আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মোহাম্মদ বিন সালমান ক্ষমতা নেওয়ার পর থেকেই সৌদি আরবের অর্থনীতিতে বড় ধরনের সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছেন। সংস্কারের অংশ হিসেবে বিনিয়োগ বহুমুখীকরণকে তিনি অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। এর মধ্যে অন্যতম খাত পর্যটন। পর্যটন উৎসাহিত করতে মুসলিম রক্ষণশীল দেশটিতে গুরুত্বপূর্ণ ও সাহসী কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। বিদেশি পর্যটকদের জন্য সংরক্ষিত এলাকা, সিনেমা হল, কর্মক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ এর মধ্যে অন্যতম। হজ ও ওমরাহ ব্যবস্থা অনেক সহজ করা হয়েছে। এর সুফলও পেতে শুরু করেছে মুসলমানদের পুণ্যভূমি সৌদি আরব।
সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, বিদেশি পর্যটকেরা, যারা বছরের প্রথম ত্রৈমাসিকে (জানুয়ারি–মার্চ) সৌদি আরব সফর করেছেন, তাঁরা ৪৫ বিলিয়ন সৌদি রিয়ালের বেশি অর্থ ব্যয় করেছেন। এটি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২২ দশমিক ৯ শতাংশ বেশি।
আবার একই সময়ে সৌদি আরবের পর্যটকেরা বিদেশে প্রায় ২১ বিলিয়ন সৌদি রিয়াল খরচ করেছেন বলে সৌদি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে।
সৌদি আরবে এমনিতেও সমৃদ্ধ পর্যটন শিল্প রয়েছে। এ শিল্পে সরকার বিনিয়োগও ব্যাপকভাবে বাড়িয়েছে। ছুটির সময় পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে সৌদি সরকার প্রচুর সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করেছে।
গত মে মাসে নতুন করে তিনটি দেশের নাগরিকদের ইলেকট্রনিক ভিজিট ভিসা দেওয়ার ঘোষণা দেয় সৌদি সরকার। এতে অনলাইন সিস্টেমের সুবিধা নিতে পারে এমন দেশের মোট সংখ্যা ৬৬–এ উন্নীত হয়েছে।
নতুন করে এই ডিজিটাল সিস্টেমে যুক্ত হওয়া তিনটি দেশ হলো—বাহামা, বার্বাডোজ এবং গ্রেনাডা।
এই পদক্ষেপটি বিশ্বের কাছে সৌদি আরবকে একটি উন্মুক্ত সংস্কৃতির দেশ হিসেবেই উপস্থাপন করেছে। এটি পর্যটন শিল্পকে আরও গতিশীল করেছে। যেখানে ২০৩০ সালের মধ্যে আন্তর্জাতিক পর্যটকদের আগমনের সংখ্যা ৭ কোটিতে উন্নীত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছেন যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান।
এই ধরনের ভিসার সুযোগ পাচ্ছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইইউ জোট ভুক্ত দেশগুলো, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, শেঙ্গেনের ভিজিট ভিসাধারী নাগরিক এবং উপসাগরীয় সহযোগিতা কাউন্সিলের (জিসিসি) নাগরিকেরা।
সৌদি আরব একটি ৯৬ ঘণ্টার ট্রানজিট ভিসাও চালু করেছে। এই ভিসাধারীরা ওমরাহ বা ছোট তীর্থযাত্রা করতে, মদিনায় নবী মোহাম্মদ (সা)–এর রওজা ও মসজিদে নববীতে যেতে এবং রাজ্য জুড়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারবেন।
যাত্রীর টিকিটের সঙ্গে ফ্রি–অব–চার্জ (কোনো খরচ ছাড়া) ট্রানজিট ভিসা স্বয়ংক্রিয়ভাবে যুক্ত থাকে। যাত্রীরা সৌদি এয়ারলাইনস সৌদিয়া এবং ফ্লাইনাসের ইলেকট্রনিক প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ট্রানজিট ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন।
সৌদি আরবের পর্যটন শিল্প সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিকশিত হতে শুরু করেছে। গত বছর এ দেশে পর্যটকের সংখ্যা ১ কোটির বেশি বেড়েছে। সৌদি পর্যটন মন্ত্রী আহমেদ আল খাতিব এই বছরের শুরুতে বলেছিলেন, ২০২৩ সালে পর্যটন খাতে বছরে ৭ কোটি ৭০ লাখ স্থানীয় দর্শনার্থী এবং ২ কোটি ৭০ লাখ বিদেশি পর্যটকসহ ১০ কোটি পর্যটকের লক্ষ্য পূরণ হয়েছে।
এই নিষিদ্ধ চিনা ব্র্যান্ডকে ফের ভারতে ফিরিয়ে আনছেন মুকেশ অম্বানি
তিনি সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের লক্ষ্যের কথাও উল্লেখ করেছেন, যেখানে ২০৩০ সাল নাগাদ দেশে বার্ষিক ১৫ কোটি পর্যটকের ৮ কোটি দেশি পর্যটক এবং ৭ কোটি বিদেশি পর্যটক আগমনের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছেন তিনি।
বিশ্বের শীর্ষ ১০টি পর্যটন আকর্ষণের তালিকায় জায়গা করে নেওয়াও সৌদি আরবের লক্ষ্য।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।