আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ২০২১ সালের আগস্টে আফগানিস্তানে তালেবান ক্ষমতায় আসার পর দেশছাড়ার হিড়িক পড়ে যায়। সেই সময় দুই মাসের এক শিশু তার বাবা-মায়ের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। অবশেষে এতদিন পরে খোঁজ মিলল ছোট্ট সোহেল আহমাদির। পাঁচ মাস পর শিশুটিকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে তার পরিবারের কাছে। খবর বিবিসি ও ডেইলি সাবাহর।
শিশুটির বাবা মির্জা আলি আহমাদি কাবুলে মার্কিন দূতাবাসের প্রহরী হিসেবে কাজ করতেন। ফলে দেশজুড়ে অসহিষ্ণুতার আবহে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি দেওয়া তার পক্ষে কঠিন ছিল না।
১৯ আগস্ট স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে তিনি বিমানবন্দরে যান। কিন্তু সেখানকার বিশৃঙ্খল ভিড় ও হইচইয়ের কারণে তারা ভয় পাচ্ছিলেন যদি শিশুসন্তানকে নিয়ে ভেতরে ঢুকতে না পারেন।
এ পরিস্থিতিতে বিমানবন্দরের দেয়ালের কাছে এক মার্কিন সেনার হাতে নিজের ছেলেকে তুলে দেন মির্জা। ঘুরে বিমানবন্দরে প্রবেশের পর সেই মার্কিন সেনাকে আর খুঁজে পাননি মির্জা। কোলের শিশুপুত্রকে হারিয়ে ফেলেন ওই দম্পতি। কোনো খোঁজই পাননি। মির্জা ও তার স্ত্রী সুরাইয়া বাকি চার সন্তানকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি দেন।
ছোট্ট সোহেলকে উদ্ধার করেন এক আফগান ট্যাক্সিচালক। এই ক’মাস তার অন্য সন্তানদের সঙ্গেই পরম স্নেহে বড় হচ্ছিল সে, নতুন নামকরণ হয় মোহাম্মদ আবেদ।
গত নভেম্বরে রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ওই ট্যাক্সি চালক তার আশ্রয়ে থাকা শিশুটির সম্পর্কে জানান। এদিকে ফেসবুকে শিশুটির ছবিও পোস্ট করে দেন তিনি। এতে শিশুটির পরিবার জানতে পারে তাদের একরত্তি পুত্র কোথায় আছে।
তবে সোহেলকে ফিরিয়ে দিতে রাজি ছিলেন না ওই ট্যাক্সিচালক। তার ইচ্ছা তাদের পরিবারেরই একজন হয়ে বড় হোক এই শিশু। শেষ পর্যন্ত তালিবান পুলিশের হস্তক্ষেপে বিষয়টি সুরাহা হয়।
আফগানিস্তানে থাকা সোহেলের দাদার কাছে আপাতত তুলে দেওয়া হয়েছে তাকে। সোহেলের পরিবারের তরফে ৫ মাস তাদের সন্তানের দেখভাল করার জন্য ১ লাখ আফগানি টাকাও দেওয়া হয়েছে ওই ট্যাক্সিচালককে।
তবু শেষ পর্যন্ত সোহেলকে হাতছাড়া করার সময় কেঁদে ফেলতে দেখা যায় তাকে। সোহেল আপাতত অপেক্ষায়, কবে সাত সমুদ্র তেরো নদী পেরিয়ে ফের বাবা ও মায়ের কোলে ফিরে যাবে সে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।