জুমবাংলা ডেস্ক : রাজশাহীর পুঠিয়া থানার ওসি সাকিল উদ্দীন আহম্মদকে প্রত্যাহার করার পর তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলেছেন এলাকাবাসীরা। বিভিন্ন অনিয়মের কারণে তাকে প্রত্যাহার করায় খবর ছড়িয়ে পড়লে সাধারণ মানুষ শুধু উল্লাস প্রকাশই করেননি কোথাও কোথাও মিষ্টিও বিতরণ করেছেন।
এলাকাবাসীদের অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, সদ্য প্রত্যাহারকৃত ওসি সাকিল উদ্দীন আহম্মেদ বর্তমান ক্ষমতাসীন দলের একজন সংসদ সদস্যর ভাই হওয়ার সুবাদে এলাকায় সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী হিসেবে নিজেকে জাহির করতেন। টাকা ছাড়া থানায় কোনো মামলা বা সাধারণ ডায়েরি হতো না। তিনি বিভিন্ন অভিযোগে আসামী পক্ষের সাথে বিশেষ সমঝোতা করে বাদিপক্ষকে জিম্মি করে তার কার্যালয় সালিশ ঘর হিসাবে গড়ে তুলে ছিলেন। মা’দক ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে হ’ত্যা মামলার আসামী পর্যন্ত সবই তার অনুসারী হিসাবে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াতো। সম্প্রতি শ্রমিক নেতা নুরুল ইসলাম হ’ত্যা মামলার এজাহার বদলের অভিযোগে হাইকোট তার বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
মহানগর মতিহার থানার কাঁটাখালি পৌর এলাকার এক যৌ’নকর্মী বলেন, ওসি সাকিলের সহয়তায় পুঠিয়া উপজেলার চিহ্নিত ব্যবসায়ী ও উচ্চ পদে চাকুরীজীবিদের টার্গেট করে বর্তমানে ৬ জন যৌ’নকর্মী বিভিন্ন বাসা-বাড়ীতে রয়েছে। এর মধ্যে বেলপুকুরে ২ জন, বানেশ্বর বাজারে ২ জন ও পুঠিয়া সদর এলাকায় ২ জন অবস্থান করছে। আর ওই যৌ’নকর্মীদের মাঠ পর্যায়ে রয়েছে পুলিশ সোর্স নামধারী একাধিক এজেন্ট। ওই সোর্সদের কাজ হচ্ছে কৌশলে স্থানীয় বিভিন্ন লোকজনের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করা। এরপর তাদের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করে বাসায় ডেকে আনা হয়। এর মধ্যে বিষয়টি ওসিকে অবহিত করা হয়। টার্গেটকৃত ব্যাক্তি বাসায় আসলে কিছুক্ষণের মধ্যে ওসি নিজে অথবা তার মতদর্শী কোনো পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এরপর হাতকড়া পড়িয়ে চলে দর কষাকষি। ষড়যন্ত্রের শিকার লোকজন মানসম্মানের ভয়ে তাদের চাহিদা মোতাবেক টাকা দিয়ে চলে আসেন। আর ওই টাকা ওসি ও আমরা অর্ধেক করে নেই।
হাড়গাতি এলাকার আমিরুল ইসলাম বলেন, গত ২৬ মে আমাদের এলাকার দু’জন ছেলে-মেয়ে রাতের আধারে অসামাজিক কাজের লিপ্ত হওয়ার সময় স্থানীয়দের হাতে আটক হয়। ওই রাতে ওসির নিদেশে পুলিশ এসে এলাকায় তান্ডব শুরু করেন। এতে এলাকার লোকজন প্রতিবাদ জানালে পুলিশ ও স্থানীয় যুবকদের সাথে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এ ঘটনায় এলাকার চেয়ারম্যানসহ পুলিশ বাদী হয়ে ৪ জনের নামে ও আরো ১৫/২০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর থেকে ওসি নিজে এলাকার লোকজনদের আটকের হুমকি দিতে থাকেন।
তিনি প্রকাশ্যে আমাদের বলেছেন, আটক এড়াতে জনপ্রতি দু’লাখ টাকা নেবেন। আর মামলা থেকে নাম কাটাতে তিন লাখ নেবেন। পুলিশের হয়রানিমূলক মামলা এড়াতে ৫/৬ জন ওসির সাথে সমঝোতা করে বাড়িতে থাকেন। আর যারা ওসির সাথে সমঝোতা করেননি তারা এখনো এলাকা ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে থানার একজন উপ-পরিদর্শক বলেন, ওসি সাকিল উদ্দীন পুঠিয়া থানায় যোগদান করার পর থেকে এলাকায় টাউট-বাটপারদের কর্থিত পুলিশ সোস পরিচয়ে একটি সিন্ডিকেট চক্র গড়ে তুলে ছিলেন। কয়েকটি স্থানে অসামাজিক কাজে সহয়তা ও আটক বাণিজ্যসহ চিহ্নিত অনেক মা’দক ব্যবসায়ীর সাথে ছিল তার সুসম্পর্ক। ওসির ভাই এমপি হওয়ার পর থেকে তিনি আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেন। এলাকার সাধারণ মানুষদের পাশাপাশি তিনি থানার সকল স্টাফদের প্রায় কোণঠাসা করে রাখতেন।
এ ব্যাপারে সদ্য পুলিশ লাইনে প্রত্যাহারকৃত ওসি সাকিল উদ্দীনের মুঠোফোনে একাধিক বার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।