জুমবাংলা ডেস্ক: ঈদের মাত্র কয়েকদিন আগে, গত বুধবার (২০শে মে) বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের উপকূলে আঘাত করে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় আম্পান। সেই ঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়ে বাংলাদেশের সাতক্ষীরা সহ দক্ষিণাঞ্চলীয় বেশ কয়েকটি জেলা।
সাতক্ষীরার উপকূলবর্তী একটি গ্রামের বাসিন্দা হামিদা বেগম বলছেন, ”আমার ঘর-দরজা সব পড়ে গেছে। এখন এই ঈদিরও মুখ! (ঈদের সময়)। আমার বাচ্চাকাচ্চার বস্ত্র নেই। কী করি আমি চালামু, আমার দরোজা পড়ি গেছে। আমার ঘর বানবার মুনেষ্যে (পুরুষ) নেই। কী করবো আমি?”
এক বেলা খাবার জোগাড় করাই তার জন্যে এখন কঠিন হয়ে উঠেছে। এদিক সেদিক থেকে কুড়িয়ে আনা শাকসবজি রান্না করে কোনরকম খাওয়া চলছে।
আরেকজন গ্রামবাসী নার্গিস পারভীনের মুরগির খামার এখন ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে।
তিনি বলছেন, ”ঝড়ে গাছ পড়ে ১৬০০টি মুরগি মারা গেছে। এই খামারই আমাদের ইনকাম ছিল। এই ছাড়া ইনকামের কোননো সোর্স নেই। মাঠে কোন জমি-জাগা নেই। এখন ছয়-সাতটা লোক সংসারে। কোন ঈদ বলে আমাদের কিছু নেই।”
এদিকে ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে বেড়িবাঁধ ভেঙে খুলনার কয়রায় চারিদিকে শুধু পানি আর পানি। ডুবে গেছে দিগন্ত জোড়া ফসলের মাঠ, সবজি ক্ষেত। এক চিলতে শুকনো জায়গা নেই যেন কোথাও! এর মধ্যে এলাকাবাসীর ঈদের দিনটি কেটেছে ভিন্নভাবে।
সুপার সাইক্লোন আম্ফানের ফলে পানিতে তলিয়ে গেছে উপজেলার ৮০ভাগ এলাকা। কয়রায় ১২১ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে ২১ জায়গায় ৪০ কিলোমিটারের অধিক বাঁধ ভেঙে গেছে।
সোমবার ঈদুল ফিতরের দিন সেই ক্ষতিগ্রস্থ বাঁধ নির্মাণে সেচ্ছাশ্রমে অংশ নিয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। হাঁটু পানিতে দাঁড়িয়েই আদায় করেছেন পবিত্র ঈদের নামাজ। বেলা সাড়ে ১০টায় কয়রা উপজেলার ২নং কয়রা নদী ভাঙন পাড়ে এ জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
নামাজ শুরুর আগে কয়রা উপজেলা চেয়ারম্যান এস এম শফিকুল ইসলাম জনগণের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন।
বক্তব্যে তিনি লণ্ডভণ্ড কয়রার দুর্বিসহ অবস্থা তুলে ধরেন এবং মজবুত বাঁধ নির্মাণ করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন। এছাড়া স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ বাঁধার কাজে অংশগ্রহণ করার জন্য এলাকাবাসীকে ধন্যবাদ জানান।
সূত্র: বিবিসি বাংলা ও ইউএনবি
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।