ভয়ঙ্কর প্রতারক শাহেদ তার অপকর্ম আড়াল করে নিজেকে উপস্থাপন করেছিলেন সুশীল সমাজের প্রতিনিধি হিসেবে। বিভিন্ন বেসরকারি টিভি চ্যানেলের টক শোতে সমসাময়িক প্রসঙ্গে তাকে নীতিবাক্য আওড়াতে দেখা যেত প্রায়ই। এমনই এক টকশোতে মোঃ শাহেদ বলেছিলেন, প্রত্যেককেই এই দুর্নীতি দমনের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে এবং কাউকে ছাড় দেওয়া হচ্ছে না।
আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলা এই ভয়ঙ্কর প্রতারকের কথগুলো তার নিজের বেলায় সত্য হলো।দূর্নীতির দায়ে ছাড় পেলেন না শাহেদও। আইনের জালে তিনিও ধরা পড়লেন। এ সংক্রান্ত একটি বক্তব্যের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল হয়ে পড়েছে।
প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার রিজেন্ট হাসপাতালের সাতজনকে পাঁচ দিন করে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। এছাড়া উত্তরা শাখার পর বৃহস্পতিবার রিজেন্ট হাসপাতাল মিরপুর শাখাকে সিলগালা করে দিয়েছে র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। র্যাবের দায়ের করা মামলায় বলা হয়েছে, ওই হাসপাতালের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহেদ ‘প্রকৃতপক্ষে একজন ধুরন্ধর, অর্থ লিপ্সু এবং পাষণ্ড’।
চিকিৎসার নামে প্রতারণা, সরকারের সাথে চুক্তি ভঙ্গ ও জালিয়াতির মাধ্যমে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া রিজেন্ট হাসপাতালের মালিক রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহেদ ধরতে অভিযান চালাচ্ছে র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
ভয়ঙ্কর প্রতারক সাহেদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ২০১৬ সালে সংশ্লিষ্ট দফতরে একটি চিঠি দেওয়া হয়। কিন্তু রহস্যজনক কারণে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। উল্টো রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সব অনুষ্ঠানে ছিল শাহেদের সরব উপস্থিতি। গত ১০ বছর ধরে বিশিষ্টজনদের সঙ্গে ছবি উঠিয়ে ফেসবুকে দিয়ে নিজেকে জাহির করতেন। সাবেক সেনা কর্মকর্তা পরিচয়ে ‘বিডি ক্লিক ওয়ান’ নামে একটি এমএলএম কোম্পানি খুলে ৫০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পর তাকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিকবিষয়ক উপকমিটির সদস্যের পদ বাগানোর পর তার প্রতারণার মাত্রা বেড়ে যায়।
গ্রেপ্তারের পর থেকেই শাহেদের নানা অপকর্ম সামনে আসছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে তিনি বলছেন, সরকার কাউকে ছাড় দেবে না, যত অন্যায় করুক। সরকারের ঘনিষ্ঠ হিসেবে যারা পরিচয় দিয়ে নানা ফায়দা নিচ্ছে তাদের অ্যাড্রেস করা হচ্ছে।
টেলিভিশনের ওই টকশোতে বলছেন, এই যে আমি ঢাকায় ত্রিশ বছর ধরে আছি। আমি কোনোদিন ক্যাসিনোর কথা শুনি নাই। অথচ দেখেন এই শহরে কত ক্যাসিনো ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। সরকার অপরাধীকে ছাড় দেবে না বলে নিজের দলের ভেতর থেকে পরিচ্ছন্ন অভিযান শুরু করেছে। এই জিকে শামীমের কথাই ধরুন, সে কি ছাড় পেয়েছে?
টকশো’তে যেভাবে কথা আত্মবিশ্বাসের সাথে কথা বলেছেন শাহেদ, সেসব যে তিনি নিজেই করছেন তা কে জানতো। ক্রমাগত চেহারা পালটে শাহেদ ঠিকই জায়গা করে নিয়েছেন বিশ্বস্ততার তালিকায়। যার কারণে অবাধে বিচরণ করেছেন সর্বত্র।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।