স্পোর্টস ডেস্ক : স্পোর্টস ডেস্ক: সিরিজ জয়ের পথে বাংলাদেশ। লক্ষ্যটা অল্প। ১০৯ রান করতে পারলেই সিরিজটা হয়ে যাবে বাংলাদেশের।
এমন ম্যাচে ব্যাটিংয়ে একটা পরীক্ষাই চালালো টাইগাররা। ইনিংস উদ্বোধনে অধিনায়ক তামিম ইকবালের সঙ্গে এলেন নাজমুল হোসেন শান্ত।
এতদিন এই জায়গায় দেখা যেত লিটন দাসকে। ইনিংস উদ্বোধনে এসে খারাপ শুরু করেননি শান্তও।
পাওয়ার প্লের ১০ ওভারে কোনো উইকেট হারায়নি বাংলাদেশ। তামিম ইকবাল ও নাজমুল হোসেন শান্ত যোগ করেছেন ৪৫ রান। ৩৪ বলে ১৭ রান করে তামিম ও ৩৩ বলে ১৯ রান করে অপরাজিত থাকেন শান্ত।
কিন্তু পাওয়ার প্লের পর বেশিক্ষণ নিজের ইনিংসকে টেনে নিয়ে যেতে পারেননি শান্ত। গুদাকেশ মোতির বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে আকিল হোসেনের হাতে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। ৩৬ বলে করেন ২০ রান।
ব্যাটিংয়ে নেমে বাংলাদেশের বোলারদের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটাররা। নাসুম-মিরাজদের তোপে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়েছে তাদের ব্যাটিং অর্ডার।
বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডেতে এর আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সর্বনিম্ন সংগ্রহ ছিল ৬১ রান। ২০১১ সালে চট্টগ্রামে এমন রেকর্ড গড়েছিল তারা। এবার দ্বিতীয় সর্বনিম্ন রানের লজ্জা গড়ল ক্যারিবীয়রা। এদিকে, এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ নিশ্চিত করতে হলে বাংলাদেশকে করতে হবে ১০৯ রান।
প্রথম ওয়ানডেতেও বাংলাদেশের বোলারদের তোপে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়েছিল স্বাগতিকরা। দ্বিতীয় ম্যাচেও একই চিত্র। মিরাজের চার এবং নাসুম নিলেন তিনটি উইকেট। এ ছাড়া শরিফুল ও মোসাদ্দেক নিয়েছেন একটি করে উইকেট। বাকি একটি রানআউট।
স্বাগতিকদের উদ্বোধনী জুটি ভেঙেছিলেন তাসকিনের পরিবর্তে দলে সুযোগ পাওয়া মোসাদ্দেক সৈকত। ইনিংসের এগারোতম ওভারে দলীয় ২৭ রানের মাথায় ভাঙে স্বাগতিকদের উদ্বোধনী জুটি। ৩৬ বলে ১৭ রান করে সাজঘরে ফেরেন কাইল মেয়ার্স। এরপর মাত্র ১৪ বলের ব্যবধানে তিন তিনটি উইকেট শিকার করেন নাসুম আহমেদ।
শামারাহ ব্রুকসকে বোল্ড করে ওয়ানডে ক্রিকেটে নিজের প্রথম উইকেটের দেখা পেয়েছিলেন নাসুম। এরপর একে একে ফিরিয়েছেন শাই হোপ এবং নিকোলাস পুরানকে। ক্যারিবীয় টপ অর্ডারে রীতিমতো ধস নামিয়েছেন বাংলাদেশের এই স্পিনার।
নাসুমের বল মিস করেছিলেন শামারাহ ব্রুকস। বলও খুঁজে পায় কাঙ্ক্ষিত গন্তব্য- স্টাম্প। সরাসরি বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরার আগে ক্যারিবীয় এ ব্যাটার করেছেন ১৩ বলে ৫ রান করে। ব্রুকসের পর শাই হোপকে ফেরান নাসুম। বেশ কয়েকবার জীবন পাওয়া হোপ স্লগ সুইপ করতে গিয়ে শর্ট মিডউইকেটে মোসাদ্দেকের বিশ্বস্ত হাতে ধরা পড়েন।
নাসুমের তৃতীয় শিকার উইন্ডিজ অধিনায়ক নিকোলাস পুরান। রিভার্স সুইপ করতে গিয়েছিলেন পুরান। তবে বলটি গিয়ে স্টাম্পে আঘাত হানে। নাসুমের পর উইকেটের দেখা পেয়েছেন পেসার শরিফুল এবং আগের ম্যাচের নায়ক মিরাজও।
শরিফুল ফিরিয়েছেন বিধ্বংসী ব্যাটসম্যান রভম্যান পাওয়েলকে। ১৯ বলে ১৩ রান করে মাহমুদউল্লাহর হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন এই ব্যাটার। শরিফুলের পরের ওভারেই জোড়া সাফল্য। ব্রেন্ডন কিংকে মাঠের বাইরে পাঠান মিরাজ। ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে এসে খেলতে গিয়েছিলেন কিং। মিস করে গিয়ে হলেন বোল্ড। ৪৪ বল খেলে ১৩ রান করে ফিরলেন তিনি। পরের বলেই রানআউটের ফাঁদে পড়েন আকিল হোসাইন। পরের বলেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ হারিয়েছে আরেকটি উইকেট। ধস নামলে একটি রানআউট থাকবে, অলিখিত এ রীতি মেনে ফিরে গেলেন আকিল হোসেন। ৭২ রানে সপ্তম উইকেটট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
এর আগে প্রথম ওয়ানডের নায়ক মেহেদী হাসান মিরাজের দ্বিতীয় ম্যাচের শুরুটাও হতে পারতো স্বপ্নের মতো। উইকেট পেতে পারতেন ব্যক্তিগত প্রথম ওভারের দ্বিতীয় বলেই। ক্রিজ থেকে বেরিয়ে এসে মারতে গিয়ে বল মিস করেছিলেন হোপ। সোহানের নিশ্চিত সুযোগ ছিল বলটা গ্লাভসে নিয়ে স্টাম্পিংয়ের। তবে গ্লাভসবন্দি করতে পারেননি। বল ছাড়াই ভেঙেছেন স্টাম্প, ফলে হয়নি স্টাম্পিংও।
পরে আল্ট্রা-এজে দেখা গেছে, বল লেগেছিল হোপের ব্যাটের কানায়। সোহান ক্যাচটা তালুবন্দি করতে পারলে হোপ হতে পারতেন কট-বিহাইন্ড। ১ বলে দুইটি আউটের সুযোগই হারান টাইগার উইকেটকিপার, জীবন পান হোপ।
দ্বিতীয় ওয়ানডে ম্যাচে বাংলাদেশ দলে এক পরিবর্তন এসেছে। বাদ পড়েছেন পেসার তাসকিন আহমেদ। তার জায়গায় নেওয়া হয়েছে স্পিন অলরাউন্ডার মোসাদ্দেককে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ জেইডেন সিলস ও অ্যান্ডারসন ফিলিপসের জায়গায় দলে নিয়েছে কেমো পল ও আলজারি জোসেপকে।
বাংলাদেশ একাদশ: তামিম ইকবাল, লিটন দাস, নাজমুল শান্ত, মাহমুদউল্লাহ, আফিফ হোসাইন, নুরুল হাসান, মোসাদ্দেক হোসেন, মেহেদি মিরাজ, নাসুম আহমেদ, শরিফুল ইসলাম, মুস্তাফিজুর রহমান।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ একাদশ: কাইল মেয়ার্স, শেই হোপ, সামারাহ ব্রুক, ব্রেন্ডন কিং, নিকোলস পুরান, রোভম্যান পাওয়েল, কেমো পল, রোমারিও শেইফার্ড, আকিল হোসাইন, গুডাকেশ মতি, আলজারি জোসেপ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।