আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সৌদি আরবে প্রথমবারের মত ‘হালাল’ ভাবে পালিত হলো বিশ্ব ভালবাসা দিবস। অথচ কয়েক বছর আগেও সৌদি আরবে ভালোবাসা দিবস উদযাপনের বিষয়টি ছিল এক কথায় অকল্পনীয়।
কাগজে-কলমে সৌদি আরবে ভালোবাসা দিবস উদযাপন ‘হারাম’ বা নিষিদ্ধ। তিন বছর আগেও দেশটিতে ভালোবাসা দিবসের উদযাপন ঠেকাতে সচেষ্ট থাকতো দেশটির ধর্মীয় পুলিশ। আইন লঙ্ঘনকারীদের গ্রেপ্তারের অনুমতিও ছিল এই ধর্মীয় পুলিশের। এ ছাড়া এই দিনটিতে লাল গোলাপ ও চকলেট লুকিয়ে রাখা দোকানিদের জন্য ছিল বাধ্যতামূলক।
দেশটিতে ক্রাউন প্রিন্স হিসেবে মোহাম্মদ বিন সালমানের আবির্ভাবের পর থেকেই নানা সংস্কার এসেছে। তারই ধারাবাহিকতায় এবার ইতিহাসের প্রথমবারের মত সৌদিতে বিশ্ব ভালবাসা দিবস পালিত হল।
২০১৮ সালে মক্কার সদাচার প্রচার ও অনাচার প্রতিরোধ কমিশনের (সিপিভিপিভি) সাবেক প্রেসিডেন্ট শেখ আহমেদ কাশিম আল-ঘামদি ঘোষণা করেন, ‘ভ্যালেন্টাইন ডে’ উদযাপন প্রকৃতপক্ষে ইসলামের শিক্ষার সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়। তার মতে, ভালোবাসার উদযাপন হচ্ছে সার্বজনীন একটি বিষয় এবং এটা শুধুমাত্র বিশ্বের অমুসলিমদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়।
সিপিভিপিভি’র সাবেক প্রেসিডেন্টের এমন ঘোষণার পরই দৃশ্যপটে আসতে শুরু করে পরিবর্তন। ভালোবাসা দিবস উদযাপনকারীদের গ্রেপ্তারের ক্ষমতা হারায় ধর্মীয় পুলিশ। কাগজে-কলমে ভালোবাসা দিবস উদযাপনে নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকলে আইনটি এখন অনেকটাই শিথিল। আইনের এই শিথিলতার সুযোগ নিয়ে দেশটির তরুণ-তরুণীরাও গত দুই বছর ১৪ ফেব্রুয়ারিতে মেতে ওঠে ভ্যালেন্টাইন উদযাপনে।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, এবারে ভ্যালেন্টাইন’স ডে উপলক্ষে দেশটতে বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট, পার্ক, ফুলের দোকানে নানা আয়োজন করা হয়েছে। যুগলেরা তাদের পছন্দের মানুষটিকে নিয়ে ফুল ও উপহার দিয়ে এবারের ভালবাসা দিবস পালন করেছে।
এর আগে কোন রেস্টুরেন্ট বা কোন প্রতিষ্ঠান ভালবাসা দিবস উপলক্ষে কোন আয়োজন করলে দেশটির পুলিশ তাদের গ্রেফতার করতো। কেননা এই দিবসটিকে হারাম হিসেবে দেখা হত।
মিডল ইস্ট মনিটরের খবরে বলা হয়েছে, এবারে দেশটিতে বিভিন্ন দোকানে চকলেট, টেডি বিয়ার, বাহারি উপহার, নানান ফুল বিক্রি করা হয়েছে।
এর আগে এই দিবসটিতে দোকানদারেরা লাল গোলাপ বিক্রি করতেও ভয় পেত। দোকানে তারা তা লুকিয়ে রাখতো। তবে এবার দেদারছে তারা দিবসটি উপলক্ষে নানা আয়োজন করতে পেরেছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।