জুমবাংলা ডেস্ক : দেশের খাদ্য চাহিদা পূরণ এবং সরকারি বিতরণ ব্যবস্থা সচল রাখতে সিঙ্গাপুর থেকে ৫০ হাজার টন নন-বাসমতি সিদ্ধ চাল আমদানির অনুমোদন দিয়েছে সরকার। প্রতি কেজি চালের দাম পড়বে ৫০ টাকা ৮১ পয়সা। আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে এই চাল আমদানিতে মোট ব্যয় হবে ২৫৪ কোটি ২ লাখ ৮৪ হাজার টাকা।
আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এ প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী চাল আমদানির জন্য খাদ্য অধিদপ্তর থেকে গত ১২ মার্চ আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করা হয়। এতে ১২টি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান দরপত্র দলিল সংগ্রহ করলেও পাঁচটি প্রতিষ্ঠান দরপত্র জমা দেয়।
এই দরদাতাদের মধ্যে সিঙ্গাপুরভিত্তিক মেসার্স অ্যাগ্রোকর্প ইন্টারন্যাশনাল প্রাইভেট লিমিটেড প্রতি টন চালের দাম ৪১৬ দশমিক ৪৪ ডলার উল্লেখ করে। দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি প্রতিষ্ঠানটিকে সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে সুপারিশ করে, যা উৎস দেশগুলোর গড় দর (৪৪৪ দশমিক ৯১ ডলার) থেকে ২৮ দশমিক ৪৭ ডলার কম।
মেসার্স অ্যাগ্রোকর্প ইন্টারন্যাশনাল প্রাইভেট লিমিটেডের প্রস্তাবিত দর বাংলাদেশের বন্দর পর্যন্ত প্রতি টন ৪১৬ দশমিক ৪৪ ডলার, যা বাজার দর যাচাই কমিটির প্রাক্কলিত দরের চেয়েও কম। ফলে দরটি গ্রহণের জন্য দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি সুপারিশ করে।
এই সুপারিশের ভিত্তিতে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে প্রস্তাবটি উপস্থাপন করা হয় এবং কমিটির সদস্যরা পর্যালোচনা শেষে অনুমোদন দেন।
প্রতি টন ৪১৬ দশমিক ৪৪ ডলার দরে ৫০ হাজার টন নন-বাসমতি সিদ্ধ চাল আমদানির জন্য প্রয়োজন হবে ২ কোটি ৮ লাখ ২২ হাজার ডলার। ২৭ মার্চ বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ডলারের বিনিময় হার অনুযায়ী (প্রতি ডলার ১২২ টাকা ধরে) মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ২৫৪ কোটি ২ লাখ ৮৪ হাজার টাকা। এতে প্রতি কেজির মূল্য দাঁড়ায় ৫০ টাকা ৮১ পয়সা।
সূত্র জানায়, মেসার্স অ্যাগ্রোকর্প ইন্টারন্যাশনাল প্রাইভেট লিমিটেডের কাছ থেকে চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দরের জন্য ৬০:৪০ অনুপাতে কস্ট ইনস্যুরেন্স ফ্রেইট-লাইনার আউট (সিআইএফ-এলও) শর্তে (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে শুল্ক ও ভ্যাট ব্যতীত) প্রতি টন ৪১৬ দশমিক ৪৪ ডলার দরে ২ কোটি ৮ লাখ ২২ হাজার ডলারে ৫০ হাজার টন (৫ শতাংশ) নন-বাসমতি সিদ্ধ চাল কেনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজনে ও জনস্বার্থে আন্তর্জাতিক উৎস থেকে ৯ লাখ টন চাল আমদানির জন্য ‘অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি’র অনুমোদন নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ৪ লাখ ৫০ হাজার টন নন-বাসমতি সিদ্ধ চাল এবং জি-টু-জি পদ্ধতিতে মিয়ানমার থেকে ১ লাখ টন, পাকিস্তান থেকে ৫০ হাজার টন ও ভিয়েতনাম থেকে ১ লাখ টন আতপ চালসহ মোট ৭ লাখ টন চাল আমদানির চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে।
এ ছাড়া আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ৫০ হাজার টন চাল আমদানির লক্ষ্যে চুক্তির কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এসব চুক্তির বিপরীতে আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ৩ লাখ ৩৯ হাজার ৮০৬ টন এবং জি-টু-জি ভিত্তিতে ২ লাখ ২৯ হাজার ৫০০ টন চাল ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দরে পৌঁছেছে। এর মধ্যে আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ২ লাখ ৪৩ হাজার ১৭৫ টন এবং জি-টু-জি ভিত্তিতে ২ লাখ ৭ হাজার ৫৩৯ টন চাল সরকারি সংরক্ষণাগারে পাওয়া গেছে। পাশাপাশি, আরও চাল আমদানির কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।