জুমবাংলা ডেস্ক : সীমান্ত এলাকায় দিন-রাত হাজার হাজার বস্তা ভারতীয় চিনি বাইসাইকেল-মোটরবাইকে পারাপারকালে ধরা পড়ে মাত্র কয়েকশ বস্তা। তবে হঠাৎ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পিকআপ ভ্যানে বড় চালান ধরা পড়েছে।
সীমান্তের চোরাইপথে আনা ভারতীয় চিনিতে সয়লাব দুই উপজেলায় দুর্গাপুর ও কলমাকান্দা। দিন দিন শক্তিশালী হচ্ছে চোরাকারবারিদের নতুন রুট। ফলে দেশীয় চিনির ধস নেমেছে সীমান্তবর্তী এলাকার স্থানীয় বাজারগুলোতে। একদিকে বিভিন্ন স্পটে টহল দিচ্ছে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি), পুলিশ টহল দিচ্ছে স্থানীয় বাজার আর সড়কের মেইন পয়েন্টগুলোতে। কিন্তু চোরাইপথে আসা চিনির চালান ধরা পড়ে কম।
সচেতন মহলের প্রশ্ন, সীমান্ত বা সড়কে কী কাজ করছে দায়িত্বরত বিভিন্ন বাহিনী? এলাকাবাসীর মতে, চোরাকারবারিদের সাথে সখ্য, নয়তো ভাগবাটোয়ারা। যদি তাই না হয়, তাহলে চিনিসহ চোরাই পণ্য সীমান্ত পাড়ি দিয়ে কলমাকান্দা ও দুর্গাপুর উপজেলার অভ্যন্তরে ভারতীয় পণ্যে বাজার সয়লাব হতো না।
স্থানীয়দের দাবি, আগের তুলনায় আরও দ্বিগুণ গতিতে চোরাকারবারিরা দুর্গাপুরের ভরতপুরের গাজীকোণা, বারোমারির লক্ষ্মীপুর, বিজয়পুরের চণ্ডীগড়ের ফেচিয়া আর কলমাকান্দার লেংগুরা ইউনিয়নের কাঁঠালবাড়ি, জগন্নাথপুর, চেংগ্নী, সাত শহীদের মাজার, কালাপানি, তকলেটবাড়ি; খারনৈ ইউনিয়নের বৌ-বাজার, বলমাঠ, কচুগড়া, রংছাতি ইউনিয়নের পাতলাবন, পাঁচগাঁও, সন্ন্যাসীপাড়া, বেতগড়া, জাকিরপাড়া, নক্লাই, রামনাথপুরসহ বিভিন্ন সীমান্ত পথ দিয়ে প্রতি মাসে কোটি কোটি টাকার চিনিসহ বিভিন্ন পণ্য আনা হচ্ছে।
এদিকে, সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিন দিন-রাত চোরাইকারবারিরা চিনি নিয়ে আসে দুর্গাপুর ও কলমাকান্দা বাজারে। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে এসব চিনি কেনেন স্থানীয় কতিপয় পাইকারি ব্যবসায়ীরা। পরবর্তীতে তারা গুদামে হাজার হাজার বস্তা চিনি মজুত করার পর এগুলো ছোট ট্রাক, পিকআপ ভ্যান ভর্তি করে বিভিন্ন জেলায় বাজারজাত করে।
একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, সীমান্তে ওপেন সিক্রেট চিনিসহ নানা পণ্যের ব্যবসা। তাই চোরাই চিনির পথ বন্ধের ক্ষমতা নেই কারও। নেপথ্যে নিরবচ্ছিন্ন ম্যানেজ সিন্ডিকেট। সেই সিন্ডিকেটের দাপটে ভাগবাটোয়ারায় নীরব সংশ্লিষ্টরা। রাজনৈতিক দলের নেতারা চিনিকাণ্ডে প্রকাশ্যে দৃশ্যপটে থাকলেও তাদের মাথার ওপর রয়েছে প্রশাসন। এমনকি কতিপয় কার্ডধারী সাংবাদিক সোর্স হিসেবে চোরাকারবারিদের সহায়তা দিয়ে কাজ করছে। তাদের দিতে হয় নির্দিষ্ট পরিমাণ মাসোহারা।
যদিও চোরাকারবারি চক্রের হোতাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি বলে জানান দুই উপজেলার সচেতন মহল। গত বছর চোরাকারবারিদের চিনির গাড়ি পিছন নিলে এক ফটো সাংবাদিক নিহত হন।
সীমান্তবর্তী দুই উপজেলাতে বিজিবি ক্যাম্প থাকার পরও ভারতীয় চিনিসহ বিভিন্ন পণ্য দেদার আসছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিজিবি এক কর্মকর্তা জানান, জনবল সংকটের কারণে সীমান্ত টহল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
কলমাকান্দা থানার ওসি মোহাম্মদ লুৎফুল হক জানান, প্রতি মাসে চোরাইপথে মালামাল জব্দ করা এবং মামলা রুজু করা হচ্ছে।
নেত্রকোনা পুলিশ সুপার মোঃ ফয়েজ আহমেদের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি মোবাইল রিসিভ করেননি।
নেত্রকোনা ৩১ বিজিবি’র অধিনায়ক লে. কর্নেল আরিফুর রহমান জানান, গত বছর চোরাইপথে আসা ৪৫ কোটি অবৈধ মালামাল জব্দ করা হয়েছে। যা বাংলাদেশের দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে নেত্রকোনা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।