হন। বাংলাদেশের মতো সিঙ্গাপুরের ব্যাংকগুলোরও একই নিয়ম। কিন্তু সিঙ্গাপুরের ওই অ্যাকাউন্টের কোনো নমিনি নেই। আবার এ টাকাগুলো তার স্ত্রী বা ছেলে কেউ নিজেদের বলে দাবিও করছেন না। হয়তো তাদের আইনজীবী পরামর্শ দিয়েছেন তোমরা যদি টাকাটা নিজেদের দাবি কর তাহলে দুদক তোমাদের নামে অভিযোগ দায়ের করবে। ফলে এখন কেউ দাবি না করায় টাকাটা আনা মুশকিল হয়েছে। তবে আমরা চেষ্টা করছি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের আইন, সিঙ্গাপুরের আইন ও মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স আইন খতিয়ে দেখছি কীভাবে টাকাটা আনা যায়। যদিও আমরা ইতিমধ্যে সিঙ্গাপুর সরকারকে বলেছি এ টাকাগুলো আমাদের দেশের। কিন্তু শুধু মুখে বললেই তো হবে না, তারা এর সপক্ষে কিছু কাগজপত্র চায়।’
দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান আরো বলেন, ‘বিদেশে অনেক টাকা পাচার হয়েছে, এটা সত্য। ব্যাংকক, ইংল্যান্ড, হংকং, কানাডা, সিঙ্গাপুরসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে টাকা পাচার হয়েছে। এ টাকা আনার জন্য মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্সের আওতায় দুর্নীতি দমন কমিশন, বাংলাদেশ ব্যাংক, ফিন্যানশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট কাজ করছে। এ টাকা আনা সময়ের ব্যাপার, আইনি প্রক্রিয়ার ব্যাপার। জাতির স্বার্থে এ টাকা ফেরত আনা হবে। আমরা অত্যন্ত আশাবাদী। কিছুটা সময় হয়তো লাগবে।’
তিনি বলেন, ‘অর্থ পাচার আইন, ২০১২-এ বলা আছে, আমার দেশের টাকা যদি অন্য কোনো দেশে থাকে তাহলে আমরা কোর্টে নিষেধাজ্ঞা চাইতে পারি। আদালত সন্তুষ্ট হলে নিষেধাজ্ঞা দিতে পারে। এ ক্ষেত্রে আরাফাত রহমান কোকো, তারেক রহমান, গিয়াসউদ্দিন আল মামুন, মোরশেদ খানসহ অনেকের টাকার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা আছে। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মাধ্যমে টাকা পাচার হয়েছে। সেগুলো ফেরত আসছে।’
এ প্রসঙ্গে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, ‘দেশের টাকা যদি অবৈধভাবে বিদেশে পাচার হয় অবশ্যই তা ফেরত আনতে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব। রাষ্ট্রের টাকা কোথাও যদি পাচার হয় তাহলে অবশ্যই আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নেব। রাষ্ট্র এবং জনগণের টাকা ফেরত আনা হবে। একই সঙ্গে এ টাকা পাচারে যুক্তদের খুঁজে বের করা হবে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।