শিবপুর, সংবাদাতা : নরসিংদীর শিবপুরে এক নারী শ্রমিককে ভালো বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে সৌদি আরবে পাঠানোর কথা বলে ঢাকায় মেডিকেল করাতে নিয়ে একটি হোটেলে তুলে ধর্ষণের চেষ্টা করে দালাল আবুল কালাম। দালালের কু প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় বিদেশে যাওয়ার জন্য দেওয়া দুই লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা দালাল আত্মসাতের পায়তারা করছে বলে জানান ভুক্তভোগী। দীর্ঘদিন প্রবাসে থেকে জমানো টাকা দালালকে দিয়ে সর্বস্ব হারিয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে এখন বিপাকে পড়েছেন বিধবা এই নারী।
জানাযায় উপজেলার ঘাশিরদিয়া গ্রামের সিদ্দিকুর রহমানের মেয়ে মাসুদা বেগম (৩৫) এর সাথে পালপাড়া গ্রামের আবু সাত্তারের ছেলে দালাল আবুল কালাম (৪০) এই ঘটনা ঘটায়। এ বিষয়ে এলাকায় একাধিকবার গ্রাম সালিশ করে কোন প্রতিকার না হওয়ায় আদালতে মামলা করেন মাসুদা বেগম। মামলার আসামীরা হলেন, আবুল কালাম (৪০), ও তার স্ত্রী নাছিমা বেগম (৩৫), বাবুল ওরফে ফালাইন্না (৪০)।
এলাকাবাসী জানান, আবু কালামের স্ত্রী নাছিমা বেগম এলাকায় নানা অপকর্ম করে আসছে। সে নারী পাচার ও নারীদের দিয়ে অনৈতিক কার্যক্রম চালিয়ে মোটা অংকের টাকার মালিক হয়েছে। এতে এলাকার পরিবেশ নষ্ট হওয়ায় ইতিপূর্বে শিবপুর মডেল থানায় গণ স্বাক্ষর দিয়ে লিখিত অভিযোগ দেন।
ভুক্তভোগী মাসুদা বেগম জানান, আমি জর্দান থেকে দেশে আসার পরে বাড়ীতে অবস্থান করছিলাম। ভালো বেতনের চাকরি ও সুযোগ-সুবিধার প্রলোভন দেখিয়ে সৌদি পাঠানোর কথা বলে পালপাড়া গ্রামের আবুল কালাম ও তার স্ত্রী নাছিমা বেগম। আমি প্রথমে রাজি হইনি। পরে সুযোগ-সুবিধা ও ভালো বেতনের কথা শুনে রাজি হয়েছি। ভিসা টিকেট ও অন্যান্য খরচসহদুই লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা দেওয়া লাগবে বলে জানান আবু কালাম। ১ লাখ ৫০হাজার টাকা নগদ, পরে আরো ১লাখ টাকা দিয়েছি। এরপর মেডিকেল করাতে ঢাকায় নিয়ে একটি হোটেলে তুলে ধর্ষণের চেষ্টা করে দালাল আবুল কালাম। আমি তার কু-প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় আমার সাথে খারাপ আচরণ করে। আমি সেখান থেকে চলে আসার পথে আবার নরসিংদীর ভেলানগরে ও খারাপ আচরণ করে। তাঁর এমন আচরণে আমি তাদের মাধ্যমে বিদেশে যাবো না বলে জানিয়ে দেই। এবং আমার সকল টাকা ফেরত চাইলে আমার বাড়ীতে এসে বিভিন্ন ভাবে হুমকি দিয়ে আসছে। আর বিদেশে যাবনা স্থির করে শিবপুরে আমার এক আত্মীয়র বাসায় কাজ নিলে আবুল কালাম আসা যাওয়ার পথে উত্ত্যক্ত করত পরে কাজ ছেড়ে দেই তাঁর জন্য।
আমাকে বিয়ে করে বিদেশে পাঠানোর কথা বলত। আমি তার কথায় রাজি না হওয়ায় আমার প্রতি আরো ক্ষিপ্ত হয়ে তার সহযোগী বাবুল কে সঙ্গে নিয়ে আমার বাড়ীতে এসে হুমকি দিয়ে যায়। তাদের ভয়ে বাড়ী থেকে বের হতে পারছি না। সন্তানদের নিয়ে সংসারের খরচ মেটানো অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এ নিয়ে গ্রামে একাধিকবার সালিসও হয়েছে। সালিসে সুরাহা না হওয়ায় আমি তাদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছি।
টাকা ও কুপ্রস্তাবের বিষয় অস্বীকার করে আবু কালাম বলেন, আমার স্ত্রী বিদেশে লোক পাঠায় ওই দিন আমার স্ত্রী অসুস্থ থাকায় মাসুদাকে মেডিকেল করতে ঢাকায় নিয়ে গেছি। কোন ধরনের খারাপ আচরণ করিনি। তার ভিসাও হয়েছে টিকিট কাটা হয়েছে এখন সে না গেলে খরচের টাকা দিতে হবে। এ বিষয়ে আয়ূবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান বলেন, মাসুদা বেগম আমার কাছে বলেছে। আমি বসে দেখবো।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।