জুমবাংলা ডেস্ক : নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার বৈদ্যেরবাজার হাড়িয়া চৌধুরীপাড়া গ্রামে আবুবকর সিদ্দিক নামে ১৪ বছর বয়সী এক মাদ্রাসাছাত্রের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে শনাক্ত হওয়া ওই ছাত্র উপজেলার প্রথম করোনা রোগী।
খবর পেয়ে ওই মাদ্রাসাছাত্রের বাড়িতে যান সোনারগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সাইদুল ইসলামের নেতৃত্বে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা পলাশ কুমার সাহাসহ হাসপাতালের একদল চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। সেখানে গিয়ে তারা ওই ছাত্রের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ ও আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের নাম-ঠিকানা সংগ্রহ করেন। পরে ওই মাদ্রাসাছাত্রকে চিকিৎসার জন্য অ্যাম্বুলেন্সে করে রাজধানীর একটি হাসপাতালে পাঠানো হয়।
ওই ছাত্রের বাড়ি থেকে ফিরে গতকাল মঙ্গলবার রাত ১১টা ১৮ মিনিটে উপজেলা প্রশাসন, সোনারগাঁও উপজেলার অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে একটি স্ট্যাটাস দেন ইউএনও মো. সাইদুল ইসলাম। তার সেই আবেগঘন স্ট্যাটাস ইতোমধ্যেই ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
ইউএনও মো. সাইদুল ইসলামের দেওয়া ফেসবুক স্ট্যাটাসটি জুমবাংলাডটকম পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো-
‘আজ আমাদের বৈদ্যেরবাজারের আবুবকর নামে ১৪ বছর বয়সের এক কিশোরকে দিয়ে আমাদের নভেল করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ হলো। জানি না এর শেষ কোথায়!
আবুবকরের বাবার বুকের ভেতর থেকে ফুপিয়ে ওঠা কান্নার শব্দ এখনো কানে বাজছে। ছেলেকে বাঁচানোর জন্য তার মায়ের করুণ আহাজারি, বুক ভাসানো অশ্রুজল কোনো কিছুরই কোনো উত্তর দিতে পারিনি আমরা।
‘‘আমার ছেলেটাকে বাঁচান স্যার’’ একজন মায়ের এমন আকুতির কী উত্তর হয়, সেটি সত্যি আমার জানা নেই। কী করে বুঝাই এ এক এমনি ভয়ঙ্কর মহাব্যাধি– জল, স্থল আর মহাকাশকে পদাবনত করা আমেরিকা-ইউরোপও যে এর কাছে মাথা নত করে।
মাত্র ১৪ বছরের এই দুরন্ত ছেলেটি যে কিনা কখনো একা থাকেনি, আজ তাকে একা একটি অ্যাম্বুলেন্সে পাঠিয়ে দেওয়া হলো কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে।
বুক ফেটে যাচ্ছিল তার মায়ের, বাবার মাথায় যেন পুরো আকাশ ভেঙে পড়ছিল! আর কী কখনো এই লক্ষ্মী ছেলেটা ফিরবে ঘরে? মায়ের কাছে ধরবে বায়না? আর কি কোনোদিন দেখা হবে আবুবকরের সঙ্গে তার বাবা-মায়ের? হয়তো হতেও পরে… আবার নাও হতে পারে।
হাত জোড় করে অনুরোধ করছি– প্রিয় সোনারগাঁওবাসী, ঘরে থাকুন। সৃষ্টিকর্তাকে ডাকুন, আপনার প্রিয়জনের জন্য হলেও সরকার ঘোষিত নির্দেশনা মেনে চলুন।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।