আন্তর্জাতিক ডেস্ক: সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ আকস্মিক তেহরান সফরে এসে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী এবং প্রেসিডেন্ট সাইয়্যেদ ইব্রাহিম রাইসির সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন। খবর পার্সটুডে’র।
আরব দেশগুলোর মধ্যে একমাত্র সিরিয়ার সঙ্গে ইরানের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রয়েছে। পশ্চিম এশিয়ায় ইসরাইল বিরোধী প্রতিরোধমূলক অবস্থানে সিরিয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি দেশ এবং তাদের পররাষ্ট্র নীতিতে প্রতিরোধমূলক নীতি অগ্রাধিকার পাচ্ছে। এ কারণে পাশ্চাত্য ও ইসরাইলের সাথে আপোষকামী আরব দেশগুলোর পক্ষ থেকে প্রচণ্ড চাপ ও ষড়যন্ত্র সহ্য করতে হয়েছে সিরিয়াকে। সিরিয়ার ওপর সর্বোচ্চ চাপ সৃষ্টি করা হয়েছিল ২০১১ সালে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোকে লেলিয়ে দিয়ে। এসব সন্ত্রাসীদের প্রতি পাশ্চাত্য ও তাদের অনুগত কয়েকটি আরব দেশের সর্বাত্মক সমর্থন ও সহযোগিতা ছিল। সন্ত্রাসীদের গণহত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞের মুখে সিরিয়া সরকার যখন পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল এবং তাদের নির্মূলের চেষ্টা করছিল তখন ইরান পরামর্শ ও সামরিক সহায়তা নিয়ে এগিয়ে আসে। ইরান ছাড়াও এ অঞ্চলের অন্যান্য প্রতিরোধ সংগঠনও সিরিয়াকে রক্ষার জন্য সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
এতে কোনো সন্দেহ নেই যে সিরিয়ায় সন্ত্রাসীদের পরাজয়ের পেছনে ইরান এবং অন্য প্রতিরোধকামী গোষ্ঠীর ভূমিকা ছিল। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে দেয়া সাক্ষাতে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে শহীদ জেনারেল কাসেম সোলাইমানির অবদানের কথা উল্লেখ করেন। এ সাক্ষাতে দুই নেতাই দ্বিপক্ষীয় কৌশলগত সম্পর্ক বজায় থাকার কথা উল্লেখ করে অর্থনৈতিকসহ অন্যান্য সব ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতা জোরদারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
সিরিয়া থেকে সন্ত্রাসীরা নির্মূল হওয়ার পর এখন অনেক দেশ সিরিয়ার সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদারে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। যেহেতু সিরিয়ায় সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইরানের বিরাট অবদান ছিল সেকারণে সিরিয়ার নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা ইরানের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং বর্তমান অবস্থায় সিরিয়ার পুনর্গঠনে ইরান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
প্রকৃতপক্ষে, ইরানের সাথে সম্পর্ক বিস্তারে দুদেশের আগ্রহ বিশেষ করে প্রেসিডেন্ট আসাদ এ বিষয়ে বিশেষ গুরুত্বারোপ করায় শত্রুদের কিছু প্রচারণা মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। কেননা প্রেসিডেন্ট আসাদ সম্প্রতি সংযুক্ত আরব আমিরাত সফর করলে এ প্রচারণা চালানো হয় যে তিনি ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক কমিয়ে আরব দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক বিস্তারে আগ্রহী। অথচ বাস্তবতা হচ্ছে ইরানের সঙ্গে সিরিয়ার সর্বোচ্চ সম্পর্ক বজায় রয়েছে।
আরেকটি বিষয় হচ্ছে, যুদ্ধ পরবর্তী সিরিয়ার বর্তমান অবস্থা গত এক দশক আগের অবস্থা থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। যুদ্ধে দেশটির বহু অবকাঠামো ধ্বংস হয়েছে এবং অর্থনীতির বিরাট ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু তারপরও ইরানের সর্বোচ্চ নেতা যেমনটি বলেছেন, সিরিয়া এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি সম্মানীয় দেশে পরিণত হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।