জুমবাংলা ডেস্ক : মাত্র তিন মাস আগে চার লাখ টাকা খরচ করে সৌদি আরব গিয়েছিলেন সিলেট জেলার ২০ বছরের যুবক মোহাম্মদ সেলিম (২০)। কিন্তু ভাগ্য এতটাই খারাপ যে ধরপাকড়ে পড়ে শুন্যহাতে দেশে ফিরতে হয়েছে তাকে।
শুধু সেলিম নন, তার মতো আরও ১০২ জন বাংলাদেশিকে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে সৌদি আরব থেকে ফিরতে হয়েছে। রাত ১১.২০ মিনিটে সৌদি এয়ারলাইন্স (এসভি-৮০৪) বিমানে তারা দেশে ফেরেন। এদের অনেকেই ফিরেছেন শুধু পরনের পোশাকটা নিয়ে।
প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের সহযোগীতায় বরাবরের মতো গতকালও ফেরত আসাদের ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম থেকে জরুরী সহায়তা প্রদান করা হয়।
ফিরে আসা সেলিম বলেন, কোন কারন ছাড়ায় রাস্তা থেকে গ্রেপ্তার করেন পুলিশ। কোন কথা বলার সুযোগ না দিয়ে তাকে ধরে ফেরত পাঠানো হয়। সেলিমের সাথে একই পরিস্থিতির শিকার হয়ে শুন্যহাতে দেশ ফিরতে বাধ্য হলেন সিলেটের আনহার। ১৪ মাস আগে তিনি গিয়েছিলেন সৌদি। একই জেলার দুলাল মিয়া, মিন্নাত আলী, জামিল আহাম্মেদ, মিনু রহমান, আনোয়ারসহ অনেকেই ফিরেছেন গতকাল।
গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার সাইফুল ইসলাম বিমানবন্দরে ক্ষোভ উগড়ে দিচ্ছিলেন। তিনি জানান, কোম্পানির কাজের কথা বলে পাঠানো হয়েছিল সৌদি আরবে। কিন্তু তিনিও ফিরেছেন শুন্যহাতে। বিমানবন্দরে সাইফুল বলেন আমাকে কোন অপরাধ ছাড়াই দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। তিনি রিক্রুটিং এজেন্সির বিরুদ্ধে মামলা করার কথা জানান।
চলতি বছরে সৌদি থেকে ১৭৫ নারীসহ প্রায় চার হাজার বাংলাদেশি ফিরেছেন। আর প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের তথ্য অনুযায়ী ২০১৯ সালে মোট ৬৪ হাজার ৬৩৮ কর্মী দেশে ফিরেছেন যাদের পরিচয় ডিপোর্টি।
ব্র্যাক অভিবাসন কর্মসূচির প্রধান শরিফুল হাসান বলেন, এই যে মানুষগুলো প্রতিদিন ফেরেন তাদের কথা শোনারও যেন কেউ নেই। রোজ রোজ আমরা তাদের দুর্ভোগের কথা শুনি। একেকজন তাদের ধরে ফেরত পাঠানোর যে বর্ণনা দেন তাতে মনে হয় মানুষ নয় গরু ছাগল বেঁধে ফেরত পাঠাচ্ছে। মধ্যবয়সী এক লোক কাল রাতে বিমানবন্দরে আমাকে কাঁদতে কাঁদতে বললেন, আমরা কী মানুষ না। আমার মনে হয় সরকার ও রিক্রুটিং এজেন্সির লোকজন যদি একদিন এসে এইসব মানুষদের কথা শুনতেন। ফেরত আসা লোকদের কথা শুনে বিমানবন্দরেই ঘটনার বিবরণ নিয়ে তদন্ত করা উচিত কারা তাদের এভাবে বিদেশে পাঠাচ্ছে আর সৌদি আরবই বা কেন তাদের সাথে এমন রূঢ় আচরণ করছে। এর একটা সমাধান হওয়া দরকার।
শরিফুল হাসান বলেন, ফেরত আসা প্রবাসীদের আমরা শুধু বিমানবন্দরে সহায়তা দিয়েই দায়িত্ব শেষ করছি না, তারা যেন ঘুরে দাঁড়াতে পারে সেজন্য কাউন্সিলিং, দক্ষতা প্রশিক্ষণ ও আর্থিকভাবেও পাশে থাকার চেষ্টা করছি। তবে এই যে প্রতিদিন যারা ফেরে বছরে যে গড়ে অন্তত ৫০ হাজার লোক ফেরে তাদের পাশে আমরা সবাই মিলে কীভাবে দাঁড়াবো তার একটা কর্মকৌশল জরুরী। সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা সবাই মিলে কাজটি করতে হবে।
তথ্যসূত্র : চ্যানেল২৪
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।