জুমবাংলা ডেস্ক : টাঙ্গাইলের মধুপুরে চলমান উচ্ছেদ অভিযানে গত ৯ সেপ্টেম্বর উপজেলার পেগামারি এলাকায় ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর বাসন্তী রেমার ৪০ শতাংশ জমির কলা গাছ কেটে সামাজিক বনায়ন করার উদ্যোগ নেয়। এতে বিক্ষুদ্ধ হয়ে উঠে স্থানীয়রা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে শুরু করে গণমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা হয়। পড়ে থাকা কলাবাগানে রেমা ছবিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।
মধুপুর বনে ফসল নষ্ট করে জমি উদ্ধারের অভিযান আর করবে না বন বিভাগ। স্থানীয় অদিবাসীদের সাথে আলাপ-আলোচনা করে জমি উদ্ধার অভিযান করবে। কলা বাগান কেটে ফেলায় ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর বাসন্তী রেমাকে আর্থিক সহায়তা এবং আবাসনের ব্যবস্থা করবে উপজেলা পরিষদ।
বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসন ও বন বিভাগের কর্মকর্তাদের সাথে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর নেতৃবৃন্দের সাথে অনুষ্ঠিত সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মধুপুরের দোখলা বন বিভাগের রেস্ট হাউজে দুপুরে এ সভা হয়। টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক জামিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিভাগীয় বন কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম, মধুপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সরোয়ার আলম খান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফা জহুরা, মধুপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার কামরান হোসেন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) এমএ করিম উপস্থিত ছিলেন।
ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বৃহত্তর ময়মনসিংহ আদি উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি অজয় এ মৃ, জয়েনশাহী আদিবাসী উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি ইউজিন নকরেক, মধুপুর ট্রাইবাল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি উইলিয়াম দাজেল, সাবেক সাধারণ সম্পাদক হেলিম জেত্রা, বাংলাদেশ গারো ছাত্র সংগঠনের সভাপতি জন জেত্রা, ক্ষতিগ্রস্ত বাসন্তী রেমা প্রমুখ।
সভায় বাসন্তী রেমা জানান, বংশ পরস্পরায় তারা এ জমি চাষবাস করছেন। তার নানির কাছ থেকে তার মা পেয়েছিলেন। মায়ের কাছ থেকে বাসন্তী ১৯৯৩ সালে এ জমি পান। ঋণ করে ৪০ শতাংশ জমিতে কলা গাছ লাগিয়েছিলেন। কিন্তু বন বিভাগের লোকজন এ গাছ কেটে ফেলায় তার অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে। তিনি ক্ষতিপূরণ দাবি করেন।
সভায় উভয় পক্ষের আলোচনা শেষে সিদ্ধান্ত হয় ফসল নষ্ট করে বন বিভাগ জমি উদ্ধার অভিযান চালাবে না। উপজেলা পরিষদ থেকে বাসন্তী রেমাকেও নগদ ২০ হাজার টাকা এবং সরকারের আশ্রায়ন প্রকল্প থেকে তার আবাসনের ব্যবস্থা করা হবে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক জামিরুল ইসলাম জানান, ভুল বোঝাবুঝি থেকে কলা গাছ কাটার মতো ঘটনা ঘটেছিল। পরবর্তীতে যাতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে এজন্য আলোচনায় বসা হয়েছিল।
দুপুরে যখন দোখলা রেস্ট হাউজে আলোচনা চলছিল, তখন এর সামনে অবস্থান নেন কয়েকশ’ ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষ। তারা বন বিভাগের উচ্ছেদ অভিযানের বিরুদ্ধে প্ল্যাকার্ড, ব্যানার প্রদর্শন করেন।
জয়েনশাহী আদিবাসী উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি ইউজিন নকরেক জানান, বাসন্তীকে ঘর করে দেয়াসহ ক্ষতিপূরণ দেয়ার প্রতিশ্রুতি প্রশাসন দিয়েছে। এছাড়া উচ্ছেদের নামে এভাবে কারো জমির ফসল নষ্ট করবে না বলে বন বিভাগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।