আন্তর্জাতিক ডেস্ক : করোনার কারনে সিঙ্গাপুরে কাজ হারিয়ে দেশে ফিরছে আরও ৩ দেশ থেকে ৫ শতাধিক কর্মী। গত রাতে সিঙ্গাপুর থেকে একটি বিশেষ ফ্লাইট যোগে চাকরি হারিয়ে শতাধিক প্রবাসী কর্মী দেশে ফিরেছেন। শুধু তাই নয় সেই ফ্লাইটে দেশে ফিরেছে করোনায় আটকে পড়া আরও দেড় শতাধিক বাংলাদেশি প্রবাসী। দেশটিতে প্রায় দু’লাখ বাংলাদেশি কঠোর পরিশ্রম করে প্রতি মাসে প্রচুর রেমিট্যান্স দেশে পাঠাচ্ছে।
দেশটির কিছু কিছু প্রজেক্টে কাজ না থাকায় কেউ কেউ চাকরি হারানোর ঝুঁকিতে রয়েছে। সিঙ্গাপুর থেকে নির্ভরযোগ্য সূত্র এতথ্য জানিয়েছে। এছাড়া, আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় কাতারের দোহা থেকে বিমানের একটি বিশেষ ফ্লাইট যোগে ৪০৭ জন প্রবাসী কর্মী চাকরি হারিয়ে খালি হাতে দেশে ফিরেছেন। এছাড়া, আজ দুবাই থেকে আরো একটি ফ্লাইট যোগে বাংলাদেশি প্রবাসী কর্মীর দেশে ফেরার কথা।
গত বুধবার গভীর রাতে মালয়েশিয়া থেকে একটি বিশেষ ফ্লাইট (এম এস-১৯৬) যোগে ১৭ জন রেমিট্যান্স যোদ্ধার লাশ দেশে পৌঁছেছে। বিমান বন্দরে এসব লাশের কফিন দেখে অপেক্ষমান আত্মীয় স্বজনরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। মালয়েশিয়ার বিভিন্ন হাসপাতালে দীর্ঘ দিন যাবত আরো বেশ কিছু প্রবাসী কর্মীর লাশ পড়ে রয়েছে।
মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের চরম উদাসীনতার দরুণ এসব প্রবাসীর লাশ দেশে আনতে অহেতুক বিলম্ব হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠছে। হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের নির্ভরযোগ্য সূত্র এতথ্য জানিয়েছে। এদিকে, সিঙ্গাপুর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, এ যাবত দেশটিতে মোট ৩৮ হাজার ৯৬৫ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে।
গত ২৪ ঘন্টায় ৪৫১ জন আক্রান্ত হয়েছে। গতকাল পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে মা’রা গেছে ২৫ জন। আইসোলেশনে রয়েছে ১২ হাজার ১৮৫ জন। করোনায় আক্রান্ত ২৬ হাজার ৫৩২ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে। আক্রান্তদের বেশির ভাগই অভিবাসী কর্মী।
দেশটির ডরমিটরিগুলোতে গাদাগাদি করে বসবাস করায় অভিবাসী কর্মীরাই আক্রান্তের শিকার হচ্ছে। আজ বৃহস্পতিবার সিঙ্গাপুরের অভিবাসী কর্মীদের ডরমিটরি থেকে মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগরের তন্তর গ্রামের প্রবাসী কর্মী আমিনুল ইসলাম তুহিন জানান, প্রাণঘাতী করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ায় গত ৭ এপ্রিল দেশটিতে লকডাউন শুরু হয়। উদ্ভূত পরিস্থিতি উন্নতি হতে শুরু করায় দেশটির সরকার গত ১ জুন থেকে লকডাউট প্রত্যাহার করে।
প্রবাসী তুহিন বলেন, দেশটির ৪০টি ডরমিটরির অভিবাসী কর্মীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা সম্পন্ন করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। যারা ভাইরাসমুক্ত তাদেরকে পর্যায়ক্রমের কাজে যোগদানের উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। যেসব প্রজেক্টের কাজ নেই সেসব কোম্পানীর কর্মীরা চাকরি হারানোর ঝুঁকিতে রয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। সিঙ্গাপুর সরকার লাখ লাখ অভিবাসী কর্মীদের তিন বেলাই ডরমিটরিতে পর্যাপ্ত খাবার সরবরাহ করছে।
খাবারের সাথে বিভিন্ন ফল, পানীয় এবং জীবাণুনশক দ্রব্যাদি স্যানেটাইজারও দেয়া হচ্ছে। বিএমইটির সূত্র জানায়, ১৯৭৮ সাল থেকে গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দেশটিতে ৭ লাখ ৮৮ হাজার ৭৭৯ জন বাংলাদেশি কর্মী চাকরি লাভ করেছে। অন্যান্য দেশের তুলনায় দেশটিতে কঠোর পরিশ্রম করে প্রবাসীরা প্রচুর অর্থ আয় করেন। গত জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে দেশটি থেকে প্রবাসী কর্মীরা ৭৯ দশমিন ৯৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।