জুমবাংলা ডেস্ক: ময়মনসিংহের ত্রিশালের সোহেল মিয়া ও প্রতিবন্ধী রওশন দম্পতির অনবদ্য প্রেমের গল্প এখন দেশজুড়ে আলোচনায়। শারীরিক প্রতিবন্ধী স্ত্রীকে পিঠে নিয়ে ১৫ বছরের সংসারের সেই প্রেম-ভালোবাসার সম্পর্ক গণমাধ্যমে সংবাদ হিসেবে প্রচারের পর তাদের খোঁজ নিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. আক্তারুজ্জামান তাদের বাড়িতেও গিয়েছিলেন।
তবে যেই গণমাধ্যমের কল্যাণে এই দম্পতির ভালোবাসা দেখে মুগ্ধ দেশবাসী, সেই গণমাধ্যমেই এবার প্রকাশিত হলো সোহেল মিয়ার ‘প্রতারণার গল্প’।
সোহেল মিয়া নিজেকে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার সন্তান হিসেবে পরিচয় দিলেও চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরের এক নারী সোহেল মিয়াকে মোখলেছুর রহমান বকুল হিসেবে দাবি করেছেন। বলেছেন, তার বাড়ি গোমস্তাপুরের বাঙ্গাবাড়ি ইউনিয়নের শ্যামপুর গ্রামে। শুধু তাই নয়, ওই ব্যক্তি তার নিখোঁজ স্বামী বলে দাবি করেছেন শুরাতন বেগম নামে ওই নারী।
ভালোবাসা দিবসকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি গণমাধ্যমে সোহেল-রওশনের অনবদ্য প্রেমের গল্প প্রকাশিত হলে বিষয়টি তাদের নজরে আসে বলে জানান শুরাতন বেগম। ছবি দেখে তিনি ও তার চার সন্তান নিশ্চিত হন তিনি সোহেল মিয়া নন, তিনি মোখলেছুর রহমান বকুল।
শুরাতন বেগম গণমাধ্যমে দাবি করেন, সোহেল মিয়া নাম বলে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলেও তার নাম মোখলেছুর রহমান বকুল। ১৯৯২ সালে একই ইউনিয়নের শ্যামপুর গ্রামের বকুলের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। এরপর ২০০৪-০৫ সালের দিকে ঢাকা যাওয়ার কথা বলে তার স্বামী আর বাড়ি ফেরেনি। এরপর বিভিন্নভাবে তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও আর খোঁজ পাননি।
শুরাতন বেগম বলেন, তার তিন ছেলে ও এক মেয়ে। ছেলেমেয়েদের নিয়ে তিনি তখন থেকেই অনেক কষ্টে সংসার চালাচ্ছেন। এমনকি বকুল পালানোর সময় বিভিন্ন স্থান থেকে ঋণ নিয়ে ও জমি বিক্রি করে টাকা নিয়ে উধাও হয়েছিল। সেই ঋণের টাকা শোধ করতেই তিনি ক্লান্ত হয়ে গেছেন।
তিনি গণমাধ্যমে বলেন, আমার স্বামী যে প্রতারণা করেছে তা সবাই জানুক।
এদিকে সোহেল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছেন বলে যে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে সেটি মিথ্যা বলে দাবি করছেন তার ছেলে সিহাব উদ্দীন। তিনি জানান, তার বাবা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করেছেন। তার নাম মোখলেছুর রহমান বকুল। কীভাবে তিনি সোহেল মিয়া হলেন, সেই বিষয়গুলো খতিয়ে দেখতে বললেন সিহাব।
ইউপি সদস্য এনামুল হক গণমাধ্যমকে জানান, ছোট থেকেই মোখলেছুর রহমান বকুলকে তিনি চেনেন। ১৫ বছর আগে থেকে বকুল পালিয়ে গিয়ে ঢাকায় আছে বলে জানি। এখন ফেসবুকে দেখে বকুলকে চিনতে পেরেছি।
তবে তার আগের বিয়ের কথা স্বীকার করেছেন নতুন নাম ধারণকারী সোহেল মিয়া। এমনকি তিনি যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেননি সেটিও জানান। গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, আমি ১৯৯৩ সালে প্রথম বিয়ে করি। আগের স্ত্রীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় তাদের ছেড়ে আসি। ওদের সঙ্গে ২০২০ সাল পর্যন্ত মোবাইলে যোগাযোগ ছিল। তবে সম্পর্ক ভালো ছিল না। ফোন করলেই ওরা গালাগালি করত। পরে ওই বছর স্ট্রোক করার পর থেকে তাদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ নেই।
তিনি এসএসসিও পাস করেননি জানিয়ে বলেন, সাংবাদিকরা আমার বাড়িতে আসার পর পরিচিত একজন লেখাপড়ার বিষয়টি মিথ্যা বলার জন্য শিখিয়ে দিয়েছিল। তাই বলেছিলাম।
তবে এমন মিথ্যা বলে মানুষকে বিভ্রান্তিতে ফেলার জন্য দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চেয়েছেন সোহেল।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।